হালাল হারামের কথা-১৩
, ১০ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
৩ হালাল ও হারাম খাদ্য উপাদানের তালিকা
কোন মুসলিম দেশ থেকে কোন খাবার ইমপোর্ট হয়ে আসলেই তা হালাল নয়। কারণ বিভিন্ন কাফেরের দেশ থেকে বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান যাচ্ছে যেগুলো ভালভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। ফলে খাবারের উপাদানগুলো সম্পর্কে কিছুটা হলেও তথ্য থাকা প্রয়োজন যদিও সকলের জন্য এ বিষয়ে অবগত হওয়া খুব কঠিন।
নীচে কয়েকটি উপাদানের নাম ও তথ্য প্রদান করা হোল যেগুলো নিয়ে বেশী সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
বেকন (Bacon) :শুকোরের গোস্তের একটি অংশ । হারাম
কোলেস্টেরলঃ এক ধরণের ফ্যাট এবং সবসময় প্রানীজ উৎস থেকেই হয়। কেবল হালালভাবে যবেহকৃত প্রাণীর হলে খাওয়ার উপযুক্ত হবে। সাধারণভাবে হারাম।
ডাইগ্লিসারাইড(Diglyceride): এক ধরণের ইমালসিফায়ার। প্রানীজ উৎস হলে নিশ্চিত হওয়া দরকার। সাধারণভাবে হারাম।
জিলাটিন (Gelatin, Jello Gelatin): অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রানীজ উৎস এবং শুকোর। কোলাজেন থেকে তৈরি হলেও জিলাটিনের মধ্যে মূল বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকে না বলে হালাল তবে নিশ্চিত শুকোরের উৎস হলে গ্রহন করা তাকওয়ার খেলাপ। যবেহকৃত হালাল প্রাণীর উৎস হলে নিশ্চিতভাবে হালাল ।
গ্লিসারল (Glycerol, Glycerine): এটি প্রাণীর থেকেও হয় ভেষজ থেকেও হয়। প্রাণীর উৎসগুলো যথেস্ট সন্দেহজনক এবং ব্যবহার করা তাকওয়ার খিলাপ। তবে ভেষজ উৎসের গ্লিসারিন বাজারে পাওয়া যায়।
হরমোন (Hormones): সাধারণত যে হরমোনগুলো মানুষ ওষুধ হিসেবে গ্রহন করে তা সংগ্রহিত হয় প্রানী থেকে। হরমোন সয়া (ঝড়ুধ) এবং মেটে আলু বা গাছ আলু (ণধস) থেকেও সংগ্রহ করা হয় তবে প্রাকৃতিক উৎস হলেই তা সবসময় নিরাপদ নয়। আবার সিনথেটিক হরমোনও তৈরি করা হয়। হালাল আর নিরাপদের বিবেচনায় এখন পর্যন্ত সিনথেটিক হরমোনে ভাল ফল পাওয়া গেছে। তবে এটি চেনা খুব দুরহ কোনটি হালাল উৎসের আর কোনটি হারাম উৎসের। এ নিয়ে বিস্তারিত লেখা প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
লারড ( Lard): লারড এক ধরণের ফ্যাট যা শুকোরের পাকস্থলীতে পাওয়া যায়। মুসলমানদের জন্য হারাম।
ম্যাগনেসিয়াম স্টিয়ারেট (Magnesium Stearate, stearic acid): ওষুধ শিল্পে বিশেষভাবে ট্যাবলেট তৈরিতে প্রয়োজন হয়। হারাম প্রানী থেকে হলে হারাম হবে বলে বলা হচ্ছে , তবে মলিকুলার মডিফিকেশন হলে হারাম হবে না।
গড়হড় এষুপবৎরফব (মনো গ্লিসারাইড): যখন প্রানীর উৎস থেকে নেয়া হবে তখন হারাম আর উদ্ভিজ উৎস হলে হালাল।
পেপসিন (Pepsin):এক ধরণের ডাইজেস্টিভ এনজাইম যা শুকোরের পাকস্থলীতে পাওয়া যায়। বাজারের অধিকাংশ পেপসিন শুকোর থেকে। হারাম
রেনিন জবহহরহ (Rennet): এক ধরণের প্রোটিন এনজাইম সাধারণত বিদেশী পনিরে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুকোরের উৎস থেকে হয়। খাওয়া হারাম।
শরটেনিং (Shortening) : প্রাণীর উৎস থেকে নেয়া ফ্যাট ও তেল। সাধারণত শুকোরের উৎস থেকে নেয়া ।
ভ্যানিলা (Vanilla): সাধারণত বাজারে পাওয়া যায় ভ্যানিলিন যা কৃত্তিমভাবে প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তুতের সময় এলকোহলের ব্যবহার হলেও পরে তা মূল উপাদানে থাকে না। কিন্তু ভ্যানিলা ফল থেকে সংগ্রহ করা ফ্লেভারে এলকোহল থাকে এবং সেগুলির দামও অনেক বেশী কারণ এলকোহল দ্বারা এক্সট্রাকশন করা হয়। ভ্যানিলিন পাউডার হালাল আবার এর দ্বারা তৈরি তরল ফ্লেভারেও "এলকোহল মুক্ত" লেখা থাকে। বাজারে হালাল ভ্যানিলিন বেশী পাওয়া যায় কারণ সেটি সস্তা।
ভিটামিন(Vitamins):প্রানীজ উৎস হলে হারাম হবে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয় সিনথেটিক অথবা ভেষজ উৎস যা হালাল। তবে কিছু ভিটামিন ব্যক্টেরিয়া কালচার থেকে হয় সেগুলো হারাম হবে যেমন রিবোফ্লেভিন।
ছানার পানি (Whey): ক্রীম ও দইতে ব্যবহার করা হয়। প্রাণীর উৎস হলে হারাম হবে।
ট্রায়াসেটিন (Triacetin-1518) এটি একটি ক্যামিক্যাল কম্পাউন্ড যা খাদ্যে ব্যবহৃত হয়। ওষুধ শিল্পে প্লাস্টিসাইযার হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে। এটি হালাল হিসেবেই বিবেচ্য।
ট্রিপ্টোফেন (Tryptophan) এটি একটি প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড এবং হালাল।
ইউরিক এসিড (Uric Acid) –সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের অসুখে সাধারনত ইউরিক এসিড ব্যবহার হয় । সিনথেটিক ইউরিক এসিড হালাল ।
ভ্যানিলা এক্সট্রাক্ট (Vanilla Extract) ভ্যানিলা এক্সট্রাক্ট করা হয় ইথানলের সাহায্যে ফলে ফলে তা হারাম। তবে বাজারে হালাল ভ্যানিলা ফ্লেভার পাউডার ও তরল অবস্থায় পাওয়া যায়।
ভিটামিনস (Vitamins) প্রানী থেকে নেয়া হলে হারাম হবে। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সিন্থেটিক এবং উদ্ভিদ থেকে নেয়া হয়। তবে ভেড়ার লোমে থাকা লেনোলিন থেকে ভিটামিন ডি-৩ সংগ্রহকরা হয়।
ডধীবং –মোম আসে প্রানী থেকে যেমন তিমি মাছের তেল, ভেড়ার উলের গ্রীজ। আসে বিভিন্ন পোকা থেকে। আসে মৌমাছি এবংবিভিন্ন গাছ থেকে । মৌমাছি এবং বিভিন্ন গাছ থেকে সংগ্রহ করা মোম ব্যবহার জায়িয। কিন্তু প্রাণীরগুলো মানুষের প্রয়োজন ছাড়া অন্যত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন তিমি মাছের তেল মেশিনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












