মুসলমানদের স্বর্ণালী ইতিহাস
, ২৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৬ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

খলীফায়ে ছানী, আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি শুধুমাত্র বিশ্বের চারজন শ্রেষ্ঠ বিজেতা উনাদের অন্যতমই ছিলেন না; সামরিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং আইন বিভাগের অত্যাধুনিক কাঠামোর সৃষ্টিকারী হিসেবেও তিনি বিশ্ব ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি এসব বিষয়ে একক প্রতিভূ হিসেবে স্থান দখল করে আছেন।
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাসন ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ইসলামী হুকুমত ব্যবস্থাপনা। সম্প্রসারিত এক বিশাল মুসলিম খিলাফতী শাসন ব্যবস্থাকে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের নির্দেশ অনুসারে পরিচালনা করার জন্য তিনি সামরিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং আইন বিভাগের কাঠামোতে পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করেন; এমন কিছু বিষয় প্রবর্তন করেন যা মানুষ কল্পনা করতে পারে না। তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি রক্তচোষা গণতন্ত্র, রাজতন্ত্রের পরিবর্তে ইসলামী সর্বোচ্চ আদর্শের ভিত্তিতে খলীফা নিযুক্তি, পরামর্শ সভা (মুজলিসে শূরা)’র মতানুসারে প্রশাসনিক কাঠামো ও কার্যক্রম গ্রহণ, সাক্ষ্য, একতা, মুসলিম ভ্রাতৃত্বের আদর্শে জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন, খলীফা উনার কার্যে জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ দেয়ার অধিকার, খলীফা উনার জবাবদিহিতা ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ জারী করেন। উনার খিলাফতী কার্যক্রমের প্রধান কিছু দিক উপস্থাপন করা হলো-
সামরিক বিভাগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী ও সুসংহত করার জন্য ৯টি সামরিক বিভাগ বা জুনদ বা ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। যথা- পবিত্র মদীনা শরীফ, কূফা, বসরা, ফুসতাত, মিসর, দামেস্ক, হিমস, প্যালেস্টাইন ও মসুল। এই ৯টি সামরিক ঘাঁটিতে সর্বদা ৪০০০ অশ্ব এবং ৩৬০০০ অশ্বারোহী সৈন্য প্রস্তুত রাখা হতো। মুসলিম সৈন্যবাহিনী পদাতিক, অশ্বারোহী, তিরন্দাজ, বাহক ও সেবক প্রভৃতি বিভিন্ন শ্রেণী নিয়ে গঠন করেছিলেন। সৈন্যবাহিনীকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একজন বিশেষ বিচক্ষণ ব্যক্তি নিযুক্ত হতেন। তিনি আমীর নামে পরিচিত ছিলেন এবং তিনি উনার কার্যাবলীর জন্য সম্মানিত খলীফা উনার নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকতেন। দুটি বাহিনী একত্রে যুদ্ধযাত্রা করলে উনার দায়িত্ব পালন করতেন একজন সিপাহসালার। একটি সৈন্যবাহিনী কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করেছিলেন এবং এক একটি ‘কায়দ’-এর বা ব্রিগ্রেড-এর অধীনে যুদ্ধ করতেন। এভাবে এক একটি সৈন্যবাহিনীতে দশটি কায়েদের বাহিনী রাখতেন। প্রতিটি কায়েদের বাহিনীতে একশত সৈন্য কর্মরত রেখেছিলেন। প্রতিটি কায়েদ আবার কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপদলে বিভক্ত করেছিলেন। দশজন সৈন্য নিয়ে গঠিত এ উপদলটির নেতৃত্ব দিতেন এক একজন আমীর উল আশ-রাহ। সৈন্যরা লৌহ নির্মিত তরবারি, বর্শা, বল্লম, তীর-ধনুক, শিরস্ত্রাণ ব্যবহার করতেন। সৈন্যদের নিয়মানুবর্তিতা, আনুগত্য, যুদ্ধস্পৃহা, সুন্নতী পোশাকসহ বিশেষভাবে ইসলামী আদর্শ মানার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতেন। রণক্ষেত্রে উনারা অগ্র, মধ্য, পশ্চাৎ ও দুই পার্শ্ব এভাবে বিভক্ত হয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতেন। সৈন্যদের প্রারম্ভিক বেতন ছিল প্রথম বৎসরে ২০০ এবং পরে ৩০০ দিরহাম। খোরাক ও সুন্নতী জিহাদী পোশাক উনারা বিনামূল্যে পেতেন এবং উনাদের পরিবারও কোষাগার থেকে ভাতা লাভ করতেন। সৈন্যদের ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের জন্য সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখতেন।
-মুহম্মদ আবদুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যারা শরীয়তের খিলাফ কাজ করে তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শেষ মুহূর্তেও কত বড় ত্যাগ!!
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে শব্দ চয়নের আদব
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বাযযাযী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৮২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল ফাতাওয়াউল বাযযাযিয়্যাহ আউইল জামিউল ওয়াজীয’ উনার মধ্যে বলেন-
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ক্বদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক শরীয়তের ফতওয়া অনুযায়ী ক্বদমবুছী নেয়া বা করার জন্য অনুমতি দান করা আখাছ্ছুল খাছ সুন্নত মুবারক:
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তিনটি ছিফত সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আজকের ঘোর বিরোধীদের পূর্বপুরুষরাই মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ফযীলত বর্ণনা করেছেন
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)