মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবায় সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা গরীবে নেওয়ায হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
, ০৬ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১২ পৌষ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ لأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلاَ شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللهِ تَعَالٰـى
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাগণের মধ্যে এমন কতিপয় খাছ লোক আছেন, যাঁরা নবীও নন এবং শহীদও নন, কিন্তু কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে উনাদের সীমাহীন মর্যাদা মুবারক দেখে স্বয়ং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা পর্যন্ত আশ্চর্যাম্বিত হবেন।
قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ قَالَ هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلاَ أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا
অর্থ: হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বিনীতভাবে আরজ করলেন- ইয়া রসুল্লাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাদেরকে উনাদের পরিচয় দান করুন। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, উনারা এমন এক সম্প্রদায় যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের লক্ষ্যে পরস্পর পরস্পরকে মুহব্বত করবেন। অথচ উনাদের সাথে কোন প্রকার আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই এবং ধন সম্পদের কোন প্রকার লেন-দেন নেই।
فَوَاللهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ عَلَى نُورٍ لاَ يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلاَ يَحْزَنُونَ إِذَا حَزِنَ النَّاسُ وَقَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ (أَلاَ إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ.
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! সেই সকল ব্যক্তিত্বগণের চেহারা মুবারক হবে সেই দিন নূরে নূরানী। আর নূরের মিম্বরের উপর সেই দিন উনারা বসবেন। উনারা সেই দিন কোন প্রকার ভীত-সন্ত্রস্ত হবেন না। অথচ সকল মানুষই সে দিন ভীত-সন্ত্রস্ত হবে। আর উনারা কোন প্রকার চিন্তাগ্রস্তও হবেন না। অথচ সেদিন সকল লোকই অত্যন্ত চিন্তাগ্রস্ত হবে। অতঃপর তিনি এই পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন- “সাবধান! যারা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী বা বন্ধু উনাদের কোন ভয় নেই এবং উনারা কোন প্রকার চিন্তাগ্রস্তও হবেন না। (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অর্থাৎ হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারাই হচ্ছেন সেই সীমাহীন মর্যদা-মর্তবা ও সম্মান-মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তিত্ব।
সুলতানুল হিন্দ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চীশতী আজমেরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত মাতা-পিতা উভয় দিক থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশধর, আওলাদে রসূল। সপ্তম হিজরী শতকের সম্মানিত মহান মুজাদ্দিদ। সম্মানিত চিশতীয়া তরীক্বা উনার ইমাম। ভারত উপমহাদেশে বেলায়েত বা ওলীত্ব প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উনার অনুমোদন প্রয়োজন। উনার উছীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রায় এক কোটিরও বেশি লোককে ঈমান দান করেছেন।
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা গরীবে নেওয়ায হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যমীনে ৯৭ বছর অবস্থান মুবারক করেছেন। তার মধ্যে উনার বয়স মুবারক যখন ৯০ বছর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ সাক্ষাত মুবারক লাভ করলেন। এখনতো ২৪ ঘন্টাই জিয়ারত মুবারকে থাকেন তারপরও বিশেষ জিয়ারত মুবারক লাভ হলো তখন স্বয়ং যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব-মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হে মুঈনুদ্দীন! মুঈনুদ্দীন শব্দের অর্থ হচ্ছে দ্বীনের সাহায্যকারী। আপনি সত্যিই দ্বীনের সাহায্যকারী। আপনার দ্বারা অনেক মানুষ হেদায়েত হচ্ছে এবং বলতে গেলে প্রায় সমস্ত মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক গুলো আপনার দ্বারা পালিত হচ্ছে। কিন্তু একটা বিশেষ মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক এখনও বাকি রয়ে গেছে। আলাচনা মুবারক শেষ করে উনার ঘুম ভেঙ্গে গেল তিনি ফিকির করলেন কোন মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক বাকি রয়ে গেছে যেটা উনার স্বপ্ন মুবারকে স্মরণ করে দেওয়া হলো এখনও আপনার নিসবতে আযীম অর্থাৎ বিবাহ-শাদী বাকি এখনও করেন নি। পরে তিনি নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী পরপর দুইখানা নিসবতে আযীম শরীফ করলেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি সূক্ষাতিসূক্ষ ভাবে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করতেন যার জন্যে তিনি যখন পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করলেন তখন উনার মহাসম্মানিত কপাল মুবারকে লিখিত হলো সোনালি অক্ষরে সকলেই দেখেছে ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে-
هذا حبيب الله مات في حب الله
অর্থাৎ তিনি যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব, তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন যিনি খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মুবারকেই। সুবহানাল্লাহ!
খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেকটা বিষয়ে একটা দৃষ্টান্ত মুবারক স্থাপন করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি দৃষ্টান্ত মুবারক স্থাপন করে কায়িনাবাসীকে জানিয়ে দিলেন যে, যারা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা মুবারক করবেন উনাদের ইজ্জত-সম্মান, ফযীলত মুবারকও বেমেছালভাবে দেওয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সকলের জন্য আবশ্যক হলো, সর্বক্ষেত্রে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার হাক্বিক্বিভাবে ইত্তেবা করা। তাহলে বেমেছাল ফযীলত মুবারক, নেয়ামত মুবারক লাভ করা যাবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
‘বাংলাদেশি’ তকমায় এক বছরে ২২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শীতে বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চল, ব্যাহত কৃষিকাজসহ জনজীবন
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
লিবাস পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (৩)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (২)
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার গুরুত্ব ও ফযীলত মুবারক (১)
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (৪)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (৩)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুগন্ধি/ আতর ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক (১)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












