হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দাঁতভাঙ্গা জাওয়াব-২
, ২৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১২ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা
এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমমর্যাদা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যুগের কোন উম্মতই লাভ করতে পারেনি এবং পারবেও না। কেননা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট কালামুল্লাহ শরীফ অধ্যায়ন করেন। উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক পরবর্তী উম্মতের জন্য মনোনীত হয়েছেন আদর্শ পথপ্রদর্শক এবং সত্যের মানদ-রূপে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের উনারাই প্রথম সূত্র। পরবর্তী উম্মত পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যা, ভাষ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিচয় মুবারক, ইলিম মুবারক, পবিত্র আদর্শ মুবারক দ্বীন ইসলামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উনাদেরই মাধ্যমে লাভ করেছেন। সুতরাং প্রতিষ্ঠিত ঐক্যমত উপেক্ষা করা বা এর স্বকীয়তা বিনষ্ট করার অর্থই হলো ঈমান ও ইসলাম থেকে খারিজ হওয়া।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ, যাঁরা ঈমান আনয়নে অগ্রবর্তীর মধ্যে অগ্রগণ্য, উনারা এবং উনাদেরকে যাঁরা (ক্বিয়ামত পর্যন্ত) উত্তমভাবে অনুসরণ করবেন, উনাদের উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট এবং উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সন্তুষ্ট। উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি এরূপ বেহেশ্ত নির্ধারণ করে রেখেছেন, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণা প্রবাহিত হতে থাকবে, উনারা সর্বদা সেই বেহেশ্তে অবস্থান করবেন, এটা উনাদের জন্য বিরাট সফলতা।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-১০০)
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার পরে আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের ইখতিলাফ (মতবিরোধ) সম্পর্কে আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে জিজ্ঞাসা করেছি।” মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে জানালেন, “আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আপনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আমার নিকট তারকা সমতুল্য। কারো আলোর চেয়ে কারো আলো বেশী, তবে প্রত্যেকেরই আলো আছে। সুতরাং উনাদের যে কাউকে যারা আঁকড়ে ধরবে বা অনুসরণ করবে তারা হিদায়েত পেয়ে যাবে। কারণ উনাদের ইখতিলাফগুলো আমার নিকট হিদায়েত হিসেবে গণ্য।” অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা প্রত্যেকেই তারকা সাদৃশ্য। উনাদের যে কাউকে তোমরা অনুসরণ করবে, হিদায়েত প্রাপ্ত হবে।” (মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস সুন্নাহ, মিরকাত শরীফ)
অর্থাৎ উনাদের যে কাউকে যে কোন ব্যক্তি যে কোন বিষয়ে অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি সে বিষয়েই হিদায়েত লাভ করবে বা হিদায়েতের উপর থাকবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রতি (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি), সন্তুষ্ট আর উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট। (পবিত্র সূরা বাইয়্যিনাহ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-০৮)
অতএব, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও সন্তুষ্ট, উনাদের পথ ও মত অনুসরণকারীরাও নাজাতপ্রাপ্ত, উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি অগাধ জ্ঞানের অধিকারী করেছেন, উনাদের যুগকে সর্বোত্তম যুগ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, উনাদের অকল্পনীয় ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে পরবর্তী উম্মত সহজেই পরিপূর্ণ দ্বীন ইসলাম পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
বর্তমানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের শান-মান মুবারক সম্পর্কে অধিকাংশই বেখবর। অনেকে উনাদের বিরোধিতা ও সমালোচনা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যারা উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে, উনাদের বিরোধিতা ও সমালোচনা করে, উনাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়, উপরন্তু উনাদেরকে নাক্বিছ ও অপূর্ণ বলে আত্মতৃপ্তি লাভ করে থাকে এরা সকলেই লা’নতগ্রস্ত বা মালঊন ও চির জাহান্নামী। নাউযুবিল্লাহ! (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












