মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৫)
, ১৭ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১১ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১০ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিনদের মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন ‘আজওয়াদুন নাস’ বা সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও ছিলেন উক্ত ছিফত মুবারকের মালিক। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার দানশীলতা মুবারক :
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি নিজে যেমনি দান করতেন অন্যদেরকেও দান করার জন্য উৎসাহিত করতেন। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে যা কিছু রিযিক্ব আসতো তিনি সেটা দান করে দিতেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ لاَ تُمْسِكُ شَيْئًا مِمَّا جَاءَهَا مِنْ رِزْقِ اللهِ {إِلاَّ} تَصَدَّقَتْ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে রিযিক হিসেবে যা কিছু আসত, তিনি তা জমা না রেখে দান করে দিতেন।’ সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৫০৫)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে- হযরত উম্মে যাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন,) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট দুই থলি ভর্তি সম্পদ পাঠান। যাতে ১ লক্ষ দিরহাম ছিলো। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি একটি থালা বা পাত্র নিয়ে আসতে বললেন। আর ঐ দিন তিনি রোযা অবস্থায় ছিলেন। এরপর ঐ ১ লক্ষ দিরহাম সব মানুষের মাঝে বন্টন করে দিলেন। রাবী বলেন, অতঃপর যখন সন্ধ্যা হলো তিনি উনার খাদিমাকে বললেন, ইফতার দেয়ার জন্য। উনার খাদিমা হযরত উম্মে যাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বললেন, হে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম! আপনি কি পারতেন না যে দিরহামগুলো দান করেছেন সেখান থেকে কিছু দিরহাম দিয়ে ইফতার করার জন্য গোস্ত ক্রয় করে আনতে? তখন তিনি বললেন, তুমি আমার প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করোনা। যদি তুমি আমাকে পূর্বেই স্মরণ করিয়ে দিতে তাহলে আমিতো সেটা ব্যবস্থা করতাম। ( আত ত্ববাক্বাতুল কুবরা লি ইবনে সা’দ ৮/৬৭)
আরো বর্ণিত রয়েছে- বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত উরওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে বলেন, আমি উনাকে (এক বসাতে) ৭০ হাজার দিরহাম দান করে চাদরের কোণা ঝেড়ে ফেলতে দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! (আত ত্ববাক্বাতুল কুবরা লি ইবনে সা’দ ৮/৬৬)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম তিনি একদিন রোযা ছিলেন। উনার হুজরা শরীফে শুধু একটি রুটি ছিলো। এ সময় এক মিসকীন মহিলা উপস্থিত হলে তিনি তাকে রুটিটি দেওয়ার জন্য খাদিমাকে নির্দেশ দিলেন। খাদিমা আরয করলেন, তবে কি দিয়ে ইফতার করবেন? তখন তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি রিযিকের যিম্মাদার। ঠিকই বিকেলে কোন একজন লোক উনার জন্য বকরীর গোশত প্রেরণ করেন। তিনি খাদিমাকে ডেকে বললেন, এই নিন, আপনার রুটির চেয়ে উত্তম ইফতার।
উনার ভাগিনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার এবং হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার অর্থাৎ উনাদের চেয়ে অধিক দানশীলা আর কোন মহিলাকে দেখিনি। তবে উনাদের দু’জনের দানের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা ছিলো। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি একটু একটু করে জমা করতেন। জমাকৃত বস্তু উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হলে তিনি তা বণ্টন করে দিতেন। আর হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি আগামী দিনের জন্য কিছু তুলে রাখতেন না (যা পেতেন সাথে সাথে দান করে দিতেন)। সুবহানাল্লাহ! (আল আদাবুল মুফরাদ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২৮০)
তাহলে উনার দানশীলতা মুবারক কতো বেমেছাল ছিলো সেটা বলার অপেক্ষাই রাখেনা।
-হাফিজ মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












