মহিলাদের পাতা
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ০২রা রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৭ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
حُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَالْاَوْلَادِ
প্রকৃতপক্ষে পিতা-মাতার হক্ব অনেক ব্যাপক, আর তার সাথে সাথে সন্তানের হক্ব সেটাও অনেক ব্যাপক।
পিতা এবং মাতা ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে কারোও অস্তিত্বে আসা সম্ভব নয়, যদিও ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন- হযরত আবুল বাশার আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম, হযরত হাওওয়া আলাইহিস সালাম ও হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম।
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল, হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করলেন, এরপর পর্যায়ক্রমে মানুষ সৃষ্টি করলেন। তারপর পিতা-মাতা ও সন্তান এবং তাদের পরস্পরের প্রতি পরস্পরের কি দায়িত্ব-কর্তব্য ও হক্ব রয়েছে, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন।
পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব নাযিল করে প্রত্যেক কিতাবেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পিতা-মাতার হক্ব সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে শুধুমাত্র আখিরী উম্মতকেই পিতা-মাতার হক্ব সম্পর্কে জানিয়েছেন তা নয়, বা সন্তানের হক্ব সম্পর্কে আদেশ-নির্দেশ করেছেন সেটা নয়, বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ব থেকেই এ আদেশ জারী করেছেন। অর্থাৎ হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে পরবর্তী সকল নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যামানায় পিতা-মাতা বা সন্তানের হক্ব সম্পর্কে জানিয়েছেন।
সে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফে বলেন-
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ مُعْرِضُونَ
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফের ৮৩ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللهَ
মহান আল্লাহ পাক বলেন, আমি বণী ইসরাইল সম্প্রদায়ের কাছে ওয়াদা নিয়েছিলাম বা তাদেরকে শপথ করিয়েছিলাম, তোমরা মহান আল্লাহ পাক ছাড়া কারো ইবাদত করবে না। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার উবুদিয়্যাত সম্পর্কে, রুবুবিয়্যাত সম্পকের্, ওয়াহ্দানিয়্যাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি শপথ করিয়েছেন।
এরপর বলেছেন-
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا
মহান আল্লাহ পাক তিনি একত্বতার কথা বলে হক্কুল ইবাদ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন।
দ্বিতীয়তঃ উল্লেখ করেছেন হক্কুল্লাহ সম্পর্কে। আর হক্কুল্লাহ হলো- মহান আল্লাহ পাক উনাকে এক জানা এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করা।
কিন্তু হাক্বীক্বত এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন-
لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللهَ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া তোমরা কারো ইবাদত করবে না। মহান আল্লাহ পাক উনার যে তাওহীদ রয়েছে একত্বতা রয়েছে, সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি এখানে স্পষ্ট বলে দিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে এক জানা এবং মানার পর দায়িত্ব হচ্ছে, হক্কুল ইবাদ।
সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন-
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ
তোমরা তোমাদের পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করবে, আত¦ীয়স্বজনের সাথে, ইয়াতীম যারা তাদের সাথে এবং যারা মিসকীন তাদের সাথে,
وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا
এবং সমস্ত মানুষের সাথে তোমরা সুন্দর কথা বলবে, সৎ আচরণ করবে।
এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, হক্কুল্লাহ’র কথা, অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার যে ইবাদত-বন্দেগী রয়েছে,
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
নামায কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, যেটা ইবাদতে বদনী এবং মালী দুটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি উল্লেখ করেছেন এবং এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বলতেছেন-
ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ مُعْرِضُونَ
অতঃপর তোমরা অল্প ব্যতীত সকলেই ফিরে গেলে এবং তোমরা মূলতঃ অবাধ্য, অস্বীকারকারীর অন্তর্ভুক্ত।
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই বণী ইসরাইল সম্প্রদায়কে বলে দিয়েছেন যে, তোমরা পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করবে। সৃষ্টির সমস্ত হক্কুল ইবাদ যা রয়েছে, তার মূল হচ্ছে, প্রত্যেকের সাথেই সৎ ব্যবহার করতে হবে।
তার মধ্যে অর্থাৎ হক্কুল ইবাদের মধ্যে প্রথম হচ্ছে যেটা, সেটা হচ্ছে পিতা-মাতার হক্ব। এরপর আত্মীয় স্বজনের হক্ব, তারপর পর্যায়ক্রমে ইয়াতীম, মিসকীন এবং অন্যান্য লোক যারা রয়েছে, তাদের সাথে সৎ ব্যবহার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












