ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
তাক্বওয়া হাছিল করার গুরুত্ব-ফযীলত (৫)
, ০৮ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০২ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ৩১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন আবদুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রথমে বললেন, দেখ চিকিৎসা করে কি হবে, যিনি সমস্ত চিকিৎসকের চিকিৎসক, সমস্ত হাকীমগণের হাকীম সেই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি আমাকে অসুখ মুবারক দিয়েছেন। কাজেই আমার এই অসুখ মুবারক সারা দুরূহ ব্যাপার। আমার হায়াত শেষ হয়ে গিয়েছে, আমি থাকতে পারব না এখানে।
তথাপিও মুরীদদের আশা উনারা বললেন, হুযূর! আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা চিকিৎসা করি। তিনি চিন্তা করলেন, সত্যিই চিকিৎসা করাতো সুন্নত মুবারক, অসুবিধা নেই ঠিক আছে নিয়ে যাও আমার ইস্তিঞ্জা মুবারক। নিয়ে যাওয়া হলো হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্তেঞ্জা মুবারক একটি পাত্রে করে এক বিধর্মী ডাক্তারের কাছে।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্বন্ধে সেই ডাক্তারের তেমন জানা শোনা নেই, হয়তো সামান্য কিছু জানে। যখন হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্তেঞ্জা মুবারক সেই বিধর্মী ডাক্তারের কাছে পেশ করা হলো, ডাক্তার আশ্চর্য্য হয়ে মনে মনে চিন্তা করতে লাগল। সে প্রথমে বুঝতেই পারল না এটা ইস্তেঞ্জা মুবারক। ডাক্তার জিজ্ঞেস করল, আপনারা এটা কি নিয়ে এসেছেন, এত আতর গোলাপের ঘ্রাণ বের হচ্ছে এবং মনে হচ্ছে তার থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির হচ্ছে।
তখন হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ মু’তাক্বিদগণ উনারা বললেন, ডাক্তার ছাহেব! মূলতঃ এটা হযরত গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন আবদুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্তেঞ্জা মুবারক।
শুনে ডাক্তার ছাহেব আশ্চার্য্য হয়ে বলল, চিকিৎসা পরে হবে, তার আগে আমাদেরকে তওবা করান। প্রথমে মুসলমান করান। সেই মহল্লায় ছিল চারশত বিধর্মী লোক। তারা তওবা করে মুসলমান হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ! ফিরে এসে তারা হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে জিজ্ঞেস করলেন, হে হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! কি কারণে আপনার এই অবস্থা এবং ইস্তিঞ্জা মুবারক উনার এই হাল?
তখন হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, দেখ মহান আল্লাহ পাক উনার একটা আয়াত শরীফ যেটা তিলাওয়াত করার কারণে আমার ভিতরের কলিজা-গুর্দা সব চূর্ণবিচূর্ণ ও তছনছ হয়ে গিয়েছে, যেগুলো ইস্তিঞ্জা মুবারক উনার রাস্তা দিয়ে রক্ত মুবারক আকারে বের হয়ে যাচ্ছে।
উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন সে আয়াত শরীফ যা আপনার কলিজা-গুর্দা তছনছ করে দিয়েছে?
হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
অর্থ : হে ইমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করার মত ভয় করো। তোমরা মারা যেও না মুসলমান না হওয়া পর্যন্ত।
‘ঈমানদারগণ মুসলমান না হয়ে ইন্তেকাল করো না। ’ ঈমানদার আবার মুসলমান হয় কি করে? ঈমানদারতো ঈমানদারই আছেন, মুসলমান হয়ে গেছেন তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কেন এ কথা বললেন? আর হযরত গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তো অবশ্যই মু’মিনে কামিল ছিলেন।
তিনি বললেন, এই পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করার পর আমার ভয় হচ্ছিল আমি প্রকৃত মুসলমান হতে পেরেছি কি-না। যেটা চিন্তা ফিকির করার কারণে আমার ভিতরের সমস্ত কলিজা, গুর্দা আর যা কিছু আছে সব তছনছ হয়ে রক্ত আকারে আমার ছোট ইস্তিঞ্জার রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।
এখন চিন্তা ফিকির করেন, আ’লা দরজা, তাকওয়া বা পরহেযগারী কত বড় বিষয়। অর্থাৎ একজন লোককে প্রকৃত মু’মিন, প্রকৃত মুসলমান হতে হবে। এখন প্রকৃত মুসলমান আর মু’মিন হওয়ার জন্য তার যতগুলি আমল-আখলাক্ব শুদ্ধ করা দরকার সমস্ত আমল আখলাক্বগুলি তাকে পর্যায়ক্রমে শুদ্ধ করতে হবে।
তাকওয়া সোজা কথা নয়। সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআন শরীফ আপনারা বার বার তিলাওয়াত করলে, তার তাফসীরগুলো পড়লে, পবিত্র হাদীছ শরীফগুলো বার বার ফিকির করলে, পবিত্র ইজমা-কিয়াস আলোচনা করলে দেখবেন, তার মূল বিষয়বস্তু হলো তাকওয়া বা পরহেযগারী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












