হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ০৪ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
فَاِنْ اٰمَنُوْا بِـمِثْلِ مَا اٰمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا.
অর্থাৎ আপনারা অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেরূপ ঈমান মুবারক এনেছেন তদ্রুপ যদি তারা (অন্য লোকেরা) ঈমান মুবারক গ্রহণ করতে পারে তাহলে তারা হিদায়েত মুবারক লাভ করতে পারবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ : আয়াত শরীফ ১৩৭)
এ লিখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল মহব্বত মুবারক প্রকাশের কতিপয় দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(১৬)
আপনার আদেশ মুবারকে আমরা সমুদ্রে ঝাঁপ দিতেও প্রস্তুত
কুরাইশরা নয়শত সজ্জিত পদাতিক ও একশত অশ্বারোহী সৈন্যের বিপুল বাহিনী নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে পবিত্র বদর অভিমুখে রওয়ানা করেছে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই সংবাদ পেয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ডেকে পরামর্শে বসলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালামসহ হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ নির্ভীক চিত্তে শত্রুদের সম্মুখীন হয়ে বীরত্বের সাথে প্রতিরোধের পরামর্শ দিলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন: আপনাদের মতামত কি পরিষ্কার করে বলুন।
হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পুরনায় একই উত্তর দিলেন।
আকাবায়ে ছানিয়া অর্থাৎ শেষ আকাবার বাই‘আতের সময় হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, শত্রুরা যদি মদীনা শরীফ-এ এসে আক্রমণ করে, তবে আমরা অস্ত্র ধারণ করবো। সুদূর বদর প্রান্তরে গিয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উনারা প্রস্তুত আছেন কি-না একথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানার জন্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বারবার উনাদেরকে জিজ্ঞাসা মুবারক করেছিলেন।
তৃতীয়বার যখন জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন তখন হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বারবার জিজ্ঞাসা মুবারক করার হাক্বীক্বত মুবারক অনুধাবন করতে পারলেন।
উনাদের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম হযরত সা’দ বিন মু‘আয রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আমাদেরকে উদ্দেশ্য করেই সম্ভবত আপনি বার বার জিজ্ঞাসা মুবারক করছেন? আপনি যা মহাসম্মানিত আদেশ মুবারক করবেন আমরা তা-ই করতে প্রস্তুত আছি। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনি যদি আমাদেরকে সমুদ্রেও ঝাঁপ দিতে বলেন, তবে আমরা সমুদ্রেই ঝাঁপ দিবো। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের অন্তরে এতটুকু মুহব্বত মুবারক আছে যে, আমরা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উম্মতের ন্যায় বলবো না যে, আপনি আর আপনার প্রভু গিয়ে যুদ্ধ করুন। নাউযুবিল্লাহ! বরং আমরা আপনার গোলাম, আমরা দক্ষিণে, বামে, অগ্রে ও পশ্চাতে দাঁড়িয়ে যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণ জিহাদ করতে থাকবো। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানদীপ্ত জাওয়াব মুবারক শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করলেন। এমনকি উনার মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাপবিত্র মুখম-ল মুবারক)-এ সন্তুষ্টি মুবারক উনার ভাব প্রকাশিত হয়ে উঠলো। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনাদের পিতা-মাতা, আল-আওলাদ, মাল-সম্পদ এমনকি নিজের জানের চেয়েও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক উনার ক্ষেত্রে উনারা অন্য আর কোনো কিছুকেই পরওয়া করতেন না। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত কিছুর চেয়ে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত করার এবং উনাদের ন্যায় পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












