সবাইকে সর্বাবস্থায় হক্বের উপর ইস্তেকামত থাকতে হবে
, ১৩ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৯ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
আল ইহসান ডেস্ক:
প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। বিগত ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ ১৪৪৭ হিজরী সাইয়্যিদুনা মামদুহ হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বাদ ইশা কুল কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ নছীহত মুবারক করেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাতী শান মুবারক হতে এটাই তালিম নিতে হবে, সবাইকে সর্বাবস্থায় হক্বের উপর ইস্তেকামত থাকতে হবে। সেটা সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। হক্বের উপর ইস্তেকামত থাকার জন্যই অনন্তকালব্যাপী মাহফিল জারী করা হয়েছে ও বিশেষভাবে ৯০ দিনব্যাপী মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। যেমনটি মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র মেরাজ শরীফ দাওয়াত দিয়ে আরশে আজিম আরো বিশেষভাবে সুসজ্জিত করেছেন। ঠিক ১২ই শরীফ উপলক্ষেই ৯০ দিনব্যাপী বিশেষভাবে আমাদের এই আয়োজন।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ৯০ দিনব্যাপী মাহফিল উনার প্রচার প্রসারের বিষয়টি সবাই করবে। মুহব্বত হাসিল করতে মাহফিল করা হবে, কিন্তু পয়সা খরচ করা হবে না তাতো হবে না। সবাই হাদীয়া দিয়ে সবগুলো প্রচারপত্র সংগ্রহ করবে। প্রচার প্রসার ও মাহফিলের হাদীয়া সরাসরি জমা দিবে। প্রত্যেক আনজুমানে ও প্রত্যেক জেলায় কিছু লোককে দেয়াল লেখনী শিখানো জরুরী। তাহলে তারা ঢাকায় আসলেও দেয়াল লেখনী করতে পারবে, নিজ নিজ এলাকায়ও করতে পারবে। এছাড়া তোরণ নির্মাণ করতে বেশী টাকা লাগে না, বুদ্ধি থাকলে বিভিন্নভাবে তোরণ বানানো যায়। বাঁশ কলাগাছ সব দিয়ে তোরণ বানানো যায়। এটা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত সম্মানার্থে নির্মাণ করতে হয়। এজন্য প্রত্যেকে তোরণ বানাও। যাদের বেশী পয়সা সামর্থ্য আছে তারা বড় করে বানাবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ৯০ দিনব্যাপী মাহফিলে জিসমানী শরীক থাকবে, আবার আর্থিক খিদমত দুটাই করতে পারলে ইহকাল পরকালে কামিয়াবী। এটা মনে রাখতে হবে। ৯০ দিনবাপী মাহফিল প্রথম ৪০ দিনব্যাপী তালিমী মজলিশ যা প্রতিযোগীতা বলা হয়। সেখানেও তোমরা অংশগ্রহণ করবে। তোমরা হক্ব দাবী করো কিন্তু তোমাদের আমলগুলোতো হক্বের মতো না। চিল্লাওয়ালা যাদেরকে বলে তারা বাতিল হয়েও ৪০ দিনের জন্য নিজের পয়সা খরচ করে চিল্লায় বের হয়ে যায় শুধুমাত্র নিজেদের মতবাদ প্রচার প্রসার করার জন্য। তাহলে তোমাদের কি করা উচিত, কেমন সময় দেয়া উচিত, তা ফিকির করতে হবে। মুফতে কোন কিছু পাওয়া যায় না। এখন পানিও পয়সা দিয়ে খেতে হয়। হক্বের জন্য, হক্বের প্রচার প্রসারের জন্য সময় পয়সা দিতে হবে প্রয়োজনে জানও দিতে হবে। এখনতো আর জান দেয়ার প্রয়োজন নাই। তবে সময় দিয়েতো মাহফিল শুনতে হবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহি সালাম তিনি বলেন- তোমরা প্রচার প্রসার করবে, কিন্তু তোমরা নিজেরাই আসলে না তাহলে সেটা কেমন হলো। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তোমরা যা বলো, তা করো না, সেটা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট খুবই অপছন্দনীয়। তাই তোমাদের একেবারে এসেই মাহফিল শোনা উচিত। আর ঢাকা শহরে যারা থাকে তারাতো ৯০ দিন এসেই মাহফিল শুনতে হবে। এগুলো ভাষা দিয়ে ফজীলত মুবারক বুঝানো যাবে না। এতকিছু করলাম, বললাম তাও তোমরা গুরুত্ব বুঝো না। চক্ষু বন্ধ হবার আগে নিজেদের আমলগুলো শুধরে নাও। গত বছর যারা ছিলো তারা তো এ বছর নাই। কে কখন ইন্তেকাল করে সেটাতো তার জানা নাই। মূল বিষয় হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- মৃত্যুর স্বাদ সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। আবার বললেন- তোমরা মুসলমান না হয়ে ইন্তেকাল করো না। ইন্তেকাল হলে কান্নাকাটি করলেতো হবে না। কান্না যা করার এখনই করতে হবে। যারা মুসলমান হয়ে ইন্তেকাল করবে তাদের কোন আজাব গজব থাকবে না। আর যারা মুসলমান না হয়ে ইন্তেকাল করবে তারা আজাব গজবে গ্রেফতার হয়ে যাবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মাদরাসা হতে আলেম বের হয় তারা কি করে। তারা ইলমের কি কদর করলো। তারা তো আকিদা আমল কোনটাই শুদ্ধ করলো না। তোমাদের নাজাতের জন্য আমাদের এতগুলো ইন্তেজাম। পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- চার শ্রেণীর লোকের জন্য আমি সুপারিশ করবো। যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মান তাজিম করবে, যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আর্থিক খিদমত আনজাম দিবে, যারা শারিরীক পরিশ্রম করে উনাদের খিদমত মুবারক করবে তাদেরকে। যারা উনাদের মুহব্বত করবে অন্তর দিয়ে ও জবান দিয়ে মুহব্বতের বহিপ্রকাশ করবে তাদেরকে আমি সুপারিশ করবো। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত করলে সম্মান করলে খিদমত মুবারক আনজাম দিলে যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাস করে এই মাহফিল মুবারক উনাকে সম্মান করলে কি পাওয়া যাবে তাতো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এখানে মাহফিলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ছানা-ছিফত করা হয়। এগুলো শুনলে তোমাদের মধ্যে মুহব্বত জজবা পয়দা হবে তখন আমল করতে তোমাদের সুবিধা হবে। এজন্য সারাদেশ হতে এমনকি সারা দুনিয়া হতে সবারই আসা উচিত।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- প্রত্যেকে দুনিয়ায় ভালো থাকার জন্য পরিশ্রম করে। টাকা পয়সা কামাই করতে সময় ব্যায় করে। দুনিয়ায় ভালো থাকার জন্য সমস্ত সময় ব্যায় করা হয় মৃত্যুর পর কি অবস্থা হবে সেটার জন্য কি করা হলো। পরিবারের যাদের জন্য এতকিছু করা হলো তারা যদি জাহান্নামে যায় তখন তোমার কেমন লাগবে? তুমি কি শান্তি পাবে, পাবে না। পরকালে যাতে তোমরা নাজাত পেতে পারো সেই জন্য এত এন্তেজাম আয়োজন। মাহফিলে শারীরিকভাবে তোমরা আসো না, আর্থিকও শরীক হও না। এসব করে নিজের জিন্দেগীটাই নষ্ট করলে। এতে তুমি নিজেকে নিজেই ক্ষতি করলে। কামিয়াবী চাইলে ছুতানাতা বাদ দিতে হবে। আমাদের এখানে সারা বছর কখন কি হয় সেটাতো নির্দিষ্ট করা আছে। তাহলে সেগুলোতে কখন কি করতে হবে, কি খিদমত আনজাম দিতে হবে সেটারতো সবসময় প্রস্তুতি থাকতে হবে।
যখন জিহাদের সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আর্থিক খিদমত করার ঘোষণা মুবারক দিতেন তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যারা যত বেশী পারতেন দিতেন, না পারলে খেজুরের বিচি বিক্রি করে হলেও পয়সা জমা দিতেন। প্রত্যেকে সাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী কোশেশ করেছেন, উনারা হাকিকীভাবে ইস্তেকামত ছিলেন, সেজন্য আমরা দ্বীন ইসলাম পেয়েছি। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি হক্বের উপর ইস্তেকামত ছিলেন সেজন্য আজ আমরা হক্ব পেয়েছি। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












