মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরয। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (২৩)
, ২২ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৮ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৭ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ০২ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ থেকে মুখ ঢেকে পর্দা করা ফরয হওয়ার দলীল :
لَعَنَ اللَّهُ النَّاظِرَ وَالْمَنْظُورَ إِلَيْهِ
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাও মহিলাদের চেহারাসহ সমস্ত শরীর পর্দায় আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরয প্রমাণিত
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَّسَاءَ سَبِيلًا
অর্থ: তোমরা (ব্যভিচার তো করবেই না, এমনকি) ব্যভিচারের ধারে কাছেও যাবেনা। নিশ্চয়ই ইহা পাপ কাজ এবং নিকৃষ্ট পন্থা। (পবিত্র সূরা ইসরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩২)
মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حَضْرَت أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْه عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:كُتِبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ نَصِيبُهُ مِنَ الزِّنَا مُدْرِكٌ ذَلِكَ لَا مَحَالَةَ فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আদম সন্তানের জন্য ব্যভিচারের অংশ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চক্ষুদ্বয়ের ব্যভিচার দৃষ্টি দেয়া। কর্ণদ্বয়ের ব্যভিচার হলো কথা শ্রবণ করা। জিহ্বার ব্যভিচার হলো কথা বলা। হাতের ব্যভিচার হলো স্পর্শ করা। পায়ের ব্যভিচার হলো হাঁটা। অন্তরের ব্যভিচার হলো আকৃষ্ট হওয়া এবং কামনা করা। আর লজ্জার স্থানটি তা বাস্তবে পরিণত করে অথবা বিরত থাকে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, আহমাদ শরীফ, সুনানুল কুবরা লিল-বাইহাক্বী শরীফ-৭/৮৯)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَت الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ رَحْمَة اللهِ عَلَيْهِ بَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَعَنَ اللَّهُ النَّاظِرَ وَالْمَنْظُورَ إِلَيْهِ
অর্থ: হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার নিকট পবিত্র হাদীছ শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পৌঁছেছে। নিশ্চয়ই তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের প্রতি লা’নত বর্ষণ করেন যে দৃষ্টি দেয় এবং যার প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ শরহু মিশকাতিল মাছাবীহ-৫/২০৫৯, কানযুল উম্মাল, শুয়াবুল ঈমান-৬/১৬২, আস-সুনানুল কুবরা লিল-বাইহাক্বী- ৭/১৫৯, আল-মাহ্ইয়াউ ফী কাশফি আসরারিল মুয়াত্ত্বা- ৪/৩০০, লুময়াতুত তানক্বীহ-৬/৩২)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, মুখ ও হাত খোলা রেখে ঘর থেকে বের হওয়া বা পর-পুরুষের সামনে যাওয়া হারাম। জায়িয মনে করা কুফরী।
কেননা, ধরে নিলাম দৃষ্টি দানকারী দৃষ্টি দিয়ে অন্যায় করার কারণে সে অভিশপ্ত হবে, তাহলে যার প্রতি দৃষ্টি দিবে সেই মহিলাটি অভিশপ্ত হওয়ার একমাত্র কারণ হলো: সে দৃষ্টি দেয়ার ক্ষেত্র অর্থাৎ মুখ খোলা রেখে বের হয়েছে। সে কারণে সে অভিশপ্ত হয়েছে। অর্থাৎ পাপী ও পাপে সাহায্যকারী উভয়েই সমান অপরাধী বা কবীরা গুনাহকারী।
মুখ খোলা রাখা জায়িয থাকলে সেই মহিলা কখনো অভিশপ্ত হতোনা। কারো প্রতি আকর্ষিত হওয়া বা কাউকে পছন্দ অথবা অপছন্দ করা অর্থাৎ যীনাত বা সৌন্দর্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো মুখ। তদ্রুপ ব্যভিচার হওয়ার কারণটিও মুখ খুলে বের হওয়া।
তাই বলতে হয়, যেটার দিকে নজর করা হারাম হয়, সেটা খোলা রাখা কি করে জায়িয হয়? সেটা নফসের পূজারীরা মানতে চায় না। কারণ এটা তাদের নফসের খোরাক। তাই যারা দৃষ্টি দেয়ার ক্ষেত্র অর্থাৎ চেহারাকে খোলা রেখে ঘর থেকে বের হওয়া জায়িয় ফতওয়া দেয়, তারা দৃষ্টি দানকারী ও দৃষ্টির স্থানকারিণী নারীর চাইতেও হাজারগুণ বেশী অভিশপ্ত। কেননা, পবিত্র ক্বুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মিথ্যা অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে হারামকে জায়িয বলার কারণে তারা নিঃসন্দেহে মুরতাদের অন্তর্ভুক্ত।
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












