আপনাদের মতামত
বিশেষ উপদেষ্টার বিশেষ সহযোগিতায় ও সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই মুহূর্তে কক্সবাজারে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে থেকে কয়েকজন আমেরিকান, নারিকেল দ্বীপ দখল করে মার্কিন ঘাঁটি তৈরি করার দ্বিতীয় ষড়যন্ত্রের নতুন ধাপ কষছে।
অথচ দেশবাসী পুরোই বেখবর। তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিবিদ এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ তথা বাম রাজনীতিকরাও নীরব দর্শক এবং নিশ্চুপ। যা ৫ই আগষ্টের বিপ্লবের চেতনার সাথে চরম সাংঘর্ষিক।
, ২৯ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আপনাদের মতামত
বিশ্বের মানচিত্রে নারিকেল দ্বীপ মাত্র একটি বিন্দু, কিন্তু এই ছোট্ট বিন্দুই এখন পরিণত হচ্ছে এক অদৃশ্য দাবার বোর্ডে, যেখানে চাল দিচ্ছে সুদূর ওয়াশিংটনের নীতি নির্ধারকরা।
নানান বিশ্লেষণে উঠে আসছে, সুদূর মার্কিন অফিসিয়ালদের চোখ এখন এই ছোট্ট দ্বীপের দিকে। এখানে যদি একদিন আমেরিকার পতাকা ওড়ে, তা শুধু একটি সামরিক ঘাঁটির গল্প হবে না, বরং এক নতুন ক্ষমতার বিন্যাসের ঘোষণা হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমেরিকার নারিকেল দ্বীপে আসতে চাওয়ার গল্প কি একদম বানোয়াট, না কি যৌক্তিক হিসাব-নিকাশ আছে? বিশ্বে যা কিছু ঘটছে, তার বেশিরভাগই হয় আমেরিকার ইশারায়, অথবা কমপক্ষে তাদের নীরব সম্মতিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই আমেরিকা তার সামরিক ও কূটনৈতিক শক্তিকে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত করেছে। আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর, প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রয়েছে তাদের সামরিক ঘাঁটি। কিন্তু এক জায়গায় এখনো শূন্যতা রয়ে গেছে-বঙ্গোপসাগর।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনামলে বারবার গুঞ্জন উঠেছে যে, নারিকেল দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা চলছে। যদি আমেরিকা এই ঘাঁটি তৈরি করতে পারে, তাহলে তারা তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারবে। চীন মনে করে, ভবিষ্যতের শক্তির মূল চাবিকাঠি সামরিক নয়, বরং অর্থনৈতিক আধিপত্য। তারা “মেইড ইন চায়না” এবং “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ” নীতির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। তবে চীনের একটি দুর্বলতা রয়েছে- তাদের নিজস্ব জ্বালানি নেই। তারা ইরান থেকে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস আমদানি করে, যা বঙ্গোপসাগর হয়ে রাখাইন ও পাকিস্তান হয়ে চীনে প্রবেশ করে। এই রুট নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে, আমেরিকা চীনের অর্থনৈতিক প্রবাহে সরাসরি আঘাত হানতে পারবে।
বঙ্গোপসাগরে কোন শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি না থাকায় আমেরিকা এখানে পিছিয়ে আছে। বিশ্বজুড়ে ছড়ানো আমেরিকার শতাধিক ঘাটির মধ্যে বঙ্গোপসাগরে এখনো কোন শক্তিশালী উপস্থিতি নেই। কিন্তু যদি কখনো চীন তাইওয়ান যুদ্ধ শুরু করে, তখন পরিস্থিতি বদলে যাবে। আমেরিকা সবসময় তাইওয়ানকে তাদের নিজস্ব স্বার্থের অংশ হিসেবে দেখে। তারা বিশ্বাস করে, চীন যদি তাইওয়ানের উপর আক্রমণ করে, তবে সেটি সরাসরি আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, নারিকেল দ্বীপ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি আদর্শ সামরিক ঘাঁটি। এখান থেকে সহজেই দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। বিশেষ করে তাইওয়ানের সাপোর্টে দক্ষিণ চীন সাগরে আমেরিকার উপস্থিতি থাকলেও, বঙ্গোপসাগর থেকে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া গেলে চীনের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে, চীন যদি যুদ্ধের কথা ভাবতে যায়, তবে আমেরিকাও প্রস্তুত।
ঢাকার নীতি নির্ধারকদের জন্য এখন একটা কঠিন সময়। একদিকে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক, অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক মৈত্রী এবং আমেরিকার চাপ। শেখ হাসিনার আমলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র গুঞ্জন ছিল, তবে সরাসরি সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর বিষয়টি আবার সামনে এসেছে- আমেরিকা যদি ঘাঁটি করতে চায়, বাংলাদেশ কি অনুমতি দেবে, নাকি চীন এর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করবে? নারিকেল দ্বীপ এখনো নিঃশব্দ, কিন্তু তার চারপাশের পানিরাশি আস্তে আস্তে উত্তপ্ত হচ্ছে।
৯০ কিলোমিটার দূরের কক্সবাজারে, একজন আমেরিকান একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বসে আছে, ম্যাপে নারিকেল দ্বীপের ওপর লাল দাগ টানছে। হিসেব করছে কৌশলের। তার ল্যাপটপের স্ক্রিনে ব্রেকিং নিউজ: বঙ্গোপসাগরে অস্থিরতা, নারিকেল দ্বীপ নিয়ে নতুন আলোচনা। একজন এনজিওর হয়ে কাজ করা এই আমেরিকান বাংলাদেশের আরেকটি কুখ্যাত এনজিও প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পরিচিত মুখ। যিনি বর্তমান উপদেষ্টা সরকারও নারিকেল দ্বীপ নিয়ে কর্মকান্ডের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। তার দ্বারা সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা এবং সার্বিক সক্রিয় সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু দেশবাসী পুরোই বেখবর। তারপরে ইসলামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ সবাই নিশ্চুপ। হাদীছ শরীফ মোতাবেক সবাই বোবা শয়তান। নাউযুবিল্লাহ।
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












