আপনাদের মতামত
মুসলমানের মুসলমানিত্ব হরণ করার জন্য, ভারতের উত্তরখন্ডে অভিন্ন দেওয়ানী আইন পাশ করা হয়েছে ভারতে মুসলমানদের উপর নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে টু শব্দ করছে না- “বাংলাদেশের কথিত ইসলামী দলের নেতা”, “সরকারী নেতা”, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তথা গোটা মুসলিম বিশ্ব” (নাউযুবিল্লাহ)
, ০৩ রা শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৬ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ২০ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরাখ-ে, গত ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) থেকে চালু হয়েছে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এর ফলে যে কোনও ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, ভরণপোষণ, দত্তক নেওয়ার মতো বিষয়ে একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য যে পৃথক পৃথক পার্সোনাল ল বা পারিবারিক আইন রয়েছে, তা এই সমস্ত ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। তবে তফসিলি উপজাতিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
জনতা দল (ইউনাইটেড), সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এআইএমআইএম-এর প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মন্তব্য, মুসলমানদের 'নিশানা' করতেই এই বিধি চালু করা হচ্ছে।
‘সংখ্যাগরিষ্ঠর বেঁধে দেওয়া নৈতিকতার’ মাপকাঠিতে সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না - এই যুক্তি দেখিয়ে আগেই এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।
অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপির কাছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হলো ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস করবে ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’।
সমস্ত ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের কন্যা সন্তানরাই সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে। তিন তালাক, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এক স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিয়ের মতোই, বিবাহবিচ্ছেদ, লিভ-ইন সম্পর্ককেও বৈধতা দেয়া হয়েছে।
বিয়ে না করে কোনও যুগল একত্রে বসবাস বা লিভ-ইন করতে পারে কিন্তু তাদের নিয়ম মেনে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। লিভ-ইনের ক্ষেত্রে ভুল তথ্য দিলে বা নিয়ম না মানলে তিন মাসের জেল এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
২১ বছরের নিচে যুগল একত্রে থাকতে চাইলে তাদের অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন।
বিয়ে না করে একত্রে বসবাসকারী যুগলের সন্তান সমস্ত অধিকার পাবে।
যদি ওই যুগল একত্রে না থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, তাও নথিভুক্ত করাতে হবে। এক্ষেত্রে দুইজনেরই সম্মতি প্রয়োজন।
উত্তরাখ-ের সমস্ত নাগরিক, যারা অন্যত্র বসবাস করছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই বিধি কার্যকর হবে। অর্থাৎ আইনের দ্বারা মুসলমানদের বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক, সন্তান ইত্যাদিকে বৈধতা দিয়ে মুসলমান নতুন প্রজন্মকে অবৈধ কাজে ধাবিত করে তার আইনী বৈধতা দেয়া হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র এস কিউ আর ইলিয়াস বিবিসিকে বলেন, “ইউসিসিকে সমর্থন করে যেসব যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো যে কতটা অসার ও ভিত্তিহীন তা আমরা বার বার তুলে ধরেছি। ”
তাদের ওই প্রেজেন্টেশনের মূল কথাটা হল, রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি যে সংবিধান - সেটাই ‘ইউনিফর্ম’ নয়, কারণ ভারতের সংবিধান বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠীকে বিশেষ ধরনের বেশ কিছু অধিকার দিয়েছে।
সমগ্র দেশ যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকে, সেই লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু দেশের সংবিধান-প্রণেতারা এটা করেছিলেন। ফলে নানা ধরনের ‘ট্রিটমেন্ট’, নানা রকম ভাবে ‘অ্যাকোমোডেট’ বা ‘অ্যাডজাস্ট’ করা - এগুলো আমাদের সংবিধানের চরিত্রেই আছে, বলেছেন মহোদয় মি ইলিয়াস।
উত্তরাখ-ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন এআইএমআইএম-এর প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এই বিধি ‘অভিন্ন নয়’ বরং মুসলমান সম্প্রদায়কে ‘নিশানা করা হচ্ছে’।
তার কথায়, ‘হিন্দু বিবাহ আইন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইন এবং উপজাতিকে যখন এখানে ব্যতিক্রম বলে ধরা হয়েছে তখন একে অভিন্ন সিভিল কোড বলা যেতে পারে না৷’
তার অভিযোগ, ধর্মান্তরকরণের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে এই বিধি। তার কথায়, “অভিন্ন সিভিল কোডের কথা বলছে, কিন্তু যদি কেউ হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হতে চায়, তাদের আগে অনুমোদন নিতে হবে। সুতরাং এটা অভিন্নতা নয়, এটা নির্বাচনি লক্ষ্যবস্তু মাত্র। ”
এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মি. ওয়াইসি প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উদ্বেগও উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, এ জাতীয় একের পর এক পদক্ষেপের একমাত্র লক্ষ্য হলো মুসলমানদের দ্বীনি অধিকার হরণ করে বিজেপির নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার কৌশল।
অপরদিকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান মনে করছেন, উত্তরাখ-ের এই আইন মূলত: মুসলমানের মুসলমানিত্ব হরণ করা। মুসলমানদের ইসলাম পালন করা থেকে শক্ত হাতে বিরত রাখা। মুসলমানদের চুড়ান্তভাবে দমন-পীড়ন, নির্যাতন স্তব্ধ ও জব্ধ করা। নাউযুবিল্লাহ!
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












