হালাল হারামের কথা-২
, ০৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ই -কোডের (ঊ-ঈড়ফব) কথা
ইউরোপসহ পাশ্চাত্যের সব দেশে গোশতের প্রধান উৎস হচ্ছে শূকর। এই প্রানীর প্রজন্মের জন্য রয়েছে অনেক ফার্ম। কেবল ফ্রান্সেই আছে ৪২০০০ ফার্ম। এই প্রাণীটির গায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণ চর্বি। কিন্তু বেশী চর্বি শরীরের জন্য ভাল নয় বলে ইউরোপীয়ান এবং আমেরিকানরা এই চর্বি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।
কিন্তু এই চর্বি কোথায় যাবে? এই প্রাণীগুলো আবার সরকারের নিয়ন্ত্রণেই মারা হয়। ফলে সরকারের জন্য এই চর্বি ফেলে দেয়া এক মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রায় ৬০ বছর আগে এসব চর্বি পুড়িয়ে ফেলা হতো পরে এগুলো সাবান বানানোতে ব্যবহার হতে থাকে।
পরবর্তীতে ব্যবসার নতুন এক ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়। এই চর্বিগুলো রাসায়নিক উপাদান দ্বারা প্রক্রিয়াজাত করে, প্যাকেটে ভরে বিপণনের ব্যবস্থা করা হয়। অন্য এক কোম্পানী কিনে নিয়ে বিক্রি করা শুরু করে।
এরই মধ্যে ইউরোপে নতুন আইন চালু হয় যেন সকল খাদ্য, ওষুধ, ব্যক্তিগত ব্যবহারের সকল প্রোডাক্টের মোড়কে সব উপাদানের নাম উল্লেখ করা থাকে। ফলে লেখা হতে থাকে "চরম ঋধঃ" বা শূয়রের চর্বি। চল্লিশ বছর আগে যারা ইউরোপ গিয়েছেন তাদের এই বিষয়টি জানা আছে। কিন্তু সকল মুসলিম দেশ তখন এ সকল প্রোডাক্টের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। ফলে দেখা দেয় ব্যবসার মধ্যে মন্দা।
১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের কথা আমাদের জানা আছে। তখন রাইফেলের বুলেট তৈরি হত ইউরোপে আর সমুদ্র পথে তা ভারতবর্ষে আসতো। কিন্তু সাগর পথে বুলেট আসতে মাসের পর মাস সময় লাগতো তা ছাড়া বন্দুকের বারুদ সমুদ্রের আবহাওয়াতে নষ্ট হয়ে যেত বলে এই প্রানীর চর্বি দিয়ে প্রলেপ দেয়া হত। কিন্তু বুলেট ব্যবহারের পূর্বে দাঁত দিয়ে কামড়ে এই চর্বির আবরণ ছিঁড়ে ফেলতে হতো। যখন এ কথা প্রচার হয়ে যায় তখন মুসলমান সৈনিকগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়, যা পরিনামে গৃহযুদ্ধ ডেকে নিয়ে আসে। ইউরোপিয়ানদের এই ইতিহাস জানা আছে। তাই তারা "চরম ঋধঃ" লেখা বন্ধ করে দিয়ে "অহরসধষ ঋধঃ" বা প্রানীর চর্বি লেখা শুরু করলো। পরবর্তীতে তাদের যখন প্রশ্ন করা হত কোন প্রানীর চর্বি তখন বলা শুরু করলো গরু, ভেড়া ইত্যাদি। তখন মুসলমান উনারা হালাল উপায়ে যবেহ না বলে আবারো ইউরোপিয়ানদের পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করে দিলে কাফিররা নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করে। কারণ মুসলিম দেশ থেকে তাদের আয়ের প্রায় ৭৫ ভাগ আসতো।
তারপর থেকে সরাসরি উপাদানের নাম না লিখে ই-কোড ব্যবহার শুরু হয়। টুথপেস্ট, চকলেট, ক্যান্ডি, চুইং গাম, মিষ্টি, বিস্কিট, কর্ণ ফ্লেক্স, টফি, ক্যান জাতীয় দ্রব্য, ইত্তাদিতে ই-কোড লেখা হতে থাকে। তাহলে আমাদের এই ই-কোড সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন ইউরোপীয়রা উপাদান লিখতে ই-কোড ব্যবহার করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনও উপাদানের নাম লেখা হয়।
নীচের লেখা থেকে ধারণা পাবেন কোন নাম্বার গুলো কি উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়।
E100–E199 (রং এর কাজে ব্যবহার হয়)
E200–E299 (প্রিজারভেটিভ হিসেবে ব্যবহার হয়)
E300–E399 (এন্টিওক্সিডেন্ট এবং এসিডিটি রেগূলেটর হিসেবে ব্যবহার হয়)
E400–E499 (ঘন, দীর্ঘস্থায়ী ও ইমালসিফায়ার হিসেবে ব্যবহার হয়)
E500–E599 (এসিডিটি রেগূলেটর এবং এন্টি কেইকিং এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার হয়)
E600–E699 (সুগন্ধি দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার হয়)
E700–E799 (এন্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহার হয়)
E900–E999 (চকলেট, মিষ্টির চকচকে ভাব আনার জন্য ব্যবহার হয়)
E1000–E1599 (বাড়তি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












