বাংলা ভাষায় মুসলমানদের অবদান কত বেশি? (৩)
, ০৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
১৭শ’ শতাব্দীতে আরাকান (বর্তমানে বার্মার রাখাইন রাজ্য) রাজসভায় মহাকবি আলাউল, দৌলত কাজী, এবং কোরেশী মাগন ঠাকুর এর মতো বাংলা কবিদের সাধনা আর পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানেও চট্টগ্রামের অনেক লাইব্রেরীতে আরাকান রাজসভার বাংলা সাহিত্য চর্চার দলিলগুলো রাখা আছে। যদিও আজকাল মিডিয়া বা পাঠবই বিষয়গুলো এড়িয়ে যায় বললেই চলে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাভাষা মূল গোড়া অনুসন্ধান করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি অনেক মুসলমানও না জেনে বোকার মত বলছে- বাংলাভাষা নাকি হিন্দুদের ভাষা, যদিও ভাষাটি এ অবস্থানে এসেছে মুসলমানদের হাত ধরেই। বাংলা ভাষায় মুসলমানদের ব্যাপক সাহিত্য চর্চার ফলে বাংলা ভাষা একটি সমৃদ্ধ ভাষা হয়ে উঠে এবং একটি পরিপূর্ণ ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বলাবাহুল্য সেই সময় বাংলাভাষায় আরবী ও ফার্সী ভাষার ব্যাপক প্রভাব ছিলো। কিন্তু সমস্যা ঘটে ব্রিটিশরা আসার পর। ব্রিটিশরা দেখলো, “বাংলা ভাষা চর্চা মানেই মুসলমানদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা- এই বিষয়টি যদি চলতে দেয়া হয়, তবে আগামীতে বাংলাসংস্কৃতি মানেই মুসলমানি সংস্কৃতি হবে। এটার অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। ” এ লক্ষ্যে ১৮০০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশরা কলকাতার হিন্দু সাহিত্যিকদের (যেমন: বঙ্গিম, ঈশ্বরচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ) পৃষ্ঠপোষকতা করে ভিন্নমাত্রার সাহিত্য রচনা করতে থাকে, এর মাধ্যমে তারা এক নতুন বাংলা ভাষার জন্ম দেয়, যা আরবী-ফার্সী বিবজির্ত, জটিল ও দুর্বধ্য সংস্কৃতি শব্দবহুল। (এ সম্পর্কে জানতে গোলাম মোর্তজার ইতিহাসের ইতিহাস বইটি পড়তে পারেন)
আধুনিককালেও বাংলা ভাষার জন্য কাজ করে মুসলমানরা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিলো তমদ্দুন মজলিস নামক একটি ইসলামী সংগঠনের পক্ষ থেকে। ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে তমদ্দুন মজলিস একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যার নাম ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা না উর্দু? এই পুস্তিকার লেখক কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমেদ এবং অধ্যাপক আবুল কাসেম (তমদ্দুন মজলিসের সাধারণ সম্পাদক) বাংলা ভাষাকে পূর্ব বাংলায় ভাব বিনিময়, অফিস ও আদালতের একমাত্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে জোরালো মতামত তুলে ধরেন। তারা বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষেও জোরালো দাবি জানান। তাদের সেই দাবীর সূত্র ধরে ৫২ ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়।
-রাহাত আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












