সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
বাইয়াত কেন গ্রহণ করতে হয়?
, ০১ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
সমাজে আমরা বিভিন্ন শ্রেণীর লোক দেখতে পাই। এর মাঝে এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা কোন প্রশ্ন ছাড়াই যেকোন বিষয় গ্রহণ করে। আবার আরেক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা কোন কিছু গ্রহণ করার ক্ষেত্রে যুক্তি তালাশ করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কিছু রোগী, যাদেরকে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিলে রোগী বিনা বাক্য ব্যয়ে সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ খেতে থাকে। আবার কিছু রোগী রয়েছে, যারা ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিলেও কোন ঔষধ কোন কারণে খেতে হবে তা জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ঠিক তদ্রুপ সমাজে কিছু মানুষ রয়েছে, যদি তাদেরকে বলা হয়, বাইয়াত গ্রহণ করলে জান্নাত লাভ করা যাবে, তখন তারা জান্নাত লাভের আশায় বিনা চু-চেরায় বাইয়াত গ্রহণ করে। আবার আরেক শ্রেণীর লোক রয়েছে, যাদেরকে বাইয়াত গ্রহণ করতে বললে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উত্থাপন করে।
উল্লেখ্য যে, কেন বাইয়াত গ্রহণ করতে হবে সেই বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য সম্মানিত কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিকোণ থেকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক থেকে যে বিষয়টি বুঝতে পেরেছি তা তুলে ধরা হলো:
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوْا الصَّالِحاَتِ سَنُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِىْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا اَبَدًا
অর্থ: যারা ঈমান এনেছেন এবং আমলে ছলেহ করেছেন উনাদেরকে অচিরেই এমন জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে যার নিচ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। উনারা সেখানে অনন্তকাল অবস্থান করবেন। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৫৭)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, ঈমান এনে আমলে ছলেহ করতে পারলেই জান্নাত লাভ করা সম্ভব।
আর আমলে ছলেহ উনার একটি অংশ হলো নামায। এই সম্মানিত নামায হলো ঈমানদার ও কাফিরের মাঝে পার্থক্যকারী। কেননা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কোথাও গেলে যখন আযান শুনতে পেতেন, তখন বুঝতে পারতেন এটা একটি মুসলিম এলাকা। আর যখন আযান শুনতে পেতেন না, তখন বুঝতে পারতেন সেটা অমুসলিম এলাকা।
সেই মহাসম্মানিত নামায উনাকে কিভাবে আদায় করতে হবে সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِىْ .
অর্থ: “আমার স্মরণে নামায আদায় কর।” (পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফÑ১৪)
এই আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি তা হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির বা স্মরণ ছাড়া নামায হলো প্রাণহীন। আর যে নামাযে প্রাণ নেই, সেই নামাযের কোন মূল্য নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ .
অর্থ: “নিশ্চয়ই নামায মানুষকে অশ্লীল-ফাহেশা কাজ থেকে বিরত রাখে।” (পবিত্র সূরা আনকাবূত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৪৫)
মূলত, যেই নামাযে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ আছে অর্থাৎ প্রাণ আছে, সেই নামাযই মানুষকে গুনাহ থেকে বাঁচায় তথা হিফাজত করে। আর যেই নামায মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ ব্যতীত আদায় করা হয় অর্থাৎ যে নামায প্রাণহীন তা মানুষকে গুনাহ থেকে বাঁচাতে পারে না।
উল্লেখ্য যে, নামায আদায়রত অবস্থায় শয়তান মানুষকে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ ভুলিয়ে দেয়। তাই শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই রুহানী কুওওয়াত অর্জন করা প্রয়োজন। আর সেই রুহানী কুওওয়াত অর্জন করার জন্যই রুহানী কুওওয়াতসম্পন্ন ওলীআল্লাহ উনাদের নিকট যেতে হবে।
মূলত, আমাদেরকে কেন বাইয়াত হতে হবে, উপরোক্ত বিষয়টি দ্বারা স্পষ্ট। সুতরাং বিষয়টি ফিকির করে যারা নছীহত গ্রহণ করতে চায় তাদের জন্য উপরোক্ত আলোচনাটুকুই যথেষ্ট। আর যারা নছীহত গ্রহণ করবে না তথা যাদের হিদায়েত ভাগ্যে নেই তাদের জন্য সমস্ত কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ উনার দলিল দিলেও তারা নছীহত গ্রহণ করবে না তথা বাইয়াত গ্রহন করার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে না।
(মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ বালিকা শাখা)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












