ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নছীহত মুবারক যেভাবে ফানা হয়ে বাক্বা লাভ করতে হবে
, ০৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
وما خلقت الجن والإنس إلا ليعبدون أن ليعرفون
অর্থ মুবারক: “আমি জ্বীন এবং ইনসানকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদত বন্দেগী করার জন্য। অর্থাৎ আমার মুহব্বত-মা’রিফত হাছিল করার জন্য।” (সূরা জাসিয়াত শরীফ, আয়াত শরীফ নং -৫৬)
মাখলুক সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার পরিচয় মুবারক লাভ করে উনার আনুগত্য করা। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে মুহব্বত করেই সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি চান বান্দাও যেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করে। আমরা যদি দুনিয়াবী মেছাল দেই তাহলে বিষয়টি সহজেই উপলব্ধি করা যাবে, একজন আহাল তার আহলিয়াকে মুহব্বত করে গ্রহণ করে এবং আহাল চায় তার আহলিয়াও যেন তাকে মুহব্বত করে। আহলিয়ার ক্ষেত্রেও অনুরূপ। আবার পিতা-মাতা সন্তানকে মুহব্বত করেন এবং পিতা-মাতা চান সন্তানও যেন পিতা-মাতাকে মুহব্বত করে।
এখন ফিকিরের বিষয় হল, কিভাবে মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করা যাবে? মূলত: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করার মাধ্যমেই মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করা সহজ এবং সম্ভব হবে। যে বিষয়টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يا محمد صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنا وأنت وما سواك خلقت لأجلك
অর্থ মুবারক: (মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,) “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আপনি। আপনি ব্যতীত যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুই আপনার জন্য সৃষ্টি করেছি।”
এই মহাসম্মানিত হাদীছে কুদসী শরীফ উনার পরিপ্রেক্ষিতে উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন আহাল তার আহলিয়াকে মুহব্বত করে তার জন্য ঘর-বাড়ি তৈরী করে এবং তাকে বলে “সমস্ত কিছু তোমার জন্য”।
ঠিক তদ্রুপ মহান আল্লাহ পাক তিনিও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত মুবারক করে সৃষ্টি করেছেন এবং উনার মুহব্বত মুবারক উনার জন্যই সমস্ত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন।
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মুবারকে ফানা হয়ে বললেন-
يا ربي أنت وما أنا وما سواك تركت لأجلك
অর্থ মুবারক: “আয় বারে ইলাহী! শুধুমাত্র আপনিই, আমিও নই। (কেননা আমি তো আপনার মধ্যেই বিলীন।) আর আপনি ব্যতীত যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু আপনার মুহব্বতে, আপনার জন্যই তরক করেছি।”
এই মহাসম্মানিত হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে সমস্ত কিছু ফানা করে দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে গরক থাকতে হবে।
জানা আবশ্যক যে, কেউ যদি হাক্বীক্বী মু’মিন হতে চায় তাহলে তার জন্য আবশ্যক হল, মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে নিজেকে ফানা বা বিলীন করে দেয়ার সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতেও নিজেকে ফানা বা বিলীন করে দেয়া। কেননা তিনিই হলেন সৃষ্টির মূল। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
کنت کنزا مخفيا فأحببت أن أعرف فخلقت الخلق لأعرف
অর্থ মুবারক: “আমি গুপ্ত ছিলাম। আমার ইচ্ছা হল আমি প্রকাশ হই। অতঃপর আমার পরিচয় লাভের উদ্দেশ্যে আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করলাম।” (তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী ৭/৪৫৩, ১৪/২৫, মিরকাত শরীফ ৩৭/২৪ ইত্যাদি)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি মুহব্বত করে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বপ্রথম সৃষ্টি মুবারক করেন। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












