হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৯)
, ২৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘আহ্ আলাইহাস সালাম উনার দানশীলতা মুবারক
হযরত ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তারীখে দিমাশক্ব’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-
قَالَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ سَلَمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَكَانَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُعْجِبَةٌ وَكَانَ يَسْتَكْـثِـرُ مِنْهَا وَكَانَتْ اِمْرَاَةً صَالِـحَةً صَوَّامَةً قَوَّامَةً صَنَاعًا تَصَدَّقَ بِذٰلِكَ كُلِّه عَلَى الْمَسَاكِـيْـنَ
অর্থ : সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালুু ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট অত্যন্ত প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেশি বেশি উনার ছানা-ছিফত মুবারক, প্রশংসা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন অত্যন্ত নেককার, অধিক রোযা পালনকারিণী, অনেক বেশি সম্মানিত ছলাত আদায়কারিণী এবং হাতের কাজে অত্যন্ত পারদর্শী। তিনি নিজ নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) কাজ করে উপার্জিত সমস্ত অর্থ ফক্বীর-মিসকীনদেরকে দান করে দিতেন। সুবহানাল্লাহ! (তারীখে দিমাশক্ব ৩/২১২)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
مَا تَرَكَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ سَيِّدَتُنا حَضْرَتْ زَيْنَبُ عَلَيْهَا السَّلَامُ دِرْهَـمًا وَلَا دِيْنَارًا كَانَتْ تَصَدَّقُ بِكُلِّ مَا قَدَرَتْ عَلَيْهِ وَكَانَتْ مَأْوَى الْمَسَاكِـيْـنِ
অর্থ : সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালুু ইয়াদান আলাইহাস সালাম তিনি দিরহাম-দীনার কিছুই রেখে যাননি। কারণ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (হাত মুবারক-এ) যা কিছু আসতো সমস্ত কিছুই তিনি দান করে দিতেন। তিনি ছিলেন ফক্বীর-মিসকীনদের আশ্রয়স্থল। সুবহানাল্লাহ! (আত ত্ববাক্বাতুল কুবরা লি ইবনে সা’দ ৮/১১৪)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
كَانَ عَطَاءُ اُمَّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ زَيْنَبَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اِثْـنَـىْ عَشَرَ اَلْفًا لَـمْ تَأْخُذْهُ اِلَّا عَامًا وَاحِدًا فَجَعَلَتْ تَقُوْلُ اَللّٰهُمَّ لَا يُدْرِكْنِـىْ هٰذَا الْمَالُ مِنْ قَابِلٍ فَاِنَّه فِـتْـنَةٌ ثُـمَّ قَسَّمَتْهُ فِـىْ اَهْلِ رِحْـمِهَا وَفِـىْ اَهْلِ الْـحَاجَةِ فَبَلَغَ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْفَارُوْقَ الْاَعْظَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ هٰذِه اِمْرَاَةٌ يُرَادُ بِـهَا خَـيْـرٌ فَوَقَفَ عَلَيْهَا وَاَرْسَلَ بِالسَّلَامِ وَقَالَ بَلَغَنِـىْ مَا فَرَّقْتِ فَاُرْسِلُ بِاَلْفِ دِرْهَمٍ تَسْتَبِقِيْهَا فَسَلَكَتْ بِه ذٰلِكَ الْمَسْلَكَ
অর্থ : (দ্বিতীয় খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীনআস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালুু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার জন্য বাৎসরিক ১২ হাজার দিরহাম ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু তিনি কখনও তা গ্রহণ করেননি। একবার তিনি তা গ্রহণ করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দু‘আ মুবারক করেন,
اَللّٰهُمَّ لَا يُدْرِكْنِـىْ هٰذَا الْمَالُ مِنْ قَابِلٍ فَاِنَّه فِـتْـنَةٌ
‘আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আগামীতে এই সম্পদ যেন আমাকে আর না পায়। এই সম্পদ হচ্ছে মানুষের জন্য পরীক্ষা। ’ তারপর তিনি দিরহামগুলো আত্মীয়-স্বজন ও গরীব-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দেন। সুবহানাল্লাহ! এই সংবাদ মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট পৌঁছলে তিনি বলেন,
هٰذِه اِمْرَاَةٌ يُرَادُ بِـهَا خَـيْـرٌ
‘তিনি এমন একজন সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যে, উনার থেকে শুধু খায়ের-বরকতই আশা করা যায়। ’ সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীনআস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালুু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনি যে দিরহামসমূহ দান করে দিয়েছেন তা জেনে উনার খিদমত মুবারক-এ সালাম পেশ করে বললেন, আপনি যে সমস্ত সম্পদ বণ্টন করে দিয়েছেন, সেই সংবাদ মুবারক আমার কাছে পৌঁছেছে। তারপর তিনি উনার খিদমত মুবারক-এ এক হাজার দিরহাম পাঠান উনার নিকট রাখার জন্য। তিনি সেগুলিও পূর্বের ন্যায় দান করে দেন। সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী ৪/৪১৫, কাওছারুল মা‘আনী ১১/৭১, ফাতুহুল মুন‘ইম ৯/৪২২, তাখরীজু আহাদীছি ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন ৩/১৫২১, আল ইছাবাহ্ ৭/৬৬৯ ইত্যাদি)
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












