সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গওছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি (২২০)
, ১৭ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ২২ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সুযোগ্য উস্তাদ হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখজুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে নিজেই উনার শিক্ষকতা কার্যে নিয়োজিত ছিলেন, তখন উনার ছাত্রসংখ্যা ছিল খুবই কম। কিন্তু সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শিক্ষকতা ও পরিচালনা দায়িত্বভার গ্রহণ করার সাথে সাথে উনার এবং মাদরাসার খ্যাতি দেশ-বিদেশে ¯্রােতের মতো ছড়িয়ে পড়লো। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদের ভিড় অসম্ভবরূপে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলো। যার ফলে আগত ছাত্রদের জন্য মাদরাসা গৃহ এমনকি তৎসংলগ্ন প্রাঙ্গণও সঙ্কুলান না হওয়ায় বহু শিক্ষার্থী মাদরাসা সংলগ্ন গৃহসমূহের ছাদের উপরে, বাজারের গলি ও রাস্তার উপরে বসেই তা’লীম গ্রহণ করতে লাগলো।
মাদরাসার অপরিসরতার কারণে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা ও কষ্ট-ক্লেশ দেখে একদিন সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুরীদ-মু’তাকিদ, মুহিব্বীনসহ আম জনসাধারণের সামনে মাদরাসা সম্প্রসারণের আবশ্যকতা প্রকাশ করলেন। উনার আহবানে সাড়া দিয়ে ধনবান লোকরা স্বেচ্ছায় মাদরাসা গৃহ নির্মাণার্থে প্রচুর অর্থ হাদিয়া করলেন। আর আর্থিক সাহায্যে অপরাগ গরিব এবং দিন-মজুরগণ স্বেচ্ছায় বিনা পারিশ্রমিকে ও স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মাদরাসার নির্মাণ কাজ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। এমনকি বাগদাদ শরীফ উনার পুণ্যবতী মহিলাগণও পিছিয়ে ছিলেন না। বহু মহিলা মাদরাসা গৃহ নির্মাণের এই পুণ্যকার্যে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন।
রাজমিস্ত্রীর স্ত্রীর বদান্যতা
মাদরাসা গৃহ নির্মাণে পুরুষদের সাথে সাথে মহিলাগণও উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বদান্যতার পরিচয় দিয়েছিলেন। একটি মাত্র দৃষ্টান্ত দ্বারাই পাঠকবর্গ তা সম্যক উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।
একদা এক মহিলা তার রাজমিস্ত্রী স্বামীকে সাথে নিয়ে সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফ-এ হাজির হলেন। আরয করলেন, হে আমার শায়েখ! ইনি আমার স্বামী। মোহরানা বাবদ উনার নিকট আমার বিশটি স্বর্ণমুদ্রা পাওনা রয়েছে। এই বিশটি মুদ্রার দাবি আমি দুটি শর্তে উনার নিকট হতে প্রত্যাহার করছি। তার প্রথমটি হলো এই যে, তিনি বিনা পারিশ্রমিকে আপনার মাদরাসার গৃহ নির্মাণের কাজ করবেন। আর দ্বিতীয়টি হলো, তিনি সন্তুষ্টচিত্তে এই চুক্তিতে রাজি থাকবেন। তবে যেহেতু তিনি এখনই আমার সাথে এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন, তাই দশটি স্বর্ণমুদ্রার দাবি আমি সন্তুষ্টচিত্তে এখনই প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। বাকি দশটি মুদ্রা আদায় বাবদ একখানা রশিদ লিখে আমি আপনার হাত মুবারক-এ দিচ্ছি। আমার স্বামীর ওই মুদ্রার মূল্য পরিমাণ কাজ পূর্ণ হয়ে গেলে এই রশিদখানা আপনি উনার নিকট দিবেন। মহিলাটি একটি কাগজে উক্ত শর্তাদি লিখে সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারক-এ দিলেন এবং বললেন, উনার নিকট থেকে কাজ আদায় করে কাগজখানা উনাকে ফেরত দিলেই আমি বুঝতে পারবো যে, তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপরই তিনি আমার সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হবেন।
সেই রাজমিস্ত্রী কাজ শুরু করে দিলো; লোকটি ছিলেন দক্ষ রাজমিস্ত্রী। মনোযোগ সহকারে তিনি কাজ করছেন। কিন্তু সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অত্যন্ত কোমলচিত্তের অধিকারী ছিলেন। তাই এক সাথে রাজমিস্ত্রির মজুরীর সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক কেটে রাখতে চাইলেন না। তাই তিনি লোকটির একদিনের কাজের মজুরী কাটতে লাগলেন। আর একদিনের কাজের মজুরী নগদ দিতে থাকলেন। এভাবে উনার পারিশ্রমিক বাবদ পাঁচটি স্বর্ণমুদ্রার দাবি মাফ করে মহিলা প্রদত্ত শর্তের কাগজখানা উনার হাতে দিয়ে দিলেন। অতঃপর রাজমিস্ত্রী বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা উনার স্ত্রীর কাছে প্রকাশ করলেন। সেই স্ত্রী সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এরূপ ব্যবস্থায় অত্যন্ত খুশি প্রকাশ করতঃ বললেন যে, তিনি যা ভালো মনে করেছেন, আমরাও তাতে খুশি আছি। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












