সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক থেকে সংগৃহীত
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-১৫)
, ১৭ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৬ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১০ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র কুরবানী করার স্থান:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিদায় হজ্জের সময় মিনাতে কুরবানী করার সময় ইরশাদ মুবারক করেন-
فَانْحَرُوْا فِىْ رِحَالِكُمْ
অর্থ : আর তোমরা (যারা বাড়িতে অবস্থানকারী) তোমাদের বাড়িতে কুরবানী করবে”। (পবিত্র মুসলিম শরীফ)
কাজেই, কেউ যদি কাফির-মুশরিকদের প্ররোচনায় পড়ে বলে, “রাস্তা-ঘাট দূর্গন্ধ হয়ে যাবে এজন্য দূরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে কুরবানী করতে হবে”। এ কথা বলার দ্বারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করা হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
এরূপ বিরোধীতাকারীদের সম্পর্কে পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ১১৫ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَه الْهُدٰى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّه مَا تَوَلّٰى وَنُصْلِه جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا ﴿١١٥﴾
অর্থ : যে ব্যক্তি হিদায়েত প্রকাশিত হওয়ার পর মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করে এবং মুমিনগণ উনাদের পথ ছেড়ে দিয়ে অন্য পথের অনুসরণ করে; আমি (মহান আল্লাহ পাক) তাকে সে দিকেই ফিরাবো, যেদিকে সে ফিরতে চায় এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো। আর উহা নিকৃষ্ট আবাসস্থল”।
সুতরাং পবিত্র ঈমান-আমল হিফাযত করতে হলে, জাহান্নাম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধ মুবারক মেনে নেয়ার মত মেনে নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে হবে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, কোন আমলের দ্বারা বান্দা নাজাত লাভ করবে, সে বিষয়টি তার জানা নেই। তাই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কোনো আমলকেই ছোট মনে করা যাবেনা।
এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ لِىَ النَّبِىُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَحقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوْفِ شَيْئًا (متفق عليه)
অর্থ: হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন, “আপনি কোনো নেক কাজকে তুচ্ছ মনে করবেন না”। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
দেখা যায়, মানুষ ইলিম না থাকায় আমলকে তুচ্ছ মনে করে নেক কাজ করা থেকে বিরত থাকে, ফলে শয়তান খুশি হয়ে যায়। নাঊযুবিল্লাহ! যেমন: কেউ যখন সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ উনার রোযা রাখতে চায় তখন অনেকে বলে “এত রোযা রাখার দরকার নেই”। নাঊযুবিল্লাহ! আবার কুরবানীর গোশত দিয়ে ইফতার করার ক্ষেত্রেও বলে, “এত কিছু করার প্রয়োজন নেই”। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ এই আমলগুলি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত। মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ফযিলত সর্ম্পকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَمَسَّكَ بِسُنَّتِىْ عِنْدَ فَسَادِ أُمَّتِىْ فَلَه أَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের যামানায় একটি সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরবে, তার জন্য রয়েছে একশত শহীদের ছওয়াব”। সুবহানাল্লাহ! (বায়হাক্বী শরীফ)
উল্লেখ্য, এখানে বদর, উহুদ যুদ্ধে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন, উনাদের মত একশত শহীদগণ উনাদের সমপরিমান ছওয়াব লাভ করার কথা বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
অতএব, উম্মত হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করা। কারণ তিনি হচ্ছেন উসওয়াতুন হাসানা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












