হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-১৯)
, ২৮শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২২ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ
“আল্লাহ তায়ালা বলেন, (তারা যেন এমনভাবে পদচারণা না করে যাতে তাদের চুপানো সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে পড়ে)। জাহিলিয়াত যুগে মহিলারা যখন রাস্তায় চলতো, তখন যমীনের উপর সজোরে পা ফেলতো যাতে পায়ের নুপুর বেজে উঠে। আর পুরুষেরা তা শুনতে পেতো। মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিন মহিলাগণকে তাদের অনুরূপ করতে নিষেধ করেন। অনুরূপভাবে যে সৌন্দর্য লুকানো তা তারা প্রকাশ করার জন্য সজোরে চলতো এ বিষয়টি আয়াত শরীফে নিষেধ করা হয়েছে যে, (তারা যেন এমনভাবে পদচারণা না করে যাতে তাদের চুপানো সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে পড়ে)। এ আয়াত শরীফের ভিত্তিতে মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার সময় আতর, সুগন্ধি মেখে বের হওয়া নিষেধ তথা হারাম করা হয়েছে। যাতে পুরুষেরা ঘ্রান নিতে না পারে।
হযরত আবূ মুসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “প্রত্যেক চোখ ব্যভিচারী, যখন মহিলা আতর, সুগন্ধি মেখে পুরুষদের কোন মজলিসের পাশ দিয়ে গমন করে তখন সে এরূপ এরূপ” অর্থাৎ ব্যভিচারিণী।
হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন একজন মহিলার সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো যে সুগন্ধি ছড়িয়ে চলছিল। তিনি বললেন, হে প্রতাপশালী মহান আল্লাহ পাক উনার বাঁদী! তুমি কি মসজিদ হতে আসছো? মহিলা বললো, হ্যাঁ। তিনি তাকে বললেন, তুমি কি সুগন্ধি মেখেছো? সে উত্তরে বললো, হ্যাঁ। এবার তিনি বললেন, আমি আমার প্রাণ প্রিয় রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন “মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন মহিলার নামায কবুল করবেন না যে এ মসজিদে আসার জন্য সুগন্ধি মেখেছে। যে পর্যন্ত না সে ফিরে গিয়ে অপবিত্রতার তথা ফরয গোসলের ন্যায় গোসল না করবে।”
হযরত মাইমূনা বিন সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “অস্থানে (মাহরাম ছাড়া অন্য স্থানে) সৌন্দর্য প্রদর্শনকারিণী নারী কিয়ামতের দিনের ঐ অন্ধকারের মত যেখানে কোন আলো নেই।” এ হাদীছ শরীফ থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে, ব্যাপকভাবে সৌন্দর্য প্রদর্শন করে রাস্তায় চলাচলকারিণী মহিলাদেরকে তা থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
হযরত আবূ উবাইদ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছেন যে, যখন তিনি মসজিদের বাইরে ছিলেন। একদা কিছু পুরুষ এবং মহিলা রাস্তায় মিলেমিশে চলছিল। তা দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মহিলারা! তোমরা এদিক ওদিক হয়ে যাও। মাঝ পথ দিয়ে তোমাদের জন্য চলা উচিৎ নয়। তোমাদের জন্য রাস্তার এক পাশ দিয়ে চলা উচিৎ।” একথা শুনে মহিলারা দেয়াল ঘেষে চলা শুরু করে। এমনকি দেয়ালের সাথে তাদের কাপড় ঘর্ষণ লেগেছিল।”(তাফসীরে ইবনে কাছীর ৩য় জিঃ ৪৫৭, ৪৫৮ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, আবু দাউদ শরীফ, বযলুল্ মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু বদরুদ্দীন আইনী, নাসায়ী শরীফ, যখীরায়ে উক্ববা, হাশিয়াতুস্ সুয়ূতী, ইবনু মাজাহ্ শরীফ)
উক্ত পবিত্র সূরা নূর শরীফ উনার আয়াতাংশ মুবারকের দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মহিলাদের জন্য চলাচলের সময় জোরে পদচারণ করা, পাঁয়ে ঝুমুর বা নুপুর পড়া হারাম। মহিলারা তাদের কণ্ঠস্বর অপর কোন পুরুষকে শুনাতে পারবে না। কারণ তার কণ্ঠস্বরও হিজাব বা পর্দার অন্তর্ভুক্ত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












