মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয় (পর্ব-১৯)
, ২৮শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২২ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার উৎসাহ ও ফযীলত:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে-
عَنْ حضرت أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، أَنَّهُ رَأَى ابْنَ مَسْعُودٍ يُخْرِجُ النِّسَاءَ مِنَ الْمَسْجِدِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَيَقُولُ:"اخْرُجْنَ إِلَى بُيُوتِكُنَّ خَيْرٌ لَكُنَّ". (رواه طبرنى)
অর্থ: হযরত আবু উমর শায়বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখেছেন যে, তিনি জুমুয়ার দিন মহিলাদেরকে মসজিদ হতে একথা বলে বের করে দিতেন যে, “হে মহিলারা! তোমারা তোমাদের ঘরে চলে যাও।
কারণ নামাযের জন্য তোমাদের ঘরই উত্তম। (তবারানী শরীফ)
কাজেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহিলাদেরকে ঘরে নামায পড়ার জন্য কার্যতঃ উৎসাহ প্রদান করেননি বরং ঘরে নামায পড়ার বহু ফযীলতও বর্ণনা করেছেন।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابن عمر عن النبى صلى الله عليه وسلم صلاة المرأة وحدها تفضل عَلَى صلاتها فِي الجمع خمساً وعشرين درجة (مسند الفردوس الديلمى)
অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করনে, মহিলাদের মসজিদে জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে একা নামায পড়ায় ২৫ গুণ বেশী ফযীলত রয়েছে।” (দায়লমী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৩৮৯) অতএব, মহিলাদের জন্য ঘরে একাকি নামায পড়ার মধ্যে যেখানে পঁচিশ গুণ বেশি ফযীলত সেখানে তাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ার মধ্যে কি কারণ থাকতে পারে, তা মোটেও বোধগম্য নয়।
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পর্দার গুরুত্ব ও মহিলাদের ঘরে নামায পড়ার উৎসাহ ও ফযীলতপূর্ণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা সমূহের দিকে লক্ষ্য রেখে ইজতেহাদ করতঃ মহিলাদেরকে মসজিদে এসে জামায়াতে নামায পড়তে নিষেধ করে দেন। তখন মহিলারা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে তিনি বলেন, “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদেরকে এ অবস্থায় পেতেন, যে অবস্থায় হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন, তবে অবশ্য তিনিও তোমাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করতেন।”
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার এ কথা মুবারকের আসল অর্থ হলো- হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। অর্থাৎ আমি এটাকে পূর্ণ সমর্থন করি। আর এটাকে সমর্থন করার অর্থই হলো, মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করা।
কাজেই যেখানে হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে ইজতেহাদ করতঃ মহিলাদের মসজিদে উপস্থিত হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন, সেখানে এর বিরোধিতা করে প্রথম যুগের দোহাই দিয়ে মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া সম্পূর্ণরূপে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিরোধী। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِى وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ (مشكوة شريف)
অর্থ: “তোমাদের জন্য আমার সুন্নত মুবারক ও আমার হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত মুবারক অবশ্যই পালনীয়।” (মিশকাত শরীফ)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের মসজিদে যাওয়ার অর্থই হলো উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আদেশ মুবারককে অস্বীকার করা। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার হুকুমকে অস্বীকার করা নিঃসন্দেহে কুফরীর অর্ন্তভুক্ত। (চলবে)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ আহমদ আবূ সাফওয়ান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












