ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়: সর্বত্র পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ
, ২৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৩ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১১ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১) “২০ বছরে সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎস বাংলাদেশে” (সংবাদপত্র, ১৬ আগস্ট, ২০২৩)
২) “বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে বাংলাদেশ” (সংবাদপত্র, ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩)
৩) “বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ” (সংবাদপত্র, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩)
৪) “বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে ঢাকা, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কা” (সংবাদপত্র, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)
এ সমস্ত সংবাদ শুনে মানুষ বর্তমানে ভীত সন্ত্রস্ত। এ ভীতি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রীতিমতো ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকম্পের সময় করণীয় কি- তা ট্রেনিং দেয়া শুরু হয়েছে।
এহেন, পরিস্থিতিতে একজন সচেতন মুসলমান হিসেবে সমাজের প্রতি আমাদের করণীয় কি?
প্রথমত, একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এসব দুর্যোগ মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে মানুষের উপর আপতিত গযব। মানুষ যখন মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভুলে যায় এবং উনার আদেশ নির্দেশ মুবারক সঠিকভাবে মান্য করে না, তখন মানুষের উপর এ সমস্ত দুর্যোগ গযব আকারে নাযিল হয়। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে বলেছেন- “জমিনে ও পানিতে যত ফিতনা-ফাসাদ, সব মানুষের হাতের কামাই।” (পবিত্র সূরা আর রুম, আয়াত শরীফ ৪১)
দ্বিতীয়ত, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে এই তথ্য পৌঁছাতে হবে যে, ভূমিকম্পের মত গযব থেকে বাঁচতে বিভিন্ন ট্রেনিং নিতে বা কৌশল করতে শরীয়তে নিষেধ নাই। তবে আযাব-গযব থেকে বাঁচার উপায় হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত হাসিল করা। কারণ আযাব-গযবের বিপরীত হলো- রহমত। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার যামানায় মহাপ্লাবনে উনার কাফির ছেলে ‘কেনান’ সর্বোচ্চ পাহাড়ের সর্বোচ্চ গাছের শীর্ষ চূড়ায় উঠেও কিন্তু মহাপ্লাবনের গযব থেকে বাঁচতে পারলো না, পানিতে ডুবে মারা গেল। অন্যদিকে এক বৃদ্ধা মহিলা উনার নৌকায় আরোহন না করেও মহাপ্লাবনের মধ্যেও মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমতে নিজ এলাকায় প্লাবনমুক্ত অবস্থায় থাকলেন, গযব থেকে বেঁচে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!
এখন কথা হলো- মুসলমানরা মহান আল্লাহ পাক উনার এই বেমেছাল খাছ রহমত হাসিল করবে কিভাবে?
হাদীছ শরীফে বর্নিত আছে- হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। একবার তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন হযরত আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সন্তানদের ও উনার স্বগোত্রীয় লোকদেরকে সাথে নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক উনার ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করছিলেন অর্থাৎ পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করছিলেন এবং বলছিলেন- “এ দিনটি এই এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ইত্যাদি” তখন উনাদের এই আয়োজন দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের জন্য- (৩টি সুসংবাদ প্রদান করেছেন)।
১) মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের সমস্ত দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন।
২) ফেরেশতাগণ আপনাদের জন্য মাগফিরাত (ক্ষমা) কামনা করছেন।
৩) তাছাড়া কিয়ামত পর্যন্ত যারা আপনাদের মত আমার পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল করবে উনারাও আপনাদের মতোই নাযাত লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! (আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীরিন নাযীর) -তথ্যসূত্র হাক্বীক্বতে মীলাদ, পৃষ্ঠা নং-২৫
অর্থাৎ আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মীলাদ শরীফ পাঠ করলে খাছ রহমত নাযিল হয়।
এছাড়া তাফসীরে জালালাইন এর লিখক হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্ব-রচিত “আল উয়াছায়েল ফী শরহিশ শামাইল” গ্রন্থে উল্লেখ করেন- “যে মুসলমানের গৃহে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, সে গৃহ ও গৃহে বসবাসকারী ব্যক্তি দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকা-, বন্যা, ভূমিকম্প, ভূমিধস, পরনিন্দা, কুদৃষ্টি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই-রাহাজানী ইত্যাদির আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে। সে ঘরে যার মৃত্যু হবে সে মৃত ব্যক্তি কবরে মুনকার নকীরের প্রশ্নের উত্তর অতি সহজে দিতে পারবে। (আন নিয়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং- ১৩ ও ১৪)
অর্থাৎ কোন বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যবস্থা করলে সে স্থানে রহমত বর্ষিত হওয়ার কারণে বসবাসকারী ব্যক্তিগণ সর্বপ্রকার বালা-মুছীবত, ফিতনা-ফাসাদ, মামলা-মোকাদ্দমা, আযাব-গযব ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকবে ইনশাআল্লাহ!
সকলকে এই বিষয়গুলি ভালভাবে বুঝিয়ে আযাব-গযব থেকে বাঁচার জন্য আমাদের নিজ নিজ এলাকা/মহল্লায় দৈনিক/সাপ্তাহিক/মাসিক ভিত্তিতে নিজেদের বাসায়, প্রতিবেশীদের বাসায়, বাড়ীওয়ালাদের বাসায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, মসজিদে, মাদরাসায়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এককথায় সর্বত্র পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের ও দুয়া-মুনাজাতের ব্যবস্থা করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সমাজের সর্বত্র পবিত্র মীলাদ শরীফ জারি করার সেই রুহানী কুওওয়াত দান করুন। আমীন!
-শফীউর রহমান নিপু।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৭)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র শবে বরাত উনার রোযা নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১১)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১১)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র ঈমান বা আক্বায়িদ সম্পর্কিত পবিত্র কালিমা শরীফসমূহ
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৪)
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)