হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সম্মানিত বিলায়েত মুবারক হচ্ছে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার স্থলবর্তী সম্মানিত নিয়ামত (২)
, ২৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২১ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৫ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ফযীলত বা মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কাল্লামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلَا اِنَّ اَوْلِيَاءَ اللهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَـحْزَنُوْنَ اَلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَكَانُوْا يَتَّقُوْنَ لَـهُمُ الْبُشْرٰى فِي الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِـي الْاٰخِرَةِ ۚ لَا تَبْدِيْلَ لِكَلِمَاتِ اللهِ ۚ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ
অর্থ: “সাবধান! জেনে রাখো, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার যারা ওলী উনাদের কোন ভয় নেই এবং কোন চিন্তা বা পেরেশানীও নেই। উনারাই হচ্ছেন প্রকৃত ঈমানদার এবং প্রকৃত মুত্তাক্বী। উনাদের জন্যেই রয়েছে সুসংবাদ পার্থিব জীবনে এবং পরকালেও। মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালাম বা কথা মুবারক সমূহের কোন পরিবর্তন হয় না। ইহা হচ্ছে ওয়ালিউল্লাহ উনাদের জন্য বিরাট সফলতা। ” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬২, ৬৩, ৬৪)
অপর এক পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِنَّ رَحْـمَتَ اللهِ قَرِيْبٌ مٍّنَ الْمُحْسِنِيْنَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিনীন বা আল্লাহওয়ালা উনাদের নিকটবর্তী। ” (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ عَادَ لِيْ وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার কোন ওলী উনার সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার সাথে জিহাদ ঘোষণা করি। ” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে হযরত ওলী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মর্যাদা সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اَوْلِيَائِىْ تَـحْتَ قَبَائِىْ لَا يَعْرِفُهُمْ غَيْرِىْ اِلَّا اَوْلِيَائِىْ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার ওলীগণ উনারা আমার কুদরতি জুব্বা মুবারক উনার নীচে অবস্থান করে থাকেন। আমি ব্যতীত এবং আমার ওলীগণ ব্যতীত উনাদেরকে কেউই চিনে না। ” (রাহাতুল মুহিব্বীন)
অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, বুযুর্গী-সম্মান কত উর্ধ্বে তা সাধারণের পক্ষে জানা বা অনুধাবন করা কখনোই সম্ভব নয়।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَحِبُّوْا اَوْلِيَاءَ اللهِ فَاِنَّـهُمْ هُمُ الْـمَقْبُوْلُوْنَ وَلَاتَبْغَضُوْهُمْ فَاِنَّـهُمْ هُمُ الْـمَنْصُوْرُوْنَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করো; কেননা উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে কবুলকৃত, আর উনাদেরকে বিদ্বেষ বা শত্রুতা পোষণ করো না; কেননা উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত। ” (কানযুল উম্মাল)
এছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৬৯নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা যে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নিয়ামতপ্রাপ্ত সে বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। যেমন ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِـحِيْنَ ۚ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নাবিয়্যীন আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছিদ্দীক্বীন, হযরত শুহাদা এবং হযরত ছালিহীন উনাদেরকে নিয়ামত দিয়েছেন। ”
স্মরণীয় যে, হযরত নাবিয়্যীন আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা উনাদের প্রথম স্তর আর হযরত ছিদ্দীক্বীন, হযরত শুহাদা এবং হযরত ছলিহীন অর্থাৎ হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হচ্ছেন নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা উনাদের দ্বিতীয় বা পরবর্তী স্তর।
আর পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার মধ্যে নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা উনাদের পথে চলার জন্য বলা হয়েছে। ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ. صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
শুধু তাই নয়, পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ উনার ১৫নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَـيَّ
অর্থ: “যিনি আমার দিকে রুজু হয়েছেন অর্থাৎ যিনি আমার ওলী বা বন্ধু হয়েছেন উনার পথকে অনুসরণ করে চলো। ”
বিশেষ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সকল বান্দা-বান্দীকে উনার ওলী হওয়ার জন্য আদেশ করেছেন। যেমন ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
كُوْنُوْا رَبَّانِيِّيْنَ
অর্থ: “তোমরা সকলেই আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও। ” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৯)
এখন বান্দা-বান্দীকে যদি আল্লাহওয়ালা হতে হয় তাহলে যিনি আল্লাহওয়ালা হয়েছেন উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে উনাকে অনুসরণ করে আল্লাহওয়ালা হওয়ার জন্য কোশেশ করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে আল্লাহওয়ালা হওয়ার জন্য কোশেশ করার তাওফীক দান করুন এবং আল্লাহওয়ালা হিসেবে কবুল করুন। আমীন!
-আল্লামা আবূ খুবাইব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












