সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (২)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ০৮ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
هذا حبيب الله مات فى حب الله
অর্থাৎ: ‘ইনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব বা পরম বন্ধু। আর তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে বিছালী শান মুবারক গ্রহন করেছেন।” (তাযকিরাতুল আউলিয়া) তিনি মহান আরশ মুবারক উনার অধিবাসী অর্থাৎ সারাক্ষণ মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার মুবারকে ধন্য।
বিলাদত শরীফ: ৫৩৬ হিজরী, ১৪ই রজবুল হারাম শরীফ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার, পারস্য অর্থাৎ ইরানের সাঞ্জার নামক ভূমিতে তিনি বিলাদতী শান মুবারক গ্রহন করেন। উনার সম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদা হযরত উম্মুল ওয়ারাহ মাহে নূর রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক গ্রহনের সময়ের অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, রাতের অন্ধকার দূর হয়ে দিনের আলোক রশ্মি ধরার বুককে আস্তে আস্তে আলোকিত করতেছিল। আমি অনুভব করলাম আমার সন্তান যমীনে আসার সময় অতি নিকটে। যথারীতি আমি ফযরের নামায আদায় করতঃ শয্যা গ্রহণ করলাম। আর সাথে সাথে দেখতে পেলাম আমাদের মুবারক ঘরে তাশরীফ এনেছেন মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক ওলী-বন্ধু। উনাদের অনেককেই আমি চিনি। আর অনেককে ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি।
উনাদের আগমণকে ঘিরে আমার মনে অনেক প্রশ্নের উদয় হলো। এমন সময় হাতীব (মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম) আমার প্রশ্নের উত্তরে বললেন, হে সম্মানিতা মাতা! আপনার কোল মুবারকে যিনি তাশরীফ আনতে যাচ্ছেন তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব (পরম বন্ধু) রূপে সর্বত্র পরিচিতি লাভ করবেন। কাজেই, উনাকে সালাম, অভিনন্দন ও মুবারকবাদ জানানোর জন্যই এই সব গাউছ, কুতুব, ওলী, আবদাল ও দরবেশগণ উনাদের আগমন ঘটেছে। আর সাথে সাথেই সমস্বরে সবাই বলে উঠলেন, মারহাবা ইয়া কুতুবাল মাশায়িখ! মারহাবা ইয়া হাবীবাল্লাহ!! আমার তন্দ্রা কেটে গেল। দেখতে পেলাম ঘরের মধ্যে কোন লোকজন নেই। সবাই অদৃশ্য হয়ে গেছেন। আর আমার কাঙ্খিত আওলাদও দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক এনেছেন। উনার মুবারক ঠোঁটদ্বয় নড়ছে। তা দেখে আমি উনার মুখ মুবারকে কান লাগালাম। শুনতে পেলাম তিনি নফী-ইছবাত যিকির করছেন। সুবহানাল্লাহ! আমি উনাকে আমার মুবারক কোলে তুলে নিলাম। উনার সমস্ত শরীর মুবারক কস্তুরীর (মৃগনাভী) খুশবুতে ভরপুর হয়ে আছে। এমন দৃশ্য দেখে আমি বিস্ময়াবিভূত হয়ে পড়েছি। আমি কাউকে ডাকতে পারছিনা। আমার মুখ মুবারক দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। আমি নীরব নিথর দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করছি। আর ভাবছি এটাও কি সম্ভব। সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনার এ সমস্ত ঘটনার হিকমত বা রহস্য জানিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, আপনি ভাবছেন, সন্তান ভূমিষ্ট হওয়াকালীন ব্যাথা-বেদনা কোথায়? সন্তান ভূমিষ্টের পর নবজাতকের শরীরে যা থাকে তা কোথায়? আর নাড়িই বা কাটলো কে?
তবে শুনে রাখুন! আপনি যখন তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মনোনীত মহিমাময়ী সম্মানিতা মহিলা দ্বারা আপনার এসব কার্য সম্পন্ন করেছেন। পবিত্র হাউজে কাওছার হতে পানি এনে সে পানি দ্বারা গোসল দিয়ে আপনার সন্তানকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সাইয়্যিদা উম্মুল ওয়ারাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি ইহা শুনে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফে বার বার শুকরিয়া আদায় করতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ! (গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি পূর্ণাঙ্গ জীবনী-৪১)
সম্মানিতা মাতা উনার রেহেম শরীফে
থাকাকালীন অবস্থা মুবারক:
হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাহ উম্মুল ওয়ারাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি বলেন, আমার প্রথম দুজন মুবারক পুত্র সন্তান বিলাদত শরীফ গ্রহনের পর আমরা আহাল ও আহলিয়া উভয়েই তৃতীয় সন্তানের প্রয়োজন অনুভব করতে থাকি। আমার যাওজুল মুকাররাম আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদ গিয়াসুদ্দীন হাসান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন উচ্চ পর্যায়ের আলিম ও ওলীআল্লাহ ছিলেন। যে দিনটিতে আমার তৃতীয় আওলাদ হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক অস্তিত্ব আমার রেহেম শরীফে আগমন ঘটে সে দিনটি ছিলো ইয়াওমুল খমীস বা বৃহস্পতিবার রাত। আমার যাওজুল মুকাররাম প্রতি রাতের মত এ রাতেও পবিত্র ইশার নামায আদায় করে ওযীফা শরীফ ও পবিত্র যিকিরে মশগুল হলেন এবং রাতের তৃতীয় প্রহরে তিনি তাহাজ্জুদ নামায আদায় করলেন। আমিও উনার পাশে থেকেই একইভাবে পবিত্র নামায, ওযীফা শরীফ ও পবিত্র যিকির শেষ করে বিছানা মুবারকে এসে পবিত্র ফজরের নামাযের সময় হওয়ার অপেক্ষা করছি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৩)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বক্ষেত্রে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে নেয়াই ঈমানদারের পরিচয়
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর (২)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বেপর্দা সর্বপ্রকার অনিষ্ট ও ফিতনা-ফাসাদের মূল
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে মুসলমান যে বিজাতীয় সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখবে, তাদের সাথেই তার হাশর নশর হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












