হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-৩৫)
, ১৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
وقرن فى بيوتكن
“আপনারা ঘরে অবস্থান মুবারক করুন, ঘর থেকে সাধারণতঃ বের হবেন না।”
মহান আল্লাহ্ পাক তিনি মহিলাদেরকে ঘরে অবস্থান করতে বলেছেন। কেন? পবিত্র হাদীছ শরীফে এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে-
عن ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم المرأة عورة فاذا خرجت استثرفها الشيطان
“হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মেয়েরা পর্দায় থাকবে। যখনই তারা ঘর থেকে বের হয় তখনই শয়তান তাদের পিছনে উঁকি-ঝুঁকি দিতে থাকে। কি করে তাদের দ্বারা পাপ কাজ করানো যেতে পারে।”
সেটাই বলা হয়েছে, আপনারা ঘরে আবদ্ধ হয়ে থাকবেন, যাতে শয়তান কোনরূপ সুযোগ না পায়।
এরপর মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেছেন, যদি অগত্যা প্রয়োজন হয় বের হওয়ার তাহলে এমনভাবে বের হবেন যাতে কোন সৌন্দর্য প্রকাশ না পায়।
ولا تبرجن تبرج الجاهلية الاولى
“আইয়্যামে জাহিলিয়াতের সময় মহিলারা যেমন সৌন্দর্য প্রকাশ করে রাস্তায় ঘুরে বেড়াত সেভাবে আপনারা বের হবেন না। যদি দরকার হয় তাহলে বের হবেন। কিন্তু পর্দা করে বের হতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
عن حضرت عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الدنيا كلها متاع وخير متاع الدنيا المرأة الصالحة.
“হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে দেখ, “দুনিয়ায় যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুই সম্পদ। তবে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে দুনিয়ার মধ্যে নেককার আহলিয়া বা স্ত্রী। দুনিয়ার মধ্যে সবচাইতে উত্তম এবং শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছে উত্তম নেককার মহিলা, যারা পর্দার সহিত থাকবে। তারাই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবে।”
পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لعن الله الناظر والمنظور اليه
“যে দেখে এবং যে দেখায় উভয়ের প্রতি মহান আল্লাহ্ পাক উনার তরফ থেকে লা’নত। যে দেখবে এবং যে দেখাবে উভয়েই লা’নতগ্রস্ত হয়ে যাবে।”
সেটাই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেন, “আপনারা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়াবেন না। যেমন আইয়ামে জাহিলিয়াতের সময় মহিলারা বেড়াত।” মহান আল্লাহ্ পাক তিনি অপ্রয়োজনে চলাচল নিষেধ করে দিয়েছেন পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে। পরবর্তীতে বলা হয়েছে যে, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফরে যখন যেতেন তখন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্য থেকে একজন করে সাথে নিয়ে যেতেন। তাতে বুঝা যাচ্ছে, চলাচল করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে যেটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেটা হচ্ছে, অপ্রয়োজনীয় চলাচল করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবং আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করলেন তখন দুইজন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনারা কখনও জীবনে ঘর থেকে বের হননি। একজন হচ্ছেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। আর দ্বিতীয়জন হচ্ছেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি’য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। এই দুইজন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনারা কখনও আর ঘর থেকে বের হননি। কোন কাজেই উনারা বের হননি। সবসময় উনারা হুজরা শরীফে অবস্থান মুবারক করেছিলেন। কিন্তু অন্যান্য হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, বিশেষ করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ও অন্যান্য যাঁরা বিশেষ রয়েছেন, উনারা হজ্জও করেছেন, উমরাহ্ও করেছেন, জরুরতে বেরও হয়েছেন।
যার কারণে পরবর্তীতে যারা মুহাক্কিক, মুদাক্কিক, ফক্বীহ, মুজতাহিদ ও ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ফতওয়া দিয়েছেন, “মেয়েরা ঘর থেকে বিনা প্রয়োজনে বের হতে পারবেনা। সেটা নাজায়িয, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নেহায়েত প্রয়োজনে যদি হয়, যেটা তার দ্বীনী কাজে অর্থাৎ ইলিম অর্জনের জন্য হয় বা তার পিতা-মাতার সাক্ষাতেরজন্য হয়, অথবা নেহায়েত জরুরতে যদি হয় তাহলে সে বের হতে পারবে। কিন্তু যেটা তার জন্য জরুরত নয়, প্রয়োজনীয় নয়, সে সমস্ত কাজে বের হতে পারবে না। সেটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বের হলেই সেটা তার পর্দার খিলাফ হবে। অর্থাৎ সেটা পর্দার খিলাফ বলেই গণ্য হবে। যদি অপ্রয়োজনে, বিনা প্রয়োজনে কোন মহিলা ঘর থেকে বের হয়, সেটা বেপর্দারই অন্তর্ভুক্ত বলে সাব্যস্ত হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












