বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔপনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৮)
, ০৪ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যুগ যুগ ধরে যেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানানরীতি বাংলা ভাষার প্রাণ হয়ে বাংলার মধ্যে একাকার হয়ে মিশেছিল, বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছিলো। কলকাতার কথিত বিজ্ঞরা সেসব আরবী-ফারসী শব্দ, পরিভাষা এবং বানান রীতিকে বেছে বেছে বের করে তার স্থলে সংস্কৃত শব্দ, পরিভাষা ও বানান রীতি প্রবেশ করিয়েছে। এর বিরুদ্ধে একসময় মুসলমান কবি-সাহিত্যিকরা কলম ধরলেও শতভাগ সংস্কৃতের আগ্রাসন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে বাংলা ভাষায় এখনও প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ও পরিভাষা চলমান রয়েছে, এবং কথিত মান্য বা প্রমিত বানানরীতির ব্যবহারও চলছে যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকিস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে, এবং দুই একটা বানানরীতির ব্যবহার দেখানো হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা মানে বাংলা ভাষার বিকৃতিকে মেনে নেয়া।
এছাড়া এই তালিকায় এমন কিছু শব্দ ও পরিভাষা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করা সরাসরি শিরক ও কুফরির অন্তর্ভুক্ত। নাঊযুবিল্লাহ! একজন মুসলমান কোনোক্রমেই এসব শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে না। মুসলমানকে অবশ্যই শরীয়তসম্মত শব্দ ও পরিভাষা ব্যবহার করতে হবে।
অশুদ্ধ ও শুদ্ধ পরিভাষা, শব্দ এবং বানানের তালিকা:
১৩. ‘জল’ সংক্রান্ত শব্দ:
জল শব্দটি কলকাতার হিন্দুরা ব্যবহার করে। কাজেই জল সংক্রান্ত যাবতীয় শব্দ পরিত্যাজ্য। যেমন- জলাশয়, জলবায়ু ইত্যাদি। জল এর পরিবর্তে পানি বা আব ব্যবহার করতে হবে। যেমন- আবাশয়, পানিস্তূপ, পানাশয়/পানিশয়, আবহাওয়া ইত্যাদি।
১৪. আপামর:
আপামর মানে পামর পর্যন্ত। পামর শব্দের অর্থ হচ্ছে- পাপিষ্ঠ, নরাধম, মূর্খ, নীচ ইত্যাদি। কথিত আর্য সম্প্রদায় ব্যতীত আর্যদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য সম্প্রদায়কে পামর বলা হতো। তখন এই পামর বা আপামর শব্দটি ব্যবহার করা হতো। কাজেই এটি ব্যবহার করা যাবে না। ব্যবহার করতে হবে আম জনতা, আওয়ামুন নাস, সকলে ইত্যাদি।
১৫. ‘দেব’ সংক্রান্ত শব্দ:
দৈববাণী, দৈব, দৈবাৎ, দৈবক্রমে, দৈবচয়ন, দুর্বিপাক, দিব্যি ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এই প্রত্যেকটি শব্দের মূল হচ্ছে হিন্দুদের দেব-দেবতার সাথে সংযুক্ত। যেমন দুর্বিপাক মানে হচ্ছে দেবতা সৃষ্ট দুর্ঘটনা, দৈবচয়ন বলতে দেবতার ইচ্ছাকে বুঝায়। অথচ দ্বীন ইসলামে দেবতা সম্পর্কিত আক্বীদা পোষণ করা শিরক। কাজেই মুসলমানদের জন্য হিন্দুদের দেব-দেবতা সংক্রান্ত শব্দ ব্যবহার করা জায়েয হবে না।
১৬. ধোয়া তুলসী পাতা:
আমাদের সমাজে প্রায়ই এই প্রবাদটি উচ্চারণ করা হয়। অথচ এটি একটি হিন্দুয়ানি প্রবাদ। হিন্দুরা তুলসী পাতা ধুয়ে তাদের কথিত দেবতা নারায়ণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে। কারণ তাদের বিশ্বাস ধোয়া তুলসী পাতা হচ্ছে পবিত্র। !
অতএব কোন মুসলমানের জন্য ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ প্রবাদ ব্যবহার করা জায়েয হবে না। এর পরিবর্তে ফেরেশতা হওয়া, সুফী হওয়া, অবুঝ, নির্দোষ, নিষ্পাপ ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
১৭. প্রয়াত বা প্রয়াণ:
প্রয়াত, প্রয়াণ, মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি সংস্কৃত ভাষার হিন্দুয়ানি শব্দ। কাজেই মুসলমানরা এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে পারবে না। মুসলমানরা ব্যবহার করবে মরহুম, ইন্তেকাল, বেছাল ইত্যাদি।
১৮. বেদী বা পীঠ:
হিন্দুদের পূজা পার্বণ সংক্রান্ত শব্দ হচ্ছে বেদী বা পীঠ। হিন্দুদের পূজার জন্য প্রস্তুত উঁচু স্থানকে বেদী ও পীঠ বলা হয়। অনেকে শহীদ মিনারের সাথে বেদী শব্দ ব্যবহার করে বা পীঠ ব্যবহার করে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনো মুসলমান এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে পারে না।
১৯. আলিঙ্গন:
এ শব্দটি সংস্কৃত শব্দ যা অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ একটি শব্দ যার অর্থ লিঙ্গ পর্যন্ত। কাজেই এটি ব্যবহার না করে বলতে হবে মোলাকাত, কোলাকুলি ইত্যাদি।
২০. বিসমিল্লায় গলদ:
এটি একটি কুফরী প্রবাদ। শুরুতে বা সূচনায় ভুল-ত্রুটি অর্থে এই প্রবাদটি আমাদের সমাজে প্রচলিত। এটি ব্যবহার করা কুফরী হবে।
২১. বিদ্যাপীঠ:
পীঠ অর্থ মন্দির। হিন্দুদের কথিত গুরুর পাদ পিঠে অর্থাৎ পা রাখার স্থানে বসে শিষ্যরা যে ধর্ম চর্চা করতো তখন ওটাকে পীঠ বলা হতো। এটা ব্যবহার করা যাবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












