ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৮)
, ১৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২২ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শয়তান যে মানুষকে নেক
সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে
অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের
পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী
খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে
পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন
মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয়
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে
খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী
মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে
থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক,
ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায়
মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য ÒConfession of British Spy
and British enmity against IslamÓ গ্রন্থ
হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ
করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মুসলমানদের দাবি, হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
যে আল্লাহ পাক-এর নবী এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তম্মধ্যে,
কুরআন
শরীফ অন্যতম। আমি নিজে কুরআন শরীফ পড়েছি। নিশ্চয়ই,
কুরআন
শরীফ অত্যন্ত উঁচুস্তরের কিতাব। এমনকি ইহা তাওরাত
শরীফ এবং বাইবেলের চেয়েও উন্নত। এতে রয়েছে নীতি, বিধান ও নৈতিক নিয়ম-কানুন ইত্যাদি।
আমার কাছে এটা একটি
বিস্ময়ের ব্যাপার, কেমন করে হযরত
মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত উন্নতমানের কিতাব আনয়ন করলেন; কেমন করেই বা তিনি এতসব বুদ্ধি বৃত্তি এবং
ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হতে পারলেন; যা একজন অতি
জ্ঞানী এবং ব্যাপক দেশ বিদেশ ভ্রমণে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পক্ষেও কোনদিন সম্ভব নয়।
আশ্চর্য্যরে কিছু নেই যে, হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর নবুওয়াতের প্রমাণের জন্য এগুলোই যথেষ্ট।
হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নুবুওওয়াতের সত্যতা খুঁজে বের করতে আমি প্রচুর পর্যবেক্ষণ
এবং গবেষণাকর্ম চালিয়েছি। একবার লন্ডনে এক
পাদ্রীর নিকট আমার এ আগ্রহের কথা প্রকাশ করি কিন্তু তার উত্তর ছিল একগুয়েমি, গোড়া আর বিশ্বাসের অযোগ্য। যখন তুরস্কে ছিলাম, আহমেদ আফেন্দীকে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, তখনও আমি কোন সন্তোষজনক উত্তর পাইনি। সত্যি বলতে কি, আহমেদ আফেন্দীকে আমি সরাসরি এ বিষয় সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন
করা থেকে বিরত থেকেছি পাছে তিনি আমার গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি আঁচ করে ফেলেন কিনা। হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে
নিয়ে আমি বহু ভেবেছি, নিঃসন্দেহে তিনি
আল্লাহ পাক-এর রসূলগণের একজন এবং এ প্রসঙ্গে বই পুস্তক পড়ে দেখেছি। কিন্তু কি করা, আমি একজন খ্রিষ্টান,
তাই
তাঁর নুবুওওয়াতের ওপর এখনো ঈমান আনি নাই। সন্দেহাতীতভাবে, তিনি সকল মনীষীদের চেয়ে অনেক উর্ধ্বে।
অন্যদিকে সুন্নীদের
আক্বীদা হচ্ছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাতের পর, পর্যায়ক্রমে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ওমর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ওসমান
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হচ্ছেন
খলিফাতুল মুসলিমীন। সব ধর্মেই এ জাতীয়
মতবিরোধ আছে, বেশী আছে
খ্রীষ্টধর্মে। যেহেতু হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু এবং হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কেউ দুনিয়াতে নেই, কাজেই এমন মতবিরোধ নিয়ে, এখন আর কোন ফায়দা নেই। আমার মতে,
অতীতকে
বাদ দিয়ে বর্তমান নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করাটাই মুসলমানদের যুক্তিসঙ্গত কাজ। শিয়াদের মতে, খিলাফত বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন। কিন্তু সুন্নী মতে, তার প্রয়োজন তেমন একটা নেই, ইংরেজ যুব সমাজ ধর্মীয় বিষয়ের সঙ্গে পার্থিব
বিষয়কে শিখাতে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। পার্থিব জ্ঞানের ক্ষেত্রে মুসলমানগণ বিজ্ঞান
প্রযুক্তি, গণিত, স্থাপত্যকলা, ও চিকিৎসা শাস্ত্রে উন্নতি লাভ করেছে। বিখ্যাত ইটালীয় জ্যোতিবিজ্ঞানী গ্যালিলিও যখন
বললেন, পৃথিবী ঘুরছে, নিঃসন্দেহে এই তথ্য তিনি মুসলমানদের কাছ থেকে
পেয়েছিলেন। কিন্তু ধর্মযাজকরা তাকে বিশ্বাসচ্যুত
করলো এবং শুধু তাই নয় কারাগারেও নিক্ষেপ করলো। তিনি যখন তার মত পাল্টালেন এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে
বললেন “পৃথিবী ঘুরছে না” তখনই শুধু রক্ষা পেলেন। মুসলমানগণ ইসলাম ও ঈমানের ব্যাপারে কেবল কুরআনুল
কারীম, হাদীছ শরীফ অনুসরণ করে
থাকে। খ্রিষ্টানদের মত, যা আক্বলে আসে না তার অপব্যাখ্যায় লিপ্ত হন না।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












