মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরয। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (১৪)
, ০৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ৩১ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র আয়াত শরীফে উল্লেখিত إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا উনার দ্বারা মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা খোলা রেখে বের হওয়ার কথা মোটেও বুঝানো হয় নাই তার প্রমাণ (৩য় অংশ):
সিলসিলাতুত তাফসীর লি-মুছত্বফা আদওয়া-১১তম খ-, ৩৫পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا- لأهل العلم في ذلك أقوال: أقوى هذه الأقوال من ناحية السند وصحته قول حَضْرَتْ عبد الله بن مسعود رضي الله تعالى عنه أنه قال: (إن هذه الزينة هي الرداء والثياب) فمن شأن العرب أن نساءهم كن يلبسن العباءة السوداء وتحتها ثوب ملون، فأحياناً يظهر ذيل الثوب الملون من أسفل العباءة، ويشق على المرأة ستره، فهذا الذي فسر به حَضْرَتْ ابن مسعود رضي الله تعالى عنه الآية-
অর্থ: পবিত্র সূরা নূর শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا
অর্থ: মহিলারা যেন তাদের সৌন্দর্য পর-পুরুষের নিকট প্রকাশ না করে। তবে অনিচ্ছাকৃত যা প্রকাশ হয়ে যায়, তা ছাড়া।
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর প্রসঙ্গে আহলে ইলিমগণ উনাদের অনেক বক্তব্য রয়েছে। তন্মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফখানাই সনদ এবং ছহীহ হওয়ার দৃষ্টিতে সর্বাধিক শক্তিশালী গ্রহণযোগ্য মত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই পবিত্র আয়াত শরীফে উল্লেখিত যীনাত শব্দ মুবারক উনার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, মহিলাদের চাদর এবং পরিধেয় পোশাক। কেননা, আরবের তৎকালীন মহিলাগণ উনাদের ঘর থেকে বের হওয়ার অবস্থা ছিলো এই যে- নিশ্চয়ই উনারা যখন ঘর থেকে বের হতেন, তখন উনারা উনাদের পরিধেয় বস্ত্রের উপরে কালো রংয়ের عباءة আবা পরিধান করতেন। তার নীচে উনারা বিভিন্ন রংয়ের সৌন্দর্যম-িত পোশাক পরিধান করতেন। কখনো কখনো উনাদের পরিধেয় বস্ত্রের ঝুল উনাদের عباءة আবা এর নীচ দিয়ে প্রকাশ হয়ে যেতো। ফলে উক্ত عباءة আবা পরিধান করে উনাদের সতর আবৃত রাখা কঠিন হয়ে যেতো। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর প্রসঙ্গে উল্লেখিত বক্তব্যটি প্রদান করেন।
আল-মাবসূত্ব লিস-সারাখসী ১০ম খ-, ১৫২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
وقالت حَضْرَتْ اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَة الصِّدِّيْقَة عَلَيْهَا السَّلَامُ إحدى عينيها , وقال حَضْرَتْ ابن مسعود رضي الله تعالى عنه خفها وملاءتها................. وأنه لا يباح النظر إلى شيء من بدنها , ولأن حرمة النظر لخوف الفتنة , وعامة محاسنها في وجهها , فخوف الفتنة في النظر إلى وجهها أكثر منه إلى سائر الأعضاء-
অর্থ: وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا উক্ত আয়াত শরীফ উনার তাফসীর প্রসঙ্গে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ-ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, স¦াধীনা মেয়েগণ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় উনাদের দু’টি চক্ষুর একটি চক্ষু ব্যতিত সমস্ত চেহারা ঢেকে রাখবেন। এবং হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, উক্ত আয়াত শরীফ উনার অর্থ হলোÑ উনাদের মোজা এবং আবা বা বোরকা। ....................নিশ্চয়ই মহিলাদের শরীরের কোন কিছুই দেখা বৈধ নয়। কেননা, ফেৎনার আশংকায় তাদের দিকে দৃষ্টি দেয়া হারাম। সাধারণত: তাদের সৌন্দর্য তাদের চেহারার মধ্যেই থাকে। সে কারণে তাদের চেহারায় দৃষ্টি দেয়াটা, তাদের শরীরের অন্যান্য অংগের দিকে দৃষ্টি দেয়ার চেয়ে অধিকতর ফেৎনাজনক।
বলাবাহুল্য যে, মহিলাদের সৌন্দর্য প্রকাশের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো তাদের চেহারা। চেহারা খোলা রাখার দ্বারা যত ফেৎনা সংঘটিত হয় পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহিলাদের জন্য তাদের অলংকারের ঝনঝনি পর-পুরুষকে শুনানোর দ্বারা, আহাল ও আহলিয়ার গোপন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখে এমন বালকের দ্বারা, কাপড় বা বোরকার উপর দিয়ে পর-নারীর শরীর বা দেহের গঠন অনুভব করা ইত্যাদির দ্বারা এত ফেৎনা সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নাই। যার দ্বারা চেহারা খোলা রাখার তুলনায় ফেৎনার আশংকা একেবারেই কম, সেখানে ফেৎনার মূল কেন্দ্রবিন্দু চেহারা ও হাত পর-পুরুষের সামনে খোলা রাখা জায়িয বলার অর্থ হলো, আকলের পদস্খলন। যা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ উনারই মিথ্যা অর্থ ও অপব্যাখ্যা করা। যা স্পষ্ট কুফরী কাজ। তাই পরপুরুষ থেকে চেহারা ও হাত ঢেকে রাখা অবশ্যই ফরয। অস্বীকার করা কুফরী।
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












