বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্যোগ নিন বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ পুনরুদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
, ০৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়
![বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্যোগ নিন বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ পুনরুদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন](https://www.al-ihsan.net/uploads/1715644224_.jpg)
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাত অত্যন্ত ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রসার করে সরকার বিনিয়োগ-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, আইন ও বিধিগত সংস্কার তথা সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত বেসরকারি খাত বা ব্যক্তি খাতনির্ভর অর্থনীতি। দেশের মোট অর্থনীতির ৮০ শতাংশের বেশি ব্যক্তি খাতের দখলে। আর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ব্যক্তি খাতের ভোগের অবদান প্রায় ৬৯ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি ঠিক রাখার জন্য ব্যক্তি খাতের স্বাস্থ্য ভালো থাকা আবশ্যক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যক্তি খাত ভালো নেই বলেই প্রতিভাত হচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, দেশের ব্যক্তি খাতের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে। ব্যক্তি খাতের ভোগের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ার অর্থ হচ্ছে এ খাতের কার্যক্রম সংকুচিত হয়ে যাওয়া। আর এটি হলে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়তে পারে। এ পরিস্থিতিতে ব্যক্তি খাতকে চাঙা করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক।
ব্যক্তি খাতের নিম্নমুখী ভোগ ব্যয়ে কমবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাংক আভাস দিয়েছে যে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তি খাতের ভোগে প্রবৃদ্ধির হার করোনাকালের চেয়ে কম হবে। এর আগে ব্যক্তি খাতের ভোগ ব্যয়ে সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছর অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকায় ব্যক্তি খাতের ভোগ ব্যয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে সাত শতাংশ। ওই অর্থবছর মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধিও বেশ ভালো ছিল। কিন্তু বর্তমানে যে হারে ব্যক্তি খাতের ভোগ প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে, তাতে সামনের দিনগুলোয় দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সঠিক ধারায় ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
আমাদের জিডিপি হিসাব করা হয় মূলত ভোগব্যয়ের ভিত্তিতে। আর এ ভোগব্যয় নিয়ন্ত্রিত হয় ব্যক্তি খাতের মাধ্যমে। ব্যক্তি খাতে ভোগ তখনই বৃদ্ধি পায় যখন বাজারের পণ্যমূল্য ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে। বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। করোনাকালে বিশ্বে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। করোনার পর সেটি স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু বাংলাদেশে উল্টো চিত্র পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের বাজার মূলত আমদানিনির্ভর পণ্যের বাজার। এখানে অনেক নিত্যপণ্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কাজে আসছে না। ফলে উচ্চমূল্যে পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে ভোক্তা। এর ফলস্বরূপ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আর ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার অর্থ হচ্ছে মানুষের ভোগ হ্রাস পাওয়া। কাজেই মানুষের ভোগ বাড়াতে হলে তাদের হাতে অর্থের সরবরাহ বাড়াতে হবে। আর সেটি করতে হলে তাদের আয়-রোজগার বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
দেশে কর্মসংস্থানের খুব সংকট। প্রতিবছর শিক্ষাজীবন শেষে শ্রমবাজারে যোগ হচ্ছে হাজার হাজার কর্মসংস্থান প্রত্যাশী। রাষ্ট্র সবার কর্মসংস্থান করতে পারে না। কর্মসংস্থান একদিকে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন বাড়ায়, অন্যদিকে সবচেয়ে মৌলিক উপায়ে দারিদ্র্য কমায়। এজন্য অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অধিকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। আমাদের দেশের কর্মসংস্থানে ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বড় ভূমিকা রাখে। বর্তমানে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের সংকটে রয়েছে। এ সংকট থেকে উত্তরণে এগিয়ে আসতে হবে রাষ্ট্রকে। রাষ্ট্র সবার কর্মসংস্থান করতে না পারলেও বেসরকারি উদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠানকে টিকে থাকতে সহায়তা করতে পারে। টিকে থাকলেই শিল্পমালিকরা চাকরি দিতে পারেন।
গতকাল এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংক। সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তার পূববর্তী মাসে এ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিতে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটছে। মূল্যস্ফীতির চাপে আমানত হ্রাসের কারণে ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সামর্থ্য কমেছে। অন্যদিকে আমদানি কমায় ও সম্ভাব্য আর্থিক সংকটের আশঙ্কায় নতুন করে বিনিয়োগেও আগ্রহ হারাচ্ছে বেসরকারি খাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষায় বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। খুব কম মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল বেসরকারি চাকরি করা। তবুও বেসরকারি চাকরি করতে হয়। প্রতিবছরই সরকারি চাকরিতে আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং বেসরকারি খাতকে নীতি ও অর্থসহায়তা দিতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সময়মতো ঋণ না পেলে টিকে থাকতে পারবে না। সরকারকে বেসরকারি বিনিয়োগ চাঙা করতে উদ্যোগী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, নতুন বিনিয়োগ না এলে কর্মসংস্থান বাড়ানো যাবে না। কারণ সরকারি বিনিয়োগে খুব বেশি কর্মসংস্থান হয় না। সর্বোপরি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ব্যাংকগুলো বড় শিল্পকে ঋণ দিতে আগ্রহী হলেও এসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে চায় না। এই বাধা দূর করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
ভোগব্যয় কমে যাওয়ায় বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের শিল্প খাত। স্থানীয় বাজারে সব পণ্যেরই বিক্রি কমেছে বলে উদ্যোক্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, দেশের বাজারে পণ্যভেদে বিক্রি কমার হার ২০-৩০ শতাংশ। ক্ষেত্রবিশেষে অনেক পণ্যের বিক্রি হ্রাস পেয়েছে আরো বেশি মাত্রায়। বিশেষ করে নির্মাণ ও আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পতিত হয়েছে। গৃহায়ন খাতের বিক্রয় পরিমাণ প্রায় ৬০ শতাংশ কমেছে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের নতুন প্রকল্প গ্রহণের হার কমেছে ৭৫ শতাংশ।
এ সংকট থেকে উত্তরণে দরকার ব্যাপক কর্মসংস্থান। বিশেষ করে উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান। আর সে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে শিল্প খাতে। কিন্তু দেশে কৃষি খাতে কর্মসংস্থান বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি খাতে ভোগ বাড়াতে হলে শিল্পে কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। ইনশাআল্লাহ সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কারফিউতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আরো আগুন। ধারদেনায় চলছে শ্রমজীবী মানুষ। তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে কে? সরকারকেই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অপুষ্টির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা; দেশের ৫০ ভাগ শিশুমৃত্যুর কারণ অপুষ্টি; অপুষ্টিতে শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বাড়ছে স্থুলতা। দেশের জনগণের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের কি কোনই দায়বদ্ধতা নেই?
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল খমিস, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। ঐতিহাসিক পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ।
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)