সুন্নত মুবারক তা’লীম
লিবাস পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
, ০৫ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৭ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ পৌষ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِي يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ.
অর্থ: “আয় আমার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো বা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত হাছিল করতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ করো। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে মুহব্বত করবেন এবং তোমাদের গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ৩১)
কাজেই, প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, মাথার তালু থেকে পায়ের তলা এবং হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত অর্থাৎ সর্বাবস্থায়-সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীববুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতায়াত-অনুসরণ মুবারক করা।
নূরে মুজাসসাম হাবীববুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতায়াত-অনুসরণ মুবারক উনার মাধ্যমইে সর্বপ্রকার কল্যাণ-ভালাই, নিয়ামত, রহমত-বরকত মুবারক লাভ করা সহজ ও সম্ভব।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, হযরত হারিসাহ ইবনু ওয়াহ্ব আল-খুযাঈ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আর রবিয়াহ (হাফসাহ) আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে বলেছেনঃ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাদ্য গ্রহণ, পানীয় পান ও পোশাক পরিধানের কাজ ডান দিক হতে শুরু করতেন। এছাড়া অন্যান্য কাজ বাম দিক হতে করতেন। (আবূ দাঊদ শরীফ - ৩২)
উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ সহ অন্যান্য পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে কয়েকটি বিষয় প্রতিয়মান হয়। যেমন:
(১) সেলোয়ার, ইযার অর্থাৎ লুঙ্গি ও কোর্তাসহ সব ধরনের পোশাক পরিধানের সময় ডান হাত ও ডান পা আগে প্রবেশ করানো।
(২) পুরুষের জন্য সেলোয়ার, ইযার অর্থাৎ লুঙ্গি ও কোর্তা, জুব্বা ও আবা টাখনুর উপরে রাখা।
(৩) কাপড় পরিধানের সময় এই দোয়া পড়তে হবে:
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي هَذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ
উচ্চারণ: ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানি হাযাছ ছাওবা, ওয়া রাযাকনিহি মিন গাইরি হাউলিম মিন্নি ওয়ালা কুওওয়াতিন গুফিরা লাহু মা তাক্বদ্দামা মিন যাম্বিহি ওয়ামা তাআখখারা’।
অথবা
اَللّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ مِنْ خَيْرِه وَخَيْرِمَا هُوَ لَه وَاَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّه وَشَرِّمَا هُوَ لَه.
অথবা এই দোয়াটি পড়বে:
اَللهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ, اَنْتَ كَسَوْتَنِيْهِ اَسْئَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّمَا صُنِعَ لَهُ
আর নতুন কাপড় পরিধানের সময় এই দোয়া পড়া:
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي مَا أُوَارِي بِهِ عَوْرَتِي وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي
উচ্চারণ: ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি কাসানি মা উওয়ারি বিহি আউরাতি ওয়া আতাজাম্মালু বিহী ফী হায়াতী।’
(৪) বিসমিল্লাহ বলে কাপড় খোলা শুরু করা এবং খোলার সময় বাম হাত ও বাম পা আগে বের করা।
(৫) সেন্ডেল প্রথমে ডান পায়ে, তারপর বাম পায়ে পরা এবং খোলার সময় প্রথমে বাম পা, তারপর ডান পা থেকে খোলা।
(৬) যখন কাপড় খুলবে তখন ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, জ্বিন ও শয়তান এবং মানুষের মধ্যে পর্দা হল- ‘বিসমিল্লাহ’।
প্রত্যেক পুরুষের জন্য যে ৬ ধরনের পোশাক পরিধান করা হারাম
পোশাক মানুষের সভ্যতার প্রথম নিদর্শন। মানুষের লজ্জা নিবারণের ভূষণ। কালের পরিবর্তনে পোশাকের রকম-ধরনেও নানা পরিবর্তন এসেছে। পবিত্র ওহীর মাধ্যমে হযরত নবী-রাসুল আলাইহিমুস সালাম উনারা মানুষকে তার পোশাক ও তা পরিধানের নিয়ম-কানুন বলে দিয়েছেন।
পুরুষের সতর হলো, নাভি থেকে নিয়ে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত। তবে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হলো, এমন পোশাক পরিধান করা, যাতে তার প্রায় সমস্ত দেহ আবৃত হয়ে যায়। তবে পুরুষের জন্যে ৬ ধরনের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।-
১. পুরুষের পোশাক রেশমের তৈরি হতে পারবে না। রেশমি পোশাক পরা পুরুষের জন্যে হারাম।
২. সতর খুলে যায়, অর্থাৎ নাভি থেকে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত কোনো অংশ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এমন পোশাক পরা নিষিদ্ধ।
৩. পুরুষের পোশাক যেনো মহিলাদের মতো না হয়। অথবা এভাবেও বলা যায় যে, মহিলাদের পোশাক পুরুষের জন্যে পরা নিষেধ।
৪. পোশাক যেনো এমন না হয়, যা পরিধান করলে তার মধ্যে অহংকার প্রকাশ পায়। এই হুকুম পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যে প্রযোজ্য।
৫. পুরুষের পোশাক পায়ের গোড়ালির নীচে যেনো ঝুলে না যায়। পুরুষের জন্য টাখনুর নীচে নেমে যায় এত লম্বা পোশাক পরা হারাম।
৬. কাফির-মুশরিকদের সাদৃশ্য হয় এমন পোশাক পরিধান করা হারাম। (হাশিয়ায়ে শামায়েলে তিরমিযী শরীফ)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবায় সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা গরীবে নেওয়ায হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘বাংলাদেশি’ তকমায় এক বছরে ২২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শীতে বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চল, ব্যাহত কৃষিকাজসহ জনজীবন
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (৩)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (২)
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (১)
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (৪)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (৩)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (১)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












