মহিলা ছাহাবী উনাদের জীবনী মুবারক:
হযরত খাওলা বিনতে ছা’লাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (২)
, ২৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২১ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তবে একাধারে দুই মাস রোযা রাখতে বলুন। হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন, তিনি তো বৃদ্ধ ও দুর্বল। দিনে বহুবার পানি পান করেন, কাজেই উনার ঐরূপ শক্তি নাই।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তাহলে ৬০ জন মিসকিনকে আহার করাতে বলুন। হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন, এই সামর্থ্যও উনার নেই। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছু খেজুরের ব্যবস্থা করলেন এবং হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বাকি খেজুরের ব্যবস্থা করে ৬০ জন মিসকিনকে ছদকা করে দিলেন। এভাবে উনাদের দাম্পত্য সম্পর্ক পূর্বের মত বহাল রইলো। এই ঘটনার পর হতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার বিশেষত্ব অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। নেতৃস্থানীয় ছাহাবীগণও উনাকে খুবই সম্মানের চোখে দেখতেন। আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত আমলে একবার তিনি লোকজন নিয়ে বের হলেন। পথিমধ্যে হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সাক্ষাত পেলেন। তিনি তখন বার্ধক্যে উপনীত হয়েছিলেন। আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে পেয়ে হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন আলাইহিস সালাম! এমন এক সময় ছিল যে, আমি আপনাকে উকাজের বাজারে দেখতে পেয়েছিলাম। তখন আপনাকে সকলে উমাইর বলত। হাতে লাঠি নিয়ে ছাগল চরাতেন। তারপর কিছুদিন যেতে না যেতেই লোকেরা আপনাকে উমর বলতে শুরু করল। আর কিছুদিন পরে আপনাকে আমীরুল মু’মিনীন বলা হতে লাগল। আমি বলি, প্রজা সাধারণের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে চলবেন। স্মরণ রাখবেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার অভিশাপকে ভয় করে, তার জন্য দূরের লোকও নিকট আত্মীয়ের মত হয়ে যায়। আর যে মৃত্যুকে ভয় করে, তার সম্পর্কে আশঙ্কা হয়, সে যে জিনিষকে রক্ষা করতে চায়, তা হয়ত সে হারিয়ে ফেলবে। আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাওলা বিনতে ছা’লাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার দীর্ঘ আলাপচারিতায় অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার ফলে জারুদ আল-আবদী নামে এক ব্যক্তি অধৈর্য হয়ে বললো, আমীরুল মু’মিনীন! আপনি এহেন এক বৃদ্ধার কারণে লোকজনকে আটকে রেখেছেন! আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম বললেন, তোমার ধ্বংস হোক! তুমি জানো ইনি কে? ইনি সেই মহিয়সী মহিলা ছাহাবী হযরত খাওলা বিনতু ছা’লাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি সপ্ত আকাশের উপর হতে যার অভিযোগ শ্রবণ করেছিলেন। উনার সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই আয়াত শরীফ নাযিল করেছিলেন, বলে তিনি আয়াত শরীফখানা তিলাওয়াত করলেন-
قَدْ سَمِعَ اللَّهُ قَوْلَ الَّتِي تُجَادِلُكَ فِي زَوْجِهَا ..... وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
অতঃপর তিনি বললেন, আর আমি কি উনার কথা শ্রবণ করবো না? মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! তিনি যদি রাত্রি পর্যন্তও আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখেন তবু আমি কেবল নামাযের জন্য ছাড়া উনার নিকট হতে পৃথক হবো না। নামায শেষে আবার উনার নিকট ফিরে আসবো। (ইছাবা)
হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ইনতিকালের সঠিক তারিখ জানা যায় না। তবে বিভিন্ন ঘটনা দ্বারা জানা যায় যে, তিনি হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আমলের বেশির ভাগ সময় জীবিত ছিলেন এবং এ সময়কালেই ইনতিকাল করেছেন। (তবাকাত, উসুদুল গাবা, ইছাবা)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনভী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












