ইতিহাস
মাত্র ১ হাজার মুসলিম বাহিনীর কাছে তছনছ হয়েছিলো ১ লক্ষের বাইজেন্টাইন বাহিনী
আজনাদাঈনের যুদ্ধ:
এডমিন, ১৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ইতিহাস

বর্তমান গাযা উপত্যকার গুভরিনের নিকটে মরুভূমির তপ্ত রোদে এই যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিলো। অসম এই যুদ্ধ পাল্টে দিয়েছিলো বিশ্ব ইতিহাসের গতিপথ। শুরু হয়েছিলো এক স্বর্ণালী সামরিক যাত্রার।
রোমানদের এই হামলা প্রতিহত করার জন্য গাযার ওই প্রান্তরে সে সময় মাত্র ৮ হাজার মুসলিম বাহিনী নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন বিখ্যাত মুসলিম সিপাহসালার হযরত আমর ইবনুল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, শুরাহবিল ইবনে হাসানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের মতো জগদ্বিখ্যাত সামরিক বিশেষজ্ঞগণ। সুবহানাল্লাহ!
এই যুদ্ধে বাইজেন্টাইন বাহিনীর কমান্ডার ছিলো বাইজেন্টাইন শাসক হেরাক্লিয়াসের ভাই থিওডোর। সে তার দক্ষ সেনাদের নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝে অবস্থান নেয়। আর্মেনীয় বাহিনী নিয়ে রোমান জেনারেল ভার্দান ডান বাহুতে অবস্থান নেয়। আর স্থানীয় খ্রিস্টান বাহিনীসমূহ নিয়ে আরেক রোমান জেনারেল এমেসার বাম বাহুতে অবস্থান নেয়।
থিওডোরের গোয়েন্দা তাকে জানিয়েছিলো যে, মাত্র ১০ হাজারের মুসলিম বাহিনী তাকে প্রতিহত করতে এসেছে। এটা শুনে সে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেনি। কিন্তু সামনাসামনি দেখার পর সে বিশ্বাস করলো।
মাত্র ১০ হাজার মুসলিম সৈন্য দেখে সে কোনো কৌশল বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সোজাসুজি হামলা করে দেয়। মুসলিম বাহিনীও সামনাসামনি যুদ্ধই পছন্দ করতেন। উনারাও একযোগে হামলা শুরু করলেন। ব্যাপক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হলো। একের পর এক রোমান সেনা ধরাশায়ী হতে থাকলো। পুরো ময়দান রোমান সৈন্যদের লাশের পাহাড় হয়ে গেলো।
তবে যুদ্ধের মোড় তখনই পূর্ণরূপে ঘুরে যায় যখন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জিরার ইবনুল আজওয়ার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার অসামান্য সমরনৈপুণ্যে রোমান জেনারেলদের জাহান্নামে পাঠাতে থাকেন। তিনি প্রথমে রোমান জেনারেল ভার্দানকে ধরাশায়ী করে আর্মেনীয় বাহিনীকে চাপে ফেলে দেন। এর কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি জেনারেল প্যাট্রিকিংসকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেন। তিনি একের পর এক রোমান জেনারেলদের জাহান্নামে পাঠাতে থাকেন। এমন পরিস্থিতি দেখে পালানো শুরু করে রোমান বাহিনী। থিওডোর বিশাল বাহিনী ময়দানে রেখেই পালিয়ে যায়।
দুপুরের মধ্যে বাইজেন্টাইন বাহিনী মারাত্মক পরাজয়ের সম্মুখীন হয় এবং দামেস্কের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। আতঙ্কিত হেরাক্লিয়াস তার পুরো সেনাবাহিনী নিয়ে রাজধানী এমেসা থেকে পালিয়ে এন্টিওকে চলে যান। ফলে, সমগ্র ফিলিস্তিন মুসলিম অভিযানের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। সুবহানাল্লাহ!