হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব-৪
, ১৮ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমমর্যাদা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যুগের কোন উম্মতই লাভ করতে পারবে না। কেননা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট কালামুল্লাহ শরীফ অধ্যায়ন করেন। উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক পরবর্তী উম্মতের জন্য মনোনীত এবং ঘোষিত হয়েছেন আদর্শ পথপ্রদর্শক এবং সত্যের মানদ-রূপে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের উনারাই প্রথম সূত্র। পরবর্তী উম্মত পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যা, ভাষ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিচয় মুবারক, ইলিম মুবারক, পবিত্র আদর্শ মুবারক দ্বীন ইসলামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উনাদেরই মাধ্যমে লাভ করেছেন। সুতরাং, প্রতিষ্ঠিত ঐক্যমত উপেক্ষা করা বা এর স্বকীয়তা বিনষ্ট করার অর্থই হলো ঈমান ও ইসলাম থেকে খারিজ হওয়া।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সর্বক্ষত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ অনুকরণ করতেন, নিম্নে তার আরো কিছু প্রমাণ পেশ করা হলো-
(১) রোম শাসক একবার তার এক দূতকে পাঠালো মদীনা শরীফে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাত করার জন্য। দূত সাক্ষাত করে ফিরে গিয়ে বললো, হে শাসক! উনারা এমন এক জাতি, যাঁদের সাথে যুদ্ধ করে কখনো জয়লাভ করা সম্ভব নয়। কারণ উনারা উনাদের সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কল্পণাতীতভাবে অনুসরণ-অনুকরণ, তা’যীম-তাকরীম করেন। উনাদেরকে যদি বলা হয় আগুনে ঝাপ দেয়ার জন্য, উনারা তৎক্ষণাৎ আগুনে ঝাপ দেয়ার জন্য প্রস্তুত। সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুখ মুবারক থেকে নূরুল বারাকাত (থুথু) মুবারক ফেলার সাথে উনারা খেয়ে ফেলেন। ওযূ’র কুলি করা পানি মাটিতে পড়ার পূর্বেই সেটাকে শরীরে মেখে ফেলেন। সুবহানাল্লাহ!
(২) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর একদিন এক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হঠাৎ করে মাথা নিচু করে দিলেন। উনার সঙ্গী-সাথীগণ বললেন, হুযূর! আপনি মাথা নিচু করলেন কেন? এখানে মাথা নিচু করার তো কোন কারণ দেখছি না। তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এ রাস্তা দিয়ে একদিন সফরে যাচ্ছিলাম। সফরে যাওয়ার পথে ঠিক এ জায়গায় একটি গাছ ছিল, গাছের একটি ডালা নিচু হয়ে রাস্তার উপর দিয়ে গিয়েছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মুবারকের সাথে ডালাটি লাগার সম্ভাবনা থাকায় তিনি মাথা মুবারক নিচু করে ডালাটি অতিক্রম করেছিলেন। যদিও এখন সেই ডালাটি নেই, তথাপি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণের লক্ষ্যে আমি আমার মাথা নিচু করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ!
(৩) হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি প্রথমে কদু খাওয়া পছন্দ করতেন না। একদিন তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এক দর্জি ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়ীতে দাওয়াত খেতে গেলেন। সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে এক পেয়ালা কদু মিশ্রিত গোশ্তের তরকারী দেয়া হলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই পেয়ালা হতে কদুর টুকরোগুলো বেছে বেছে খাচ্ছিলেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এভাবে কদু খেতে দেখে তখন থেকে কদুর প্রতি আমার মুহব্বত পয়দা হয়ে গেল। আমি জীবনে যতদিন হায়াত পেয়েছি, সবসময় কদু খাওয়ার চেষ্টা করতাম। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












