সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৩)
, ১৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৪ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৭ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) বরকতময় জিবনী মুবারক
কাফির-মুশরিকদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর:
হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, তখন শৈত্য প্রবাহ চলছিলো। ঠান্ডার কারণে অনেকে দাঁড়াতে পারছিলেন না। এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি উঠে খুব দ্রুত উনার নিকট হাযির হয়ে বললাম, লাব্বাইক ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি গিয়ে তাদের তাবুতে প্রবেশ করুন এবং দেখে আসুন তারা কি করছে। তবে সতর্কবার্তা হচ্ছে, সমস্ত বিষয়গুলো আমাকেই এসে খুলে বলবেন এবং অন্য কোথাও যাবেন না।
হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারকমত আমি কাফির-মুশরিকদের তাবুতে চলে গেলাম। তখন ঝড়ো-হাওয়া ও মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আগত সৈন্যগণ তাদের অবস্থা কাহিল করে তুলেছিলেন এবং তাদের উপর খোদায়ী কঠিন আযাব-গযব আপতিত হয়েছিলো। তাদের হাড়ি-পাতিল, আগুন, তাঁবু কিছুই আর স্থির থাকেনি। সব কিছুই লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। এক পর্যায় হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (তখনও তিনি ঈমান প্রকাশ করেননি)। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন এবং কুরাইশ মুশরিকদের সম্বোধন করে বললেন, তোমরা সতর্ক হও, প্রত্যেকে তার পাশের লোককে চিনে নাও। হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি আমার পাশের লোককে হাত ধরে বললাম, ভাই তুমি কে? সে বললো, আমি অমুকের পুত্র অমুক। এভাবে তারা দিক-বিদিক ছুটাছুটি করতে লাগলো এবং পালাতে লাগলো। আমি সতর্কতার সাথে তাদের কঠিন অবস্থার অবলোকন করতে লাগলাম।
হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক প্রস্থানের নির্দেশ:
যখন দেখা গেলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের হাত মুবারকে আব্দে উদসহ কয়েকজন কাফির নিহত হয়েছে, সাথে তাদের উপর খোদায়ী আযাব এসে তাদেরকে ঘেরাও করেছে, হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আর বসে না থেকে দ্রুত নির্দেশ দিলেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তোমরা কোন স্থায়ী নিবাসে আসো নি। আমাদের উট-ঘোড়া সব মারা যাচ্ছে।
বনূ কুরাইজা আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাদের পক্ষ হতে আমাদের প্রতি অপ্রীতিকর সংবাদ পাচ্ছি। এদিকে ঝড়-ঝাপটা আমাদের যা অবস্থা তাতো দেখতে পাচ্ছো। আগুন জ্বালানো যাচ্ছে না, হাড়ি-পাতিল সব উড়ে যাচ্ছে। তাঁবু ধরে রাখা যাচ্ছে না; ছিড়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে সব কিছুই আমাদের লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সুতরাং চলো আমরা এখন ফিরে যাই। কারণ এখন যদি মুসলমানরা আমাদের উপর আক্রমণ করে তাহলে নিশ্চিত আমরা আরো পর্যুদস্ত হবো, লাঞ্চিত হবো, আমরা মৃত্যুবরণ করবো। কাজেই এখানে অবস্থান করা আর কোনক্রমেই সমিচীন মনে করছি না। কাজেই আমি রওনা হচ্ছি, তোমরাও পবিত্র মক্কা শরীফের দিকে যে যেভাবে পারো দ্রুতগতিতে পলায়ন করো নচেৎ ধ্বংস হওয়া ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকবে না। তখন সকল কাফির মুশরিকরা সম্মতি জ্ঞাপন করে দ্রুতগতিতে যে যেভাবে পারলো পিছন দিকে তাদের অবশিষ্ঠ পশুগুলো নিয়ে ছুটতে লাগলো।
উল্লেখ্য যে, হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উটের কাছে গেলেন। উটটি বাঁধা ছিলো। তিনি উটের উপর বসে পড়লেন। তারপর তাকে আঘাত করতেই সেটি উনাকে নিয়ে তিনবার লাফিয়ে উঠলো। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এতদসত্ত্বেও তার রশি ছিড়লো না, সেটি সেখানেই থেকে গেলো।
হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার না নিতেন, তাহলে আমি একটা মাত্র তীরেই হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে রফাদফা করে দিতাম। হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এরপর আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে ফিরে আসলাম। তিনি তখন একখানা ইয়ামানী চাদর মুবারক গায়ে জড়িয়ে ছলাত মুবারক আদায় করছিলেন। সেটা ছিলো মারজিল নামক চাদর। সুবহানাল্লাহ! (সীরতে ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি)
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, দমারজিল হচ্ছে ইয়ামানের তৈরি এক প্রকার কারুকার্য খচিত চাদর মুবারক। হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমাকে দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ক্বদম মুবারকের দিকে বসতে বললেন এবং চাদর মুবারকটির এক প্রান্ত আমার উপর ছুঁড়ে দিলেন। আমি তা জড়িয়ে বসে থাকলাম। তিনি পবিত্র রুকু ও সিজদা মুবারক দিয়ে সালাম ফিরালেন। এরপর আমি উনাকে কুরাইশ কাফির মুশরিকদের করুণ পরিণতির খবর জানালাম। দেখা গেলো কুরাইশ কাফির মুশরিকদের কঠিন পরিণতির সংবাদ শুনে গাতফান গোত্রও তাদের দেশে ফিরে গেলো।
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৭)
১০ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৬)
০৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৫)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৪)
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯২)
২২ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯১)
১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯০)
০৮ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৮৮)
২৫ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৮৭)
০৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম কর্তৃক কাট্টা কাফির আমর ইবনে আব্দকে হত্যা:
২৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৮৪)
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












