সম্মানিত মহিলা ছাহাবী উনাদের বেমেছাল মুহব্বত মুবারক (ওয়াক্বিয়া মুবারক -৩)
, ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
হযরত ওয়াফরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি শুনেছেন, জেনেছেন যে, আবু জাহেল কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী সে মক্কা শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সে অনেক কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করেছে। নাউযুবিল্লাহ।
আর সে সেই ধারাবাহিকতায় বদরের জিহাদে এসেছে। এটা হযরত ওয়াফরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি জেনে উনার ২ ছেলের সাথে চুক্তি করলেন। কি চুক্তি করলেন, তিনি বললেন,
১ নং শর্ত, আপনাদেরকে অবশ্যই জিহাদে যেতে হবে।
২ নং শর্ত হচ্ছে যে, জিহাদে যেয়ে আবু জাহেলকে হত্যা করতেই হবে। আবু জাহেলকে হত্যা করতে না পারলে আমার বাড়ী আপনাদের কোন জায়গা হবে না।
আবু জাহেলকে হত্যা করতে গিয়ে আপনারা যদি শহীদও হয়ে যান, তাতে আমার কোন দাবি নাই।
কিন্তু আবু জেহেলকে হত্যা করতেই হবে। সে একটা নিকৃষ্ট পাপী। সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবসময় কষ্ট দেওয়ার ফিকিরে থাকে। নাউযুবিল্লাহ।
উনারা ২ ভাই, উনাদের সম্মানিত মাতার দেয়া সেই শর্ত চুক্তি অনুযায়ী বদরের জিহাদে আসলেন।
বদরের জিহাদে মুসলমানদের সংখ্যা কম ছিলেন, ৩১৩ জন মাত্র। কাফিরদের এক হাজার, তারা ছিল সুসজ্জিত, অস্ত্রশস্ত্রসহ। তাদের লোহার বর্ম ছিল। সবদিক থেকে তারা সুসজ্জিত ছিল।
হযরত ওয়াফরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ২ ছেলে, ঐ ২ ভাই, উনাদের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য অস্ত্রপাতি ছিল না, তরবারী ছাড়া। বর্ম ছিল না। বয়সের অভিজ্ঞতা কম। ছুরতান উঁচা লম্বা। উনারা আসলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন জিহাদ শুরু হবে সবাইকে স্থান নির্ধারণ করে দিলেন। কোথায় কে দাড়াবে। হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এক স্থানে দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট করে দিলেন। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি খুব শক্তিশালী যোদ্ধা ছিলেন। হাজার যোদ্ধার সমান উনার শক্তি ছিল। উনাকে একখানে স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হলো। কিন্তু উনার পাশে বড় কেউ নাই। ২ পাশে ২ জন এই ছেলেগুলি। হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পরবর্তী সময়ে বলেছেন, আমি যেখানে দাঁড়িয়েছি সেখানে আমি একা। আমার আশেপাশে তেমন কোন বড় যোদ্ধা নাই। ২ পাশে ২ জন ছেলে। লক্ষ্য করলেন, উনাদেরতো কোন দাড়ি মোছই উঠেনি। এই অল্প বয়সের ছেলে কি যুদ্ধ করবেন। তিনি একটু চিন্তিত ছিলেন। ডান দিকে যিনি ছিলেন তিনি খুব দ্রুত হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে আসলেন, এসে কানে কানে বললেন, চাচা, আবু জেহেল কোনটা, জিহাদ তো শুরু হয়ে যাচ্ছে। তখন হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি একটু আশ্চর্য হলাম, যে আবু জেহেলতো অনেক বড় পালোয়ান। তার কথা শুনলে তাকে দেখলে মানুষ পালিয়ে যায়। আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, আপনি আবু জাহেলকে দিয়ে কি করবেন। তিনি বললেন, আমার যিনি সম্মানিত মাতা উনার সাথে আমি চুক্তি করেছি, কি চুক্তি করেছেন। আবু জেহেলকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে। এই চুক্তি করে এসেছি। আবু জেহেলকে হত্যা করতে যেয়ে আমি যদি শহীদ হয়ে যাই তাতে কোন অসুবিধা নাই, আমার মা উনারও কোন দাবি নাই। কিন্তু শর্ত হচ্ছে আবু জাহেলকে হত্যা করতেই হবে।
হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি যখন ছেলেটির কথা শুনলাম, আমি তখন এই বাচ্চা ছেলেটির দিকে ভালভাবে দৃষ্টি করলাম। আমি উনাকে বললাম, আপনি কি পারবেন। উনি বললেন, হ্যাঁ। বললেন, আপনি আমাকে সময় মত দেখিয়ে দিবেন। হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, এই কথা শুনে আমার অনেক শক্তি বেড়ে গেল। এরকম ছেলে, এত সাহসী। উনাদেরকেই তো জিহাদে দরকার। কিছুক্ষণ পরে বাম দিকে যিনি ছিলেন, তিনি আমার কাছে আসলেন, বললেন চাচা, আবু জেহেল কোনটা। তিনি এই ছেলেকে একই জবাব দিলেন। আপনি আবু জাহেলকে দিয়ে কি করবেন। আবু জাহেল তো অনেক বড় পালোয়ান। তার চেহারা দেখলে মানুষ পালিয়ে যায়। আপনি কি করবেন। তখন তিনিও বললেন, আমার যিনি সম্মানিত মাতা উনার সাথে আমার চুক্তি হয়েছে। কি চুক্তি। জিহাদে যেভাবেই হোক আবু জেহেলকে হত্যা করতেই হবে। আমি যদি শহীদ হয়ে যাই, তাতে কোন অসুবিধা নাই। হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি শুনলাম, উনার দিকে ভাল করে তাকালাম। দেখলাম, তখনও দাড়ি মোছ উঠেনি, অল্প বয়স, উনারা গিয়ে চোখের পলকে আবু জেহেলকে ধরাশায়ী করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












