সৌদিতে মহিলা স্বাধীনতার নামে মুসলিম মহিলাদের দ্বীনি অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে
, ১৩ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৪ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৪ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২১ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
অন্য মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “তোমরা (মহিলারা) নিজ গৃহে অবস্থান কর, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের ন্যায় সৌন্দর্য্য প্রদর্শন করে বেরিয়োনা। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: মহাপবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্য পর্দা ফরয করা হয়েছে। একাধিক মহাপবিত্র সূরা শরীফ, মহাপবিত্র আয়াত শরীফ এবং মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে, পর্দা ফরজ হওয়ার বিষয়ে। যা সারা বিশ্বের মুসলমান মাত্রই অবগত রয়েছে। অথচ যে দেশে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন সেই জাজিরাতুল আরব তথা বর্তমান সৌদি আরবে উনার মহাসম্মানিত শান-মান, পবিত্রতা মুবারক রক্ষা না করে, মুসলিম মহিলাদের দ্বীনি অধিকারের তোয়াক্কা না করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম, মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ, মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রকাশ্য বিরুদ্ধাচারণ করা হচ্ছে। মহিলাদের তথাকথিত স্বাধীনতার নামে সম্মানিত দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয়গুলোকে জারী করা হচ্ছে। উৎসাহিত করা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! অশ্লীল-আশালীন বিষয়ে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
পশ্চিমা দেশের অনুকরণে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী সব কার্যকলাপ জারী করা হচ্ছে। মুসলিম মহিলাদের দ্বীনী অধিকার হরণ করা হচ্ছে। কথিত ভিশন-২০৩০ এর অধীনে সৌদি নারীদের এখন গাড়ি চালানো, স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখা, হাজার হাজার পুরুষের মধ্যে কনসার্টে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা নারীরা তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই একা ঘুরতে পারবে এমনকি পৃথক বাড়িতে একা বসবাস করতে পারবে। ২০২০ সালে সংশোধনী আইনে আরও বলা হয়েছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী কোথায় থাকবেন সেটা নির্ধারণ করার অধিকার তার রয়েছে। যদি কারও মেয়ে একা থাকতে চায়, সেক্ষেত্রে তার পরিবার এখন থেকে আর মামলা করতে পারবে না। সরাসরি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবে। এছাড়া চলতি দশক শেষ হওয়ার আগে চাকরিতে নারীদের সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে রাজার।
২০০১ সালে সৌদি নারীদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই পরিচয়পত্র নেয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আগে নারীদের পরিচয়পত্র নিতে হলে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন হতো।
২০০৯ সালে সৌদি রাজা আব্দুল্লাহ কেন্দ্রীয় সরকারে নূরা আল কায়েজকে নারী বিষয়ক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রথম নারী মন্ত্রী নিয়োগ করে।
২০১১ সালে ১৫০ সদস্যের সুরা কাউন্সিলে প্রথমবারের মত নারীদের যুক্ত করার ঘোষণা দেয় রাজা আব্দুল্লাহ।
২০১২ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ গ্রহণ করানো হয় সৌদি নারীদের।
২০১৩ সালে মহিলাদের সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজা সৌদি আরবের মজলিশে ‘শুরা’য় প্রথমবারের মতো ৩০ জন নারীকে শপথ বাক্য পাঠ করায়।
২০১৫ সালে সৌদি আরবের পৌরসভা নির্বাচনে মহিলাদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মত সৌদি আরবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী ধারা সম্বলিত কথিত নারী অধিকারের দিবস; নারী দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ পরিবারের সদস্যরাও যোগ দেয়।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব দেশটির স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারপার্সন হিসেবে সারাহ আল সুহাইমির নাম ঘোষণা করে।
২০১৮ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর সৌদি আরব নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে। এর ফলে নারীদের আর কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয় না এবং স্বতন্ত্র লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে তাদের।
উল্লেখ্য মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী, মহিলারা অতি প্রয়োজন ছাড়া নিজেদের ঘর থেকে বাইরে বের হবে না। যদি তাদের নিতান্ত প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয় তাহলে বড় ও মোটা চাদর দিয়ে নিজেদের শরীর ঢেকে বের হবে। পুরুষ নারীকে দেখবে না এবং নারীও বিনা প্রয়োজনে পুরুষকে দেখবে না। নারীদের কাছে যদি পুরুষদের কোনো জিনিস চাইতে হয় তাহলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। মহিলাদের গায়র মাহরাম (বেগানা) পুরুষের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকে বলবে, কণ্ঠস্বর কঠোর রাখবে, সুমিষ্ট মোলায়েম স্বরে নয়। সাধারণ অবস্থায় মাহরাম পুরুষের সামনেও মুখম-ল হাত এবং পা ছাড়া নিজেদের দেহের অন্য কোনো অঙ্গ খোলা রাখবে না।
অথচ খাদিমুল হারামাইন দাবিদার সৌদি শাসকদের দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ-নিষেধ মুবারকের কোন তোয়াক্কা না করে একের পর এক দ্বীন ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ জারী করা হচ্ছে। মূলতঃ মহিলাদের স্বাধীনতার নামে মুসলিম মহিলাদের দ্বীনি অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমাদের প্রণীত উদ্ভট স্বাধীনতা মুসলিম মহিলাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ায় সমগ্র মুসলিম বিশ্ব মারাত্মক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে।
-উম্মু মুযযাম্মিল
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












