ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৭)
, ২৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য ÒConfession of British Spy and British enmity against Islam” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
সুন্নিদের মতে চতুর্থ খলীফা এবং শিয়াদের মতে প্রথম খলীফা হযরত আলী আলাইহিস সালাম নাজফে শুয়ে আছেন। নাজফ থেকে এক ঘন্টার হাঁটার পথ বা এক ফেরসা হচ্ছে কুফা। কুফা ছিলো হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতের সময় রাজধানী। যখন হযরত আলী আলাইহিস সালাম শহীদ হন তখন উনার দুই ছাহেবজাদা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনাকে নাজফে সমাহিত করেন। এক সময়ে নাজফে উন্নতির ছোঁয়া লেগে যায় এবং কুফা শহর ধীরে ধীরে মøান হতে থাকে। শিয়ারা নাজফে এসে জমায়েত হয় এবং এভাবে সেখানে বসতবাড়ী, মাদরাসা এবং বাজার গড়ে উঠে।
নিম্নলিখিত কারণে ইস্তাম্বুলের খলীফা ছিলেন নাজফবাসীদের উপর সহানুভূতিশীল।
১. ইরানের শিয়া প্রশাসন এখানকার শিয়াদের সমর্থক। খলীফার হস্তক্ষেপ এখানে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং এক পর্যায়ে যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণ হতে পারে।
২. নজফের অধিবাসীরা একদল সশস্ত্র উপজাতিকে তাদের দলে ভিড়িয়েছিলো, যারা শিয়াদের সমর্থন করতো। যদিও অস্ত্র এবং দলগত দিক থেকে তাদের অবস্থান তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ ছিলো না, সে কারণে খলীফা কোন অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়াটাকে বুদ্ধিমানের কাজ মনে করতেন না।
৩. সমগ্র বিশ্বের সকল শিয়ার ওপর বিশেষত আফ্রিকা ও ভারতের শিয়াদের নজফের শিয়াদের ছিলো কর্তৃত্ব। খলীফা কর্তৃক তাদের বিরক্তির কিছু কারণ ঘটালে সমগ্র শিয়ারা খলীফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারতো।
৪. হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দৌহিত্র এবং হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম উনার পুত্র হযরত ইমাম হুসাইন বিন আলী আলাইহিস সালাম শহীদ হন কারবালাতে।
ইরাকের অধিবাসীগণ মদীনা শরীফে গিয়ে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে আমন্ত্রণ করে যেন তিনি ইরাকে এসে খিলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এবং উনার পরিবারবর্গ যখন কারবালায় এসে পৌঁছেন ইরাকবাসীরা তখন তাদের সংকল্প পরিত্যাগ করে এবং দামেস্কে বসবাসরত উমাইয়া শাসক ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার নির্দেশে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে গ্রেফতার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এবং উনার পরিবারবর্গ শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত বীরত্বের সাথে ইরাকী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেন। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এবং উনার পরিবারবর্গের শহীদ হওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। যদিও এতে আপাত বিজয়ী হয় ইরাকী বাহিনী। সেদিন থেকে শিয়ারা কারবালাকে তাদের ধর্মীয় আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে মেনে নিয়েছে। সারা পৃথিবী থেকে শিয়ারা এখানে এসে জমায়েত হয় এবং এত বড় সমাবেশের মত কোন সমাবেশ আমাদের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা যায় না।
কারবালা হচ্ছে শিয়াদের শহর এবং রয়েছে অনেক শিয়া মাদরাসা। নাজাফ এবং কারবালা শহর একে অপরকে সহযোগিতা করে। এই দু’টো শহরে যাবার জন্যে আমি বসরা ত্যাগ করে বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। পরে সেখান থেকে চলে যাই ‘হুল্লা’ নামের একটি শহরে যা ইউফ্রেটিস (ফোরাত) নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। টাইগ্রীস (দজলা) এবং ইউফ্রেটিস (ফোরাত) নদী দু’টো তুরস্ক থেকে আরম্ভ হয়ে ইরাকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পারস্য উপসাগরে গিয়ে পড়েছে। ইরাকের কৃষি এবং সাফল্যে এই দুই নদীর অবদান রয়েছে।
আমি লন্ডনে ফিরে গিয়ে উপনিবেশ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব করলাম, এই নদী দু’টোর পানি প্রবাহের গতি পরিবর্তন করার মাধ্যমে আমরা ইরাককে আমাদের প্রস্তাবে রাজী করাতে পারি এবং এ ব্যাপারে একটা প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে। যখন ইরাকের পানি বন্ধ করা হবে তখন ইরাক বাধ্য হবে আমাদের দাবি মেনে নিতে।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












