নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
মহান আল্লাহ পাক তিনি মন্দ কথা পছন্দ করেন না
৫ই মুহররম, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুছ ছুলাছা)
, ১৩ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৯অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
لَا يـُحِبُّ اللّٰهُ الْـجَهْرَ بِالسُّوْءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلَّا مَنْ ظُلِمَ ۚ وَكَانَ اللّٰهُ سَـمِيْـعًا عَلِيْمًا ﴿১৪৮﴾ سورة النساء
মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রকাশ্য ভাবে মন্দ কথা বলা পছন্দ করেন না। তবে যাকে যুলুম করা হয়েছে বা যে নির্যাতিত হয়েছে সে ব্যতীত। মহান আল্লাহ পাক তিনি সব শুনেন ও জানেন।
অর্থাৎ অশ্লীল কথা-বার্তা ও গালাগালি করা এটাও প্রকাশ্যে মন্দ কথা বলার অন্তর্ভূক্ত। কোনো যালিম যখন অন্যায় আচরণ করে বা গালমন্দ করে আর মযলুম ধৈর্য্যধারণ পূর্বক নীরব থাকে তখন তার প্রতিশোধ গ্রহণ করা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য আবশ্যক হয়ে যায়। সেজন্য তিনি একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে প্রতিবাদ করার জন্য পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মযলুম যখন নিজেই তার প্রতিশোধ গ্রহণ করতে থাকে তখন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম চলে যান এবং শয়তান এসে দাঁড়ায়। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে এসেছে,
عَنْ أَبـِيْ هُرَيْـرَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ أَنَّ رَجـُلًا شَتَمَ أَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالنَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ، يَـتَـعَجَّبُ وَيَــتَــبَسَّمُ، فَـلَمَّا أَكْثَـرَ رَدَّ عَلَيْهِ بَـعْضَ قَـوْلِهٖ، فَـغَضِبَ النَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ، فَـلَحِقَهٗ أَبُـوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَشْتُمُنِـيْ وَأَنْتَ جَالِسٌ، فَـلَمَّا رَدَدْتُ عَلَيْهِ بَعْضَ قَـوْلِهٖ، غَضِبْتَ وَقُمْتَ، قَالَ كَانَ مَعَكَ مَلَكٌ يَـرُدُّ عَلَيْهِ، فَـلَمَّا رَدَدْتَ عَلَيْهِ، وَقَعَ الشَّيْطَانُ. ( رواه ابو داود ومسند احـمد)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। একদা এক ব্যক্তি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে গালমন্দ করলো। এ সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (উনার কাছেই) বসা ছিলেন। তিনি (লোকটির গালমন্দ শুনে) বিস্ময় প্রকাশ করলেন এবং মৃদু হাসতে লাগলেন। লোকটি যখন বেশি গালমন্দ শুরু করলো তখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তার কোনো কথার প্রতিউত্তর করলেন। এতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অসন্তুষ্ট হলেন এবং উঠে রওনা হলেন। অতঃপর হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনার পিছনে পিছনে চললেন এবং বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! লোকটি আমাকে গালমন্দ করছিল আর আপনি সেখানেই উপবিষ্ট ছিলেন। যখন আমি তার কোনো কথার প্রতিউত্তর করলাম তখন আপনি অসন্তুষ্ট হলেন এবং উঠে আসলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনার সাথে একজন ফেরেশতা ছিলেন যিনি ঐ লোকটির (মন্দ কথার) জবাব দিচ্ছিলেন। যখন আপনি তার জবাব দিলেন (তখন ফেরেশতা চলে গেলেন) শয়তান হাজির হয়ে গেল।
[আবূ দাঊদ শরীফ, আহমাদ শরীফ]
এখন প্রায়ই দেখা যায় মানুষ প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে একে অপরকে মন্দ কথা বলে থাকে এবং অশ্লীল-অশালীন কথা-বার্তা ও গালি-গালাজও করে থাকে। কিন্তু একবারও কি ফিকির করা হয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি মন্দ কথা বা অশ্লীল কথা-বার্তা পছন্দ করেন না? তাহলে কিভাবে এই মন্দ আমল করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত? কেউ কারো উপর রাগ হলে বা অসন্তুষ্ট হলে মন্দ কথা বলে রাগ প্রকাশ করে। এটা আদৌ জায়িয কিনা তা দেখা হয় না। যদি আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করি তাহলে অবশ্যই আমাদের উচিত হবে মহান আল্লাহ পাক উনার অপছন্দনীয় মন্দ কথা-বার্তা পরিহার করে ভালো কথা বলার সাথে সাথে সৎ ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করা।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে উনারত মত ও পথ মাফিক চলার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষ ও মহিলাদের নামাযে পদ্ধতিগত পার্থক্য (১)
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দুনিয়ার লোভ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (১২)
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার সোনালী যুগে ঘরে ঘরে বাল্যবিবাহ হতো, তখন একজন দাদী বা নানীর বয়স হতো ২১ বছর
১৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠকারীর জন্য রয়েছে বেমেছাল নিয়ামত মুবারক
১৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নারীবাদের বিকৃত বয়ান সমাচার ও কিছু কথা
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)