সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গওছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি
কারামত বা অলৌকিক ঘটনা
, ২১ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
كرامة (কারামত) শব্দের অর্থ: সম্মান, মর্যাদা, মহত্ত¡, অলৌকিক ঘটনা। সাধারণ স্বভাবের বিপরীত যে সকল ঘটনা হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের দ্বারা প্রকাশিত হয় তাকেই কারামত বা অলৌকিক ঘটনা বলে। কারামত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট আওলিয়ায়ে কিরাম উনার মর্যাদা, মর্তবার বহিঃপ্রকাশ। কাফির, মুশরিক, ফাসিক-ফুজ্জারদের দ্বারাও স্বভাববিরোধী বা অলৌকিক ঘটনা প্রকাশ পেতে পারে। আবার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের দ্বারাও এরূপ ঘটনা প্রকাশ পেতে পারে। তবে তাকে কারামত বলা যাবে না। তাকে বলা হয়, ইস্তিদরাজ বা ভেল্কিবাজি। আর অপ্রাপ্তদের দ্বারা প্রকাশিত অলৌকিক ঘটনাকে আওন বলা হয়।
হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কারামত সত্য। এর প্রতি বিশ্বাস করা ফরয। আক্বাঈদের কিতাবে বর্ণিত আছে-
كرامات الاولياء حق
অর্থ : “হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কারামত সত্য।” (শরহে আক্বাঈদে নাসাফী) তার সততাকে বিশ্বাস করা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার অন্যতম আক্বাঈদ বা বিশ্বাস। বাতিল ফিরক্বা মুতাযিলা; তারা কারামত বিশ্বাস করেনা। তাদের মতাদর্শের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে জামাতী, ওহাবী, খারিজী, লা-মাযহাবীরাও। তারাও কারামতকে অস্বীকার করে। যা তাদের গোমরাহী বা পথ ভ্রষ্টতারই প্রমাণ।
কারামতকে আমভাবে অস্বীকার করা কুফরী। আর ব্যক্তি বিশেষ কারামতকে অস্বীকার করা কুফরী না হলেও গোমরাহী থেকে খালি নয়। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষ কুফরীও হতে পারে।
কারামতকে অস্বীকার করা সংশ্লিষ্ট আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনার প্রতি বিদ্বেষভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। আর আওলিয়ায়ে কিরাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন হওয়া হালাকী বা ধ্বংসের কারণ। পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
من عاد لى وليا فقد اذنته بالحرب
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমার ওলী উনার সাথে বিদ্বেষভাবাপন্ন হয়, তার সাথে আমি যুদ্ধের অনুমতি দেই তথা যুদ্ধ ঘোষণা করি।” (বুখারী শরীফ)
কেননা সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কারামতকে অস্বীকার করার কারণে কত লোক যে গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হয়েছে তার বর্ণনা দিলে স্বতন্ত্র একটি গ্রন্থ রচিত হবে। সঙ্গতকারণে এখানে তার বর্ণনা দেয়া যাচ্ছে না।
ওলীআল্লাহ হওয়ার জন্য কারামত প্রকাশ পাওয়া শর্ত নয়। তবে প্রত্যেক ওলীআল্লাহ উনার কিছু না কিছু কারামত প্রকাশিত হয়ই। সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবুবে সুবহানী হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অসংখ্য- অগণিত কারামত মুবারক প্রকাশিত হয়েছে। আমরা সংক্ষিপ্তাকারে উনার কিছু কারামত প্রকাশ করবো। ইনশাআল্লাহ।
দার্শনিকের জ্ঞান বিলুপ্তিকরণ
হযরত শায়েখ্বা আবুল মুজাফফর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমি একদিন সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে হাজির হলাম। আমার হাতে গ্রীক দর্শন ও আত্মা বিষয়ক একটি বই ছিল। মজলিসে উপস্থিত এক ব্যক্তি আমাকে বললো, গাউছে পাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ বই সম্পর্কে আপনাকে কিছু বললে আপনি কি বলবেন? কাজেই, সেটা ঘরে রেখে আসেন। তখ্বান আমি সেটা ঘরের এক কিনারে রেখে আসার মনস্থ করলাম, যাতে শায়েখ্বা অসন্তুষ্ট না হন। কিন্তু আমি দর্শন শাস্ত্রের প্রতি এতোই আকৃষ্ট ছিলাম যে, বইটি হাতছাড়া করতে মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। বইটির অনেক বিষয় আমার মুখ্বাস্থ হয়ে গিয়েছিল। তবুও গাউছে পাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানার্থে আমি যে মাত্র বইটি রেখে আসতে উঠতে গেলাম, আমি উঠতে পারলাম না। আমার অবস্থা এমন হয়ে গেল যেন আমি হাত-পা আবদ্ধ একজন কয়েদী। তিনি আমাকে বললেন, তোমার বইটি আমাকে দাও। উনাকে হস্তান্তর করার আগে একটু খুলে দেখি, সব কাগজ সাদা হয়ে গেছে। সব বর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যাক, আমি বইটি উনাকে দিয়ে দিলাম। তিনি এক এক পৃষ্ঠা উল্টায়ে দেখ্বালেন এবং বললেন- এটাতো মুহম্মদ বিন জরিস লিখিত ‘ফাজায়েলে কুরআন’। আমি আশ্চর্য হয়ে বইটি হাতে নিয়ে দেখ্বালাম, ঠিকই বইটি কুরআনের ফযীলতের উপর খুবই সুন্দরভাবে লিখিত। ইতোপূর্বে আমি দর্শন শাস্ত্রের যে সব বিষয় জ্ঞাত ছিলাম, সব ভুলে গেলাম এবং এমনভাবে ভুলে গেলাম যে আজ পর্যন্ত একটি বিষয়ও আমার স্মৃতিতে আসেনি। সুবহানাল্লাহ!
-কাওছার আহমদ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












