মুসলমানদের জন্য অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়া, শুভেচ্ছা জানানো, সাহায্য সহযোগিতা করা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ ও ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ (১)
, ১৫ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৯ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৮ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ২৪ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যুগে যুগে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করেছে উলামায়ে সূ’ ও মুনাফিক্বরা। বর্তমান সময়েও দেখা যাচ্ছে এরা কিছু খুদ-কুরা আর ক্ষমতার লোভে পাগল হয়ে গেছে প্রায়। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নাম ব্যবহার করে নষ্ট করছে হাজারো সাধারণ মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা। বর্তমানে মুশরিকদের পূজা নিয়ে এরা একটা বিরাট ফিতনার বিস্তার করেছে। ভিন্ন ধর্মীদের বিশেষ করে মুশরিকদের মন্দির ও পূজায় নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে নামধারী কিছু ইসলামী দল এবং তারা প্রচার করছে এটা নাকি ইসলামের দায়িত্ব এবং সৌন্দর্য। নাঊযুবিল্লাহ! তারা মুশরিকদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছে, যতো ইচ্ছে মূর্তি তৈরী করুন, পাহারা দেয়ার দায়িত্ব তাদের। নাঊযুবিল্লাহ! এমনকি তারা মুশরিকদের পূজা উপলক্ষে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, তাদের মন্ডপে যেয়ে গিতা পাঠ করছে, তাদের দেবতার প্রশংসা করছে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
অর্থ: তোমরা মূর্তির অপবিত্রতা থেকে এবং মিথ্যা বলা থেকে বেঁচে থাকো। (পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
بُعِثْتُ لِكَسْرِ الْمَزَامِيْرِ وَالْاَصْنَامِ
অর্থ: আমি বাদ্যযন্ত্র ও মূর্তি ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত হয়েছি। (মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ اُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ بَعَثَنِىْ رَحْمَةً لِّلْعَالَـمِيْنَ وَهُدًى لِّلْعَالَـِمْيَن وَاَمَرَنِىْ رَبِّىْ عَزَّ وَجَلَّ بِمَحْقِ الْـمَعَازفِ وَالْـمَزَامِيْرِ وَالْاَوْثَانِ وَالصَّلِيْبِ وَاَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ
অর্থ: হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন সমস্ত জাহানের জন্য রহমত দানকারী এবং হিদায়েত দানকারী হিসেবে। আর আমাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ মুবারক করেছেন, বাদ্যযন্ত্র, মূর্তি, ক্রুশ ও জাহিলী কাজসমূহ ধ্বংস করার জন্য। (মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮, মুসনাদে হারিছ ২/৭৭০)
এই সমস্ত উলামায়ে সূ’রা মূলত চরম পর্যায়ের গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণেই এসব বলে যাচ্ছে। তাদের এই কুফরী, শিরকী ও গোমরাহীমূলক বক্তব্য ও কাজে যাতে সাধারণ মুসলমানগণ নিজেদের ঈমান ও আমল হিফাযত করতে পারেন। এজন্যই নি¤েœ এ বিষয়ে দলীলভিত্তিক আলোচনা পেশ করা হলো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা মুশরিকদের থেকে পবিত্র।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَذَانٌ مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِّنَ الْمُشْرِكِينَ ۙ وَرَسُولُهُ
অর্থ: “সম্মানিত হজ্জে আকবর উনার দিনে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পক্ষ থেকে সমস্ত মানুষের প্রতি ঘোষণা করে দেয়া হচ্ছে যে, মহান আল্লাহ তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা মুশরিকদের থেকে জুদা বা মুক্ত। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা তাওবা : আয়াত শরীফ ৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَنَا بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ مَعَ مُشْرِكٍ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلاَ لاَ تَرَاءَى نَارَاهُمَا
অর্থ: আমি ঐ সকল মুসলমানদের থেকে পবিত্র অর্থাৎ তাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই যারা মুশরিকদের সাথে অবস্থান করে। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান! উভয় সম্প্রদায়ের রান্নার আগুনও যেন পাশাপাশি দেখা না যায়। (তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৪৭৮০, বায়হাক্বী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১৬৯১১, মু’জামুল কাবীর ইত্যাদি)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সমস্ত কাফির-মুশরিকদের থেকে পবিত্র। উনাদের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যে সমস্ত নামধারী মুসলমানরা এই কাফির-মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক রাখবে তাদের সাথেও উনাদের কোনো সম্পর্ক নেই। নাঊযুবিল্লাহ!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












