পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ০৮ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০২ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
মূল বিষয় হচ্ছে-
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন যে, “তোমরা পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করো। ”
ওই লোকগুলো করেছে এবং তার উছিলায় তারা দোয়া করেছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সে উছিলাতে দোয়া কবুলও করেছেন। এখন যদি কেউ কোন প্রকার সৎ ব্যবহার করে এবং সেই সৎ ব্যবহারের উছিলা দিয়ে সে যদি কোন দোয়া করে মহান আল্লাহ পাক তিনি সেটা কবুল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সেটাই মূল বিষয় হিসেবে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে।
এখানে তিনটা বিষয় যদিও বর্ণনা করা হয়েছে; তার মধ্যে যেটা মূল, সেটা হচ্ছে- হক্কুল ইবাদ। আবার হক্কুল ইবাদের মধ্যে প্রথম হচ্ছে পিতা-মাতার হক্ব।
এখন কেউ যদি সৎ ব্যবহার করে পিতা-মাতার সাথে এবং সেই সৎ ব্যবহারের উছিলা দিয়ে দোয়া করে তবে সে যে দোয়াগুলি করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার প্রত্যেকটা দোয়া কবুল করবেন।
এরপর বলা হয়েছে যে, পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার সম্পর্কে অর্থাৎ সৎ ব্যবহার কতটুকু করতে হবে?
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ মুবারক গ্রহণের আগেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক যখন অল্প তখন উনার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহাস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। শুধু মহাসম্মানিত দুধ মাতা আলাইহাস সালাম হায়াত মুবারকে ছিলেন। উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন ব্যবহার করেছেন সে প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي الطُّفَيْلِ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْسِمُ لَحْمًا بِالْجِعِرَّانَةِ، إِذْ أَقْبَلَتِ امْرَأَةٌ حَتَّى دَنَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَسَطَ لَهَا رِدَاءَهُ ، فَجَلَسَتْ عَلَيْهِ ، فَقُلْتُ : مَنْ هِيَ ؟ فَقَالُوا : هَذِهِ أُمُّهُ الَّتِي أَرْضَعَتْهُ
হযরত আবূ তুফাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গোশত বন্টন মুবারক করতেছিলেন; জিঈরানাত একটা জায়গা রয়েছে, সেখানে যখন গোশত বন্টন করতেছিলেন, সেই মক্কা বিজয়ের সময় যখন গোশত বন্টন করতে ছিলেন, তখন একজন সম্মানিত মহিলা তিনি আসলেন, নিকটবর্তী হলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একদম নিকটে আসলেন। পৌঁছার সাথে সাথে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার স্বীয় চাদর মুবারক, কোন রেওয়ায়েতে রয়েছে স্বীয় রুমাল মুবারক তিনি বিছিয়ে দিলেন যমীনের মধ্যে। বিছিয়ে দিলেন বসার জন্য, সেই সম্মানিত দুধ মাতা আলাইহাস সালাম তিনি বসে পড়লেন।
যখন সম্মানিত দুধ মাতা আলাইহাস সালাম তিনি বসে পড়লেন তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম প্রত্যেকেই যারা উনার সম্মানিত পরিচয় মুবারক সম্পর্কে জানতেন না উনারা সবাই আশ্চর্য হয়ে গেলেন যে, উনি কি করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই চাদর মুবারক বা রুমাল মুবারকে বসলেন! কে তিনি? সবাইতো তায়াজ্জুব হয়ে গেলেন।
হযরত আবূ তুফাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, তখন আমি জানতে চাইলাম-
مَنْ هِيَ
উনি কে?
فَقَالُوا : هَذِهِ أُمُّهُ الَّتِي أَرْضَعَتْهُ
ইনিতো সেই মহাসম্মানিতা ও মহাপবিত্রা মহিলা যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুধ মুবারক পান করিয়েছেন।
উনি হযরত উম্মুর রদ্বাআহ আছ ছানিয়াহ (হালীমা সা’দিয়াহ) আলাইহাস সালাম; যাকে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিজের চাদর মুবারক বা রুমাল মুবারক বিছিয়ে দিয়েছিলেন বসার জন্য।
কতটুকু হক্ব রয়েছে? উনি হচ্ছেন দুধ মাতা, আপন মাতা নন। তারপরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার কতটুকু উত্তম খুছুছিয়ত মুবারক প্রকাশ করেছেন উনার সঙ্গে!
সেটা চিন্তা এবং ফিকিরের বিষয়। সেটা চিন্তা এবং ফিকিরের বিষয় যে, কতটুকু উত্তম খুছুছিয়ত মুবারক প্রকাশ করেছেন মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে এবং কতটুকু সৎ ব্যবহার করার দরকার রয়েছে সেটা এতে ফুটে উঠেছে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












