সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক থেকে সংগৃহীত
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৪)
, ২৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
একটি কথা বলা জরুরী, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَدْ مُنِعَ صِيَامُ خَمْسَةِ اَيَّامٍ يَوْمُ الْعِيْدِ الْفِطْرِ وَ عِيْدِ الْاَضْحٰي وَ ثَلَاثَةِ اَيَّامٍ بَعْدَه
অর্থ : পাঁচদিনে রোযা রাখা নিষেধ করা হয়েছে, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আদ্বহা এবং ঈদুল আদ্বহার পরের তিনদিন”।
আরো বর্ণিত আছে-
قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَصُوْمُوْا لِهذِه الْاَيَّامِ فَاِنَّهَا اَيَّامُ اَكْلٍ وَشُرْبٍ وَبِعَالٍ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন “তোমরা এই দিনগুলোতে রোযা রাখবে না। কেননা নিশ্চয়ই এই দিনগুলো পানাহার এবং হাসিখুশি করার জন্য”।
পবিত্র হাদীছ শরীফ দু’খানার মধ্যে বর্ণিত রোযা দ্বারা মানুষ সাধারণত: যে নিয়মে রোযা রাখে ঐ রোযা উদ্দেশ্য। আর পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার রোযা অন্যান্য সব রোযা থেকে ভিন্ন। কারণ এই রোযার সুন্নতী ত্বরিকা হচ্ছে ছুবহে ছাদিক হতে কুরবানী করে কুরবানীর গোশত দিয়ে আহার করা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা। আর এটা পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার একটি বিশেষ খুছূছিয়ত মুবারকও বটে।
মূলতঃ কুরবানীর গোশত রান্না হওয়ার সাথে সাথে এ রোযার ইফতারী করতে হয়। আর গোশত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রান্না করে তা দ্বারা ইফতারী করা অতি আফযল।
আর এর শেষ সময় হলো- যোহরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার ১ঘন্টা পূর্বে অর্থাৎ দুপুরে মাকরূহ ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত। যদি কুরবানীর গোশত প্রস্তুত করা অথবা ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় তবে মাকরূহ ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এরমধ্যে যদি গোশতের ব্যবস্থা না হয় তাহলে মাকরূহ ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্বেই খেজুর বা পানি কিংবা ঘরে থাকা যেকোন খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ইফতারী করে নিবে।
বলাবাহুল্য, এই সামান্য সময়ের রোযার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি কেবল একটি রোযা নয়; বরং এক বছর রোযার ফযিলত দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক পছন্দনীয় আমল:
পবিত্র সূরা ফজর শরীফ উনার দ্বিতীয় পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
وَلَيَالٍ عَشْرٍ ﴿٢﴾
“কসম! দশ রাত্রির”।
এখানে দশ রাত্রির কসম করে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশরাত ও দশদিনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। এই দিনগুলোর গুরুত্ব ও ফযিলত সম্পর্কে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَعَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيْهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللّٰهِ مِنْ هٰذِهِ اْلأَيَّامِ الْعَشْرِ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا الْجِهَادُ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا الْجِهَادُ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ اِلَّا رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِه وَمَالِه فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذٰلِكَ بِشَيْءٍ.
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই দশদিনের (যিলহজ্জ শরীফ উনার প্রথম দশদিন) আমলে ছলেহ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এত প্রিয়, পছন্দনীয় যে, অন্য কোনো দিনের আমলে ছলেহ এত প্রিয়, পছন্দনীয় নয়। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদ করাও কি না? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদ করাও না। তবে ঐ ব্যক্তি ব্যতীত যে তার মাল-জান নিয়ে (মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদে) বের হয়েছে এবং সেগুলোর কোন কিছুই নিয়ে ফিরেনি”। (তিরমিযী শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












