ঘটনা থেকে শিক্ষা
হক্কানী-রব্বানী আলিম উনাদের ফযীলত
, ০৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৫ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৪ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২১ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যারা আলিম হবেন, উলামায়ে হক্কানী-রব্বানী মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত হবেন। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ হবেন, উনাদের জন্য ফযীলত-বুযূর্গী রয়েছে, সম্মান রয়েছে।
যেমন- বলা হয় হযরত ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি ফক্বীহ, ফক্বীহুল উম্মত, যিনি হযরত ইমামে আ’যম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশিষ্ট প্রধান ছাত্র ছিলেন। কাজিউল কুজাত (প্রধান বিচারক) ছিলেন সারা মুসলিম জাহানের। যার উছীলায় হানাফী মাযহাব প্রচার-প্রসার লাভ করেছে। যে দুইজন ব্যক্তির উছীলায় হানাফী মাযহাব প্রচার-প্রসার লাভ করেছে। কিতাব আকারে লিপিবদ্ধ হয়েছে, উনাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন, হযরত ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি। আরেকজন হচ্ছেন ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
কিতাব আকারে লিপিবদ্ধ হয়েছে হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাধ্যমে বেশী। দু’টাই হচ্ছে দু’জনের মাধ্যমে। সেই ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফক্বীহুল উম্মত তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করার সময় অনেক আলিম ওলামা উনার সাথে সাক্ষাত করতে এসেছেন। বিশ্ব বিখ্যাত আলিম-ওলামারা এসেছেন। যারা উনার ছাত্রের অন্তর্ভুক্ত আর কেউ কেউ সমসাময়িক।
একটা মাসয়ালা নিয়ে কিছু চু-চেরা, কিল ও কাল ছিলো। একজন যিনি সমঝদার ফক্বীহ বিশ্ব বিখ্যাত আলিম তিনি প্রবেশ করলেন হযরত আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কামরাতে। তখন উনার বিছাল শরীফ প্রায় নিকটবর্তী তিনি মূমূর্ষ অবস্থায়। সেই আলিম যখন প্রবেশ করলেন, তখন তিনি সেই মাসয়ালাটা আলোচনা করলেন, যে মাসয়ালা নিয়ে একটু চু-চেরা কিল ও কাল ছিলো। যেহেতু উনার সময় শেষ তাই তিনি সেটা বলে যাবেন। তিনি সেই আলিমকে জিজ্ঞাসা করলেন আচ্ছা বলুনতো ওই মাসয়ালাটা যে- “হজ্জে রমি বা কংকর নিক্ষেপ করতে হয়। এই রমি বা কংকর নিক্ষেপ করাটা, সাওয়ারীর উপরে সাওয়ার হয়ে করাটা কি উত্তম হবে? উল্লিখিত আলিম বললেন, পায়ে হেঁটে কংকর নিক্ষেপ করা সুন্নত।
ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনার মাসয়ালা শুদ্ধ হলো না। আলিম তখন বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই বাহনে সাওয়ার হয়ে কংকর নিক্ষেপ করা সুন্নত হবে। তিনি বললেন এটাও শুদ্ধ হলো না। কোনটাই আপনার শুদ্ধ হলো না। তিনি বললেন, হুযূর তাহলে কোনটা শুদ্ধ হবে?
ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন যে, রমির পরে, যে কংকর নিক্ষেপ করার পরে দোয়া রয়েছে, (দোয়া করা সুন্নত) সেটার মধ্যেই হেঁটে করাটাই সুন্নত। আর যে কংকর নিক্ষেপ করার পরে দোয়া করা সুন্নত নয়, সরাসরি চলে আসতে হয়, সেটা বাহনে করে সাওয়ার হয়ে কংকর নিক্ষেপ করাই সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। এ মাসয়ালা তিনি বলে দিলেন, ফায়সালা করে দিলেন। সেই ফক্বীহ সেই আলিম, তিনি বলতেছেন, আমি মাসয়ালা শেষ করেছি। উনার অসুস্থতা দেখে কথা বেশী আর বলা ঠিক হবে না। সেই খেয়াল করে মাত্র ঘর থেকে বের হয়েছি, মাত্র কয়েক কদম গিয়েছি অর্থাৎ দু’চার কদম গিয়েছি, এমন সময় আমি শুনতে পেলাম যে হযরত আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন।
তখন আমি ফিকির করলাম যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে কত সমঝ দিয়েছেন। সুক্ষ্ম বুঝ দিয়েছিলেন। যে এত সমঝ এবং সুক্ষ বুঝ থাকার কারনে মৃত্যুর এত কঠিন সময়েও তিনি সেই সুক্ষ মাসয়ালাটা ফায়সালা করে দিয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!
হাক্বীক্বত উনারাই ছিলেন আলিম, উলামায়ে হক্কানী, উলামায়ে রব্বানী। কাজেই, এত কঠিন সময়েও তিনি মাসয়ালার জবাব দিতে কোন ত্রুটি করেননি এবং কোন গাফলতি হয়নি উনাদের মাধ্যমে। উনারা হকটা ঠিকই পৌঁছে দিয়ে গেছেন। কাজেই যারা উলামায়ে হক্কানী, যারা উলামায়ে রব্বানী উনাদের সেই ফযীলত রয়েছে। যার ফযীলত বর্ণনা করেছেন- পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে। কিছুক্ষণ সময় ইলম অর্জন করা
طلب العلم ساعة خير من ليلة.
সারা রাত্র নামায পড়া থেকে অল্প সময় কিছু ইলম হাছিল করা, তলব করা সেটা আফযল উত্তম। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বলা হয়েছে-
طلب العلم يوما خير من صيام ثلاثة اشهر.
“একদিন কিছু ইলম অর্জন করা, তিন মাস একাধারে রোযা রাখা থেকে উত্তম, আফযল। ” সুবহানাল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












