১৯ রমাদ্বান বাংলা ভাষার স্বাধীনতা দিবস পালন করা হোক (১)
, ২২ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
২১শে ফেব্রুয়ারীকে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করি। ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য এদিন ভাষা সৈনিকরা প্রাণ দিয়েছিলো, সেই দিনটিকেই স্মরণ করে দিবসটি উৎযাপন। তবে শুধু ২১শে ফেব্রুয়ারী নয়, বাংলা ভাষা নিয়ে আরেকটি দিবস আমাদের পালন করা উচিত। সেটা হচ্ছে বাংলা ভাষার স্বাধীনতা দিবস। দিবসটি হিজরী তারিখ হচ্ছে ১৯ শে রমাদ্বান। আসুন বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেই।
ইতিহাস স্বাক্ষী হাজার বছর আগে বাঙ্গালি জাতির মুখে ‘এক কথ্য’ ভাষার প্রচলণ ছিলো। বাঙ্গালিরা সেই ভাষায় নিজেদের ভাব-আবেগ বিনিময় করতো। বাঙ্গালিদের মুখের সেই কথ্য ভাষা ছিলো ‘বাংলা ভাষা’র প্রাচীন রূপ। দক্ষিণ ভারত থেকে আগত সেন রাজারা এ অঞ্চলের ক্ষমতা দখল করার পর বাঙ্গালির সেই মুখের ভাষাকে কেড়ে নিয়েছিলো, নিষিদ্ধ করেছিলো তার সর্বপ্রকার চর্চাকে। তারা বলতো- সংস্কৃতি হলো দেবতাদের ভাষা আর বাঙ্গালির মুখের ‘বাংলা ভাষা’ হলো মানুষ রচিত ভাষা। তারা আরো বলতো ‘বাংলা’ হলো নিচু জাতের ভাষা। ডক্টর দীনেশ চন্দ্র সেন সে ইতিহাস বর্ণনা করেছে। তার ভাষায়, “ইতরের ভাষা বলিয়া বঙ্গ ভাষাকে হিন্দু মহল‘দূর দূর’ করিয়া তাড়াইয়া দিতো। ” সেন শাসকরা প্রচার করতো, যারা বাংলা ভাষা শুনবে তারা ‘রৌরব’ নামক নরকে যাবে। ঐ সময় ‘সংস্কৃতি ভাষা’ রাজ ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং বাংলা ভাষায় কথা বলা, লেখা ও শোনাকে হিন্দু শাসকরা রাজ্যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
এ পরিস্থিতিতে নির্যাতিত বাঙ্গালিরা তুর্কি বংশোদ্ভূত ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজীকে আমন্ত্রণ জানান দক্ষিণ ভারতীয় অত্যাচারির কবল থেকে তাদের মুক্ত করার জন্য।
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখরিতয়ার খিলজী নির্যাতিত বাঙালীদের সেই আবেদনে সাড়া জানান এবং মাত্র ১৮ জন ঘোরসোয়ারী নিয়ে বাংলায় ছুটে আসেন। সেই সময় নদীয়ার অত্যাচারি রাজা ছিলো লক্ষণ সেন। বখতিয়ার খিলজীর তেজদীপ্ত আক্রমণে লক্ষণ সেন ছিন্নভিন্ন হয়ে পরে এবং ভয় পেয়ে পেছনে দরজা দিয়ে পলায়ন করে। ফলশ্রুতিতে স্বাধীন হয় বাংলা। মুদ্রায় প্রাপ্ত প্রতœতাত্ত্বিক গবেষণায় জানান দেয়, দিনটি ছিলো ৬০১ হিজরীর ১৯শে রমাদ্বান। গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে দিনটি হয় ১১ই মে, ১২০৫ খ্রিস্টাব্দ (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে)।
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজীর বাংলা বিজয়ের মাধ্যম দিয়ে সেইদিন শুধু ভূমির বিজয় হয়নি, সাথে মুক্ত হয়েছিলো বাঙ্গালিদের মুখের ভাষা ‘বাংলা’। তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাঙ্গালির মুখের ভাষা বাংলাকে। খিলজী শাসনের শুরুতেই বাংলা ভাষার উপর সকল প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয় এবং বাংলা ভাষার সর্বপ্রকার চর্চাকে মুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিন পরাধীন থাকার পর স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাভাষা। তাই ৬০১ হিজরীর সেই ১৯ রমাদ্বান তারিখ ছিলো বাংলা ভাষার স্বাধীনতা লাভের দিন।
-মুহম্মদ মহিউদ্দিন রাহাত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












