ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৮)
, ০৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য “ঈড়হভবংংরড়হ ড়ভ ইৎরঃরংয ঝঢ়ু ধহফ ইৎরঃরংয বহসরঃু ধমধরহংঃ ওংষধস” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
একদিন মুরশিদ আফেন্দী এসে বললো, তুমি যেদিন থেকে এই রুম ভাড়া নিয়েছো সেদিন থেকে আমার অমঙ্গল শুরু হয়েছে, আমি মনে করি এটা তোমার কোন গাফলতির জন্য হচ্ছে। যেহেতু তুমি অবিবাহিত, এবং অবিবাহিত হবার কারণে এসব খারাপ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। হয় তুমি বিয়ে করো নতুবা আমার সরাইখানা ছেড়ে চলে যাও। আমি তাকে বললাম, বিয়ে করার মত আমার পর্যাপ্ত ধন সম্পদ নেই।
আহমেদ ইফেন্দীকে যা বলেছিলাম তা তাকে বলতে পারিনি কেননা মুরশিদ ইফেন্দী এমন ধরণের লোক যে প্রয়োজনে আমাকে বিবস্ত্র করে পরীক্ষা করবে যে আমি সত্য বলছি কিনা। এসব বলার পর মুরশিদ ইফেন্দী আমাকে ভৎর্সনা করলো এবং বললো কি দূর্বল বিশ্বাস তোমার, জানো না আল্লাহ পাক বলেন, “যদি তারা গরীব হয়, তবে আল্লাহ পাক তার রহমত দ্বারা তাদেরকে সম্পদশালী করবেন। ”
আমি বিমূঢ় হয়ে পড়ি এবং শেষে বলি, আমি বিয়ে করতে রাজি আছি। এ জন্যে তুমি কি প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে? অথবা এমন একজন মেয়ে ঠিক করে দেবে যাকে বিয়ে করতে খুব একটা খরচ লাগবে না? মুরশিদ ইফেন্দী কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বললো, আমি ওসব বুঝি না। রজব মাসের শুরুতে বিয়ে করবে নতুবা আমার সরাইখানা ছেড়ে চলে যাবে। তখন রজব মাস শুরু হবার ২৫ দিন বাকী ছিল। প্রসঙ্গত এখানে, আরবী মাসের নাম উল্লেখ করা যায় যেমন- মুর্হরম, সফর, রবীউল আউয়াল, রবীউছ ছানী, রজব, শাবান, রমাদ্বান, শাওয়াল, যিলক্বদ ও যিলহজ্জ। মাসগুলো ত্রিশ দিনের বেশী বা ২৯ দিনের কম নয়। এগুলো চাঁদের হিসেবের ভিত্তিতে করা। একজন কাঠমিস্ত্রীর সহযোগি হিসেবে কাজ নিয়ে মুরশিদ ইফেন্দীর সেই সরাইখানা ত্যাগ করলাম। খুব কম মজুরীতে আমি চুক্তিবদ্ধ হলাম তবে শর্ত ছিল আমার থাকা খাবার ব্যবস্থা নিয়োগদাতাই বহন করবে।
রজব মাস আসার পূর্বেই আমার মালামালসহ কাঠমিস্ত্রীর দোকানে গিয়ে তুললাম। কাঠমিস্ত্রী ছিল একজন ব্যক্তিত্বশীল লোক। এবং সে আমাকে ছেলের মত আদর করতো। সে ছিল শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত এবং ইরানের খোরাসান এলাকার, নাম তার আব্দুর রিদা। সেই কাঠমিস্ত্রীর সহচার্যে থেকে আমিও ফার্সী ভাষা শিখতে শুরু করি। প্রতি সন্ধ্যায় ইরানের শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা ওখানে জড়ো হত এবং রাজনীতি থেকে অর্থনীতি সর্ববিষয়ের আলোচনা চলতো। প্রায়’শ তারা নিজেদের সরকার এবং ইস্তাম্বুলের খলীফার বিরুদ্ধে বিরুপ সমালোচনা করতো। কিন্তু নতুন কেউ এলে বিষয় পাল্টে তারা ব্যক্তিগত ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে দিত।
তারা আমাকে খুব বিশ্বাস করতো। যাই হোক পরে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, যেহেতু আমি তুর্কী ভাষায় কথা বলতাম তারা আমাকে আজারবাইজানি মনে করতো। মাঝে মাঝে আমাদের কাঠমিস্ত্রির দোকানে এক যুবক আসা-যাওয়া করতো। তার পোশাকে-আশাকে মতে হতো যে, বিজ্ঞান গবেষণায় রত একজন ছাত্র, কিন্তু আরবী, ফার্সী এবং তুর্কী ভাষা বুঝতো। তার নাম ছিল মুহম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাব নজদী। এই যুবক ছিলো অত্যাধিক রুঢ় এবং খুব নার্ভাস প্রকৃতির। অটোম্যান সরকারের বিরুদ্ধে গালমন্দ করলেও সে ইরানীয়ান সরকারের বিরুদ্ধে কখনই কিছু বলতো না। আমার দোকানের মালিক আব্দুর রিদা এবং ওহাবি নজদীর মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠার পিছনে মূল যে মিলটা ছিল, তা হলো তারা দু’জনেই ছিল ইস্তাম্বুলের খলীফার বিরোধী। তারপরেও এটা অবাক হবার মত ব্যাপার যে, ফার্সি জানা একজন সুন্নী লোকের সাথে আব্দুর রিদা নামক একজন শিয়ার কি করে এতটা সখ্যতা হয়। এ শহরে সুন্নীরা শিয়াদের সাথে বন্ধুত্বের এবং ভাতৃত্বের ভান করে চলে। এ শহরে অধিকাংশ অধিবাসী আরবী এবং ফার্সি ভাষার পাশাপাশি তুর্কি ভাষাও বোঝে।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের জন্য সমস্ত খেলাধুলা হারাম
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয; এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (২)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বেপর্দা সর্বপ্রকার অনিষ্ট ও ফিতনা-ফাসাদের মূল
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি কাফিরদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (৯ম অংশ)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: আনুগত্যশীল বান্দা ও ঈমানদার উম্মতদের জন্য সর্বোচ্চ সন্তুষ্টিমূলক, সর্বাধিক ফযীলতযুক্ত বিশেষ দু’টি আমল
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
গান-বাজনা অকাট্য দলীল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে হারাম
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল ফযীলত মুবারক (২য় পর্ব)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












