শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই মুসলমানদের জন্য উন্নয়ন হিসেবে গৃহীত হতে পারে না। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে; নিদেনপক্ষে মধ্যম ত্বাকওয়ার মুসলমানের দেশ চাই।
, ০৯ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়
![শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই মুসলমানদের জন্য উন্নয়ন হিসেবে গৃহীত হতে পারে না। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে; নিদেনপক্ষে মধ্যম ত্বাকওয়ার মুসলমানের দেশ চাই।](https://www.al-ihsan.net/uploads/1708369343_.jpg)
বিলবোর্ডে লেখা হচ্ছে- উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৪৭০ ডলার আর আজ সেই মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০০ ডলার। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সাফল্য সারা পৃথিবীর কাছে ঈর্ষণীয়। লেখার অপেক্ষা রাখে না- দেশের উন্নতি সবার কাছেই কাঙ্খিত। কিন্তু দেশের শুধু অর্থনৈতিক অগ্রগতি উন্নতি কিনা- তা নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনাও চলছে।
দাবি করা হচ্ছে, উন্নয়নের সাথে সুশাসন চাই। সুশাসন ব্যতীত উন্নয়নকে আইয়ুব খান আমলের শাসনের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ সুশাসনের গুরুত্ব ও অভাব বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে। তবে উল্লেখ্য যে, দুর্নীতি অপসারণ ও সুশাসন জারি করা লিভার বা কিডনী প্রতিস্থাপনের মতো কোনো সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট নয়, যে হঠাৎ করে বা হুট করে তা সরকার করতে পারবে। বরং সুশাসন তখনই নিশ্চিত ও টেকসই হবে, যখন সুনাগরিকের একটা প্রভাব বলয় গড়ে উঠবে। আর সুনাগরিক হতে প্রয়োজন সুশিক্ষা। কিন্তু দেশে সুশিক্ষার অভাবে সুনাগরিকের অভাব প্রকট। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ শিক্ষা লাভ করলেই সুশিক্ষা লাভ করা যায় না। অথচ সেটাকেই এখন সুশিক্ষা হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে। কথিত সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে সম্ভ্রমলুণ্ঠনের বহু অভিযোগ উঠেছে। আবার এসব সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে পাঠ চুকিয়ে বের হওয়া শিক্ষার্থীরাই মূলত রাষ্ট্রযন্ত্রের নীতি নির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক। এসব তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিতরাই আজ দেশের অপশাসন ও ব্যর্থতার চাবিকাঠি।
কারণ রাজনীতি থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বস্তরে আজ তাদেরই পদচারণা। রাষ্ট্রযন্ত্রে সর্বক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি থাকার পরও দেশ আজ দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। পূর্বেকার ন্যায় এখনো দেশের লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। ঘুষ, দুর্নীতি বাড়ছে বৈ কমছে না। এসব তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত পরিমলদের হাতে নিজ ক্লাসের ছাত্রীরা সম্ভ্রম হারাচ্ছে। এদেরই এক শ্রেণী ছিনতাই, রাহাজানি, নারীটিজিং, লিভটুগেদারসহ সব ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত হচ্ছে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, উচ্চ শিক্ষিত হলেই সুনাগরিক হওয়া যায় না। এজন্য প্রয়োজন ইসলামী শিক্ষা। প্রয়োজন তাক্বওয়ার। প্রয়োজন খোদাভীতির। যে খোদাভীতি তাকে সব অনৈতিক, অশালীন ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখবে। অথচ দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আজ তাক্বওয়া বা খোদাভীতি শিক্ষা দিতে কোনো প্রক্রিয়া নেই। ইসলামী শিক্ষার প্রভাব ও প্রতিফলন নেই।
সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তারা মসজিদ, মাদরাসায় প্রচুর ফান্ডিং করছে। প্রতিটি উপজেলায় সরকারি খরচে বিশাল মডেল মসজিদ হচ্ছে। কিন্তু শুধু মসজিদ-মাদরাসা তৈরি করলেই ইসলামী শিক্ষার প্রতিফলন হয় না। বিশ্বায়নের এ যুগে বেহায়া, বেপর্দা, বিবস্ত্রপনা, গান-বাজনা, খেলাধুলাসহ হারাম কাজ চরম আকারে বিস্তার লাভ করেছে। এসব উৎপত্তি ও চর্চার স্থানটা বন্ধ না করলে তা সাধারণের ইসলামী অনুরাগকে নিমিষে গ্রাস করে ফেলে। অথবা সাধারণের ইসলামী অনুভূতি কর্পুরের মতো উড়ে যায়। ইসলামী শিক্ষা তখন মনোজগতে টিকে থাকে না।
কাঙ্খিত ইসলামী আবহ তৈরিতে প্রয়োজন ব্যাপক সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। সরকার ক্রীড়া, সংস্কৃতি ইত্যাদির উন্নয়ন ও সংরক্ষণে ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করছে। অথচ আদর্শ সুনাগরিক গঠনে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন ও সম্মানিত ইসলামী শিক্ষার পরিবেশ গঠনে সরকার কোনো পৃষ্ঠপোষকতা করছে না। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ একুশে বই মেলা। প্রতিবছর শুধু কথিত ইসলামী ফাউন্ডেশনের বইমেলা করেই দায় সারে। অথচ ৯৮ ভাগ মুসলমানদের দেশ হিসেবে, সংবিধানে রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম হিসেবে বাংলাদেশে ইসলামী বই প্রদর্শনী বা বইমেলা যেখানে দ্বীন ইসলাম উনার সঠিক আক্বীদাভিত্তিক কিতাব প্রদর্শিত হবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত কিতাবগুলো প্রদর্শিত হবে এটি স্বাভাবিক একটি আয়োজন হওয়ার কথা ছিলো। বাংলা একাডেমির বিপরীতে ইসলামী বই মেলাই অনেক বেশি সরব ও স্বতঃস্ফূর্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করার দ্বারা সম্মানিত ইসলামী শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি দৈন্যতাই বিশেষভাবে প্রমাণিত হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে এখন মধ্যম আয়ের দেশ বলে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা মনে করি- দেশকে আগে কমপক্ষে মধ্যম মানের মুসলমানের দেশ তৈরি করা জরুরী। কারণ বর্তমান প্রজন্মের মুসলমানরা বেহেশত, দোযখ, হালাল, হারাম ইত্যাদি সাধারণ ইসলামী জ্ঞানই রাখে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এখনি যদি ইসলামী জ্ঞান দেয়া না হয়, তাহলে মুসলমান নামধারী ব্রিটিশ দালাল তুরস্কের কামাল পাশা যেভাবে সে দেশের মসজিদ-মাদরাসা ধ্বংস করেছে, শত শত বছরের ইসলামী কৃষ্টি সংস্কৃতির ভাবধারা মুছে দিয়েছে, বর্তমান প্রজন্মের নামধারী মুসলমানদের থেকে অদূূর ভবিষ্যতে তুরস্কের কামালের মতো মুরতাদ তৈরি হওয়া বিচিত্র কিছু নয়। যারা মুরতাদ কামালের মতো মসজিদ মাদরাসার বিরুদ্ধাচারণ করতে দ্বিধা বোধ করবে না। নাঊযুবিল্লাহ! এখনই দেশে দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত বিষয়গুলো নিয়ে বিরুদ্ধচারণ করার মতো বহু নাস্তিক-মুরতাদ তৈরি হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!
বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশে এখন নামধারী ইসলামী প্রতিষ্ঠানের অভাব নেই। কিন্তু সেগুলোতে খোদাভীতি বা তাক্বওয়ার চর্চা নেই।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি- মসজিদ, মাদরাসা তৈরির পাশাপাশি সরকারকে সর্বাগ্রে ছহীহ ইসলামী মনোজগৎ তৈরিতে নিবেদিত হতে হবে। ইসলামী মনোজগতের ব্যপ্তি ঘটাতে হবে। বিস্তার ঘটাতে হবে এবং টেকসই ইসলামী মনোজগতের ধারাবাহিকতা সুরক্ষার জন্য সুদূর প্রসারী ও শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতীয় জীবনে অর্জন ও সম্মাননার ক্ষেত্রে বিশ্বকাপ ক্রিকেট নয়; বরং মুত্তাকী হওয়াকে গণ্য করতে হবে। সমাজে তাক্বওয়ার গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কারফিউতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আরো আগুন। ধারদেনায় চলছে শ্রমজীবী মানুষ। তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে কে? সরকারকেই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অপুষ্টির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা; দেশের ৫০ ভাগ শিশুমৃত্যুর কারণ অপুষ্টি; অপুষ্টিতে শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বাড়ছে স্থুলতা। দেশের জনগণের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের কি কোনই দায়বদ্ধতা নেই?
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল খমিস, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। ঐতিহাসিক পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ।
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)