মহিলাদের ইলিম-তা’লীমের ফাযায়িল-ফযীলত: “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়” (১১)
, ২৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২০ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
(গত ১৮ যিলক্বদ শরীফের পর)
পবিত্র হাদীছ শরীফ সংরক্ষণ, চর্চা ও তা’লীম দানে মহিলাগণের অবদান:
গবেষণায় দেখা যায় যে, হিজরী দশম শতাব্দী হতে পবিত্র হাদীছ শরীফ শাস্ত্রে ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অন্যান্য বিষয়ে ইলিম মুবারক অর্জনে নারীদের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা কিছুটা কমে গেছে। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে মাত্র কিছু সংখ্যক প্রখ্যাত পবিত্র হাদীছ শরীফ বিশারদ নারীর নাম পাওয়া যায়। যাঁরা মূলত নবম শতাব্দীর শেষের দিকে আবির্ভূত হন। হযরত আসমা বিনতে কামাল আল্-দ্বীন রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর দর্স দিতেন। ঐ সময়ের সুলতানের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি গ্রহণযোগ্য মতামত দিতেন এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিভিন্ন বিষয়ে নারীদেরকে প্রশিক্ষণ দিতেন। প্রখ্যাত কাজী মুসলেহ আদ-দীনের আহলিয়া বা স্ত্রী আয়েশা বিনতে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি দামেস্কের সালিহিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন। আলেপ্পোর হযরত ফাতিমা বিনতে ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি উনার সময়ের অন্যতম পবিত্র হাদীছ শরীফ বিশারদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
হযরত ফাতিমা আল্-জুযাইলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি অগাধ পা-িত্যের অধিকারিণী ছিলেন। শেষ জীবনে তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করেন এবং সেখানে সমৃদ্ধ এক পাবলিক লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর দর্স দিতেন এবং অনেকেই তাতে অংশগ্রহণ শেষে উনার নিকট হতে সার্টিফিকেট গ্রহণ করতেন। ইতিহাসে দেখা যায় যে, মুসলিম নারীগণ জ্ঞানার্জনে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন।
ইবনে আল্-বুখারীর সার্টিফিকেট ফলিওতে দেখা যায়, ৫৮৭/১২৮৮ সনে দামেস্কের উমর মসজিদে অনুষ্ঠিত ১১টি তা’লীমের একটি কোর্সে অনেক নারী উপস্থিত হতেন। অন্যদিকে দামেস্ক (৮৩৭/১৩২২ সনে) পাঁচটি তা’লীমের একটি কোর্সে অনেক নারী উপস্থিত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, এ কোর্সটি পরিচালিত হত প্রখ্যাত নারী হাদীছ বিশারদ হযরত উম্মে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বারা।
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলাদেরকে ইলিম শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার জন্য বহু পবিত্র হাদীছ শরীফে তাকীদ দিয়েছেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “প্রত্যেক মুসলমানের উপর ইলিম অর্জন করা ফরয”। এই পবিত্র হাদীছ শরীফে মুসলমান বলতে মহিলা ও পুরুষ উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শরয়ী এবং পার্থিব উভয় প্রকার ইলিম অর্জনের জন্য পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের প্রতিও মুবারক নির্দেশ রয়েছে। পুরুষদের জন্য ইলিম-তা’লীমকে যেরূপ জরুরি করা হয়েছে, মহিলাদের জন্যও তেমনি আবশ্যক করা হয়েছে। পুরুষরা যেমন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তা’লীম মুবারক গ্রহণ করতেন, মহিলারাও তেমনি পর্দার সাথে তা’লীম মুবারক গ্রহণ করতেন। শুধু সম্ভ্রান্ত নারীদেরকেই নয়, বরং দাসীদেরকেও ইলিম শিক্ষা দেওয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক রয়েছে।
বর্তমান যামানায় মহিলাদের জন্য সেই মহাসম্মানিত ইলিম-তা’লীম মুবারক পুনরায় জারী করছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাদের গভীর নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত ক্বায়িম মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আফদ্বালুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। এ লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ‘বালিকা মাদরাসা’। এছাড়াও জারী করেছেন অনন্তকালব্যাপী ফালইয়াফরাহু তা’লীমী মাহফিল। তামাম জাহানের মহিলাদের আল্লাহওয়ালী, ফক্বীহ বানাতে যেখানে তিনি প্রতিদিন ইলিম-তা’লীম মুবারক বিতরন করে যাচ্ছেন। সকলের উচিত ইলিম-তা’লীম মুবারক উনার এই মহাসম্মানিত ফালইয়াফরাহু মজলিসে হাজির হয়ে খাছ নিসবত, কুরবত ও ছোহবত মুবারক হাছিল করা।
-উম্মু মুদ্দাস্সির
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












