সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
, ১৪ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জীবনী মুবারকে আমরা দেখতে পাই, উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হিসেবে পেয়ে উনার পরিপূর্ণ অনুসরণ করার মাধ্যমে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মতের পরিচয় দিয়েছেন। উনারা খাওয়া-পরা, সংসার, কাপড়-চোপড়, বিলাসিতা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না, বরং প্রতিটি মুহূর্তে সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। উনাদের জান-মাল, আল-আওলাদ সমস্ত কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় বিলীন করে দিয়ে আমাদের জন্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন। যা উনাদের আমলের মাধ্যমেই ফুঁটে উঠতো। সুবহানাল্লাহ!
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার জন্য জিহাদ করাকে সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে প্রাধান্য দিতেন। নিজেদের ব্যক্তিগত চাহিদা বা দুনিয়াবী বিলাসিতাকে উনারা কখনই প্রাধান্য দিতেন না। যার কারণে দেখা যায়, সবকিছু উনাদের অনুকূলে থাকা সত্ত্বেও উনারা অনেক সময় না খেয়েও জিহাদ করেছেন। উনারা কখনো হালাল কামাইয়ের অযুহাত দিয়ে কাফের-মুশরিক, ফাসেক-ফুজ্জারদের গোলামীর মাধ্যমে উপার্জন করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া দেননি বা নেক কাজে শরীক থাকেননি।
এমনকি উনারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিশীল। উনাদের মাঝে কেউ যদি কারো গোলাম থাকতেন তাহলে অপরজন উনাকে কিনে আযাদ করে নিতেন, যেন তিনি মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম সঠিকভাবে পালন করতে পারেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, উনারা নিজের থেকে অন্যকে অধিক প্রাধান্য দিতেন। যেমন ইয়ারমুকের জিহাদ চলাকালীন এক সময়ে, হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি সৈন্য উনাদেরকে একথা বললেন, “আপনাদের মধ্যে কে আছেন যে, সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার উপর বাইয়াত গ্রহণ করবেন?” উনার সম্মানিত আহবান মুবারকে সাড়া দিলেন উনার চাচা হারিস ইবনে হিশাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু, হযরত দিরার ইবনে আযওয়ার রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু এবং আরো চারশত মুসলিম সৈনিক। উনারা তুমুলভাবে জিহাদ করে খ্রিষ্টানদেরকে কচুকাটা করে দিলেন। এই ইয়ারমুকের ময়দানেই আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেল হযরত হারিস ইবনে হিশাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু, হযরত আইয়্যাশ ইবনে আবী রবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু এবং হযরত ইকরামা ইবনে আবূ জাহেল রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনাদেরকে। হযরত হারিস ইবনে হিশাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি পানি চাইলেন। যখন উনাকে পানি দেওয়া হলো, হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি তখন উনার দিকে তাকালেন। হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার চাহনী দেখে হযরত হারিস ইবনে হিশাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি পানি পান না করে বললেন, “হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনাকে পানি দিন। ” পানির পাত্রটি যখন হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার নিকট নিয়ে যাওয়া হলো তখন হযরত আইয়্যাশ ইবনে আবী রবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি উনার দিকে তাকালেন। তা দেখে হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনি বললেন, “হযরত আইয়্যাশ ইবনে আবী রবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনাকে পানি দিন। " হযরত আইয়্যাশ ইবনে আবী রবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার কাছে যখন পানির পাত্রটি নিয়ে যাওয়া হলো, দেখা গেল, তিনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। অত;পর পানির পাত্রটি হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার কাছে নিয়ে যাওয়া হলে, দেখা গেল, হযরত ইকরামা । রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু তিনিও পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ । করেছেন। অত:পর হযরত হারিস ইবনে হিশাম রদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু উনার নিকট পানির পাত্রটি নিয়ে গিয়ে দেখা গেল তিনিও পবিত্র শাহাদ শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কত সুমহান ছিল উনাদের কাজ মুবারক! আর এ সমস্ত মহান কাজের মাধ্যমেই উনারা শান্তি পেতেন। আর এর বিপরীত বিষয়গুলো ছিল উনাদের নিকট ঘৃণ্য, অপছন্দনীয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












