মহাসম্মানিত ঐতিহাসিক গাযওয়াতুল হুদায়বিয়াহ বা হুদায়বিয়ার জিহাদ (৮)
, ১৩ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১১ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আইন ও জিহাদ
এরপর হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্ক সৌকর্যের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে থাকলেন। অতঃপর স্বগোত্রীয় লোকজনদের নিকট ফিরে এসে তিনি বললেন, ‘হে গোত্রীয় ভ্রাতৃবর্গ! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি কায়সার ও কিসরা এবং নাজ্জাসীদের শাসকের দরবারে গিয়েছি, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি কোন শাসককে দেখিনি যে, তার অনুসারী বা সঙ্গী সাথীগণ সেই শাসককে এতটুকু সম্মান প্রদর্শন করছে, যতটুকু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যত বেশী সম্মান করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন নূরুল বারাকাত মুবারক (থুথু মুবারক) রেখেছেন তখন যে কেউ উহা হাতে নিয়ে আপন মুখমন্ডলে কিংবা শরীরে মেখে নেন। যখনই তিনি কোন কাজের নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন, তখনই তা বাস্তবায়নের জন্য সকলের মধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। যখন তিনি ওযূ মুবারক করেন তখন মনে হচ্ছে যেন উনার ব্যবহৃত পানি মুবারকের জন্য লোকেরা যুদ্ধ শুরু করে দিবেন। যখন তিনি কোন কথা মুবারক বলেন তখন সকলের কণ্ঠস্বর নীচু হয়ে যায়। উনার সম্মানের খাতিরে ছাহাবী উনারা কখনই উনার প্রতি পূর্ণভাবে দৃষ্টিপাত করেন না। নিশ্চয়ই যতটুকু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে এমন গুণাবলী মুবারকের সমাবেশ ঘটেছে যার ফলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এতটা মুহব্বত মুবারক এবং তা’যীম তাকরীম মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তোমাদের জন্য একটি উত্তম প্রস্তাব দিয়েছেন। তোমাদের উচিত তা গ্রহণ করে নেয়া।’
এদিকে যখন কুরাইশগণের যুদ্ধবাজ ও যুদ্ধোন্মাদ যুবকগণ দেখল যে তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ সন্ধির পক্ষপাতি, তখন তারা নেতৃস্থানীয়দের এড়িয়ে স্বতন্ত্রভাবে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল যে, রাত্রির অন্ধকারে এখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে তারা মুসলমানদের তাবুগুলোতে প্রবেশ করবে এবং এমনভাবে ফিৎনা সৃষ্টি করবে যাতে নিজে থেকেই যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠে।
অতঃপর তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ সম্পাদনের লক্ষ্যে রাতের আঁধারে ৭০ কিংবা ৮০ জন যুবক তানঈম পর্বতে অবতরণ করে মুসলমানদের তাবুগুলোতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। কিন্তু মুসলমানদের তাবু দেখাশুনাকারী মুজাহিদগণের প্রধান হযরত মুহম্মদ বিন মাসলামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাদের সকলকে বন্দী করেন। কিন্তু সন্ধিচুক্তির খাতিরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু রহমতুল্লিল আলামীন তাই তিনি সকলকে ক্ষমা প্রদর্শন করে মুক্ত করে দেন। সে সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে তখন সম্মানিত আয়াত শরীফ নাযিল হয়-
وَهُوَ الَّذِيْ كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِن بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ [الفتح:২৪]
অর্থ: ‘তিনি সেই সত্তা মুবারক যিনি তোমাদের উপর হতে তাদের হাতকে নিবৃত্ত করলেন পবিত্র মক্কা শরীফ প্রান্তরে এবং তোমাদের হাতকে তাদের হতে। এর পূর্বেই তিনি তাদেরকে তোমাদের আয়ত্বে এনে দিয়েছিলেন।’ (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ২৪) (চলবে)
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












