সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম, ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মশহুর একখানা মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ হচ্ছেন- ‘মুসলমানরা যতদিন মালিক উনাদের (মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের) গোলামী করেছে ততদিন মুসলমানরা পুরো পৃথিবীর মালিক ছিলো। কিন্তু যখন মুসলমানরা গোলামের (বিধর্মীদের) গোলামী করা শুরু করেছে তখন থেকে মুসলমানদের পতন শুরু হয়েছে’।’ মহাপবিত্র এই ক্বওল শরীফ উনার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে তুর্কিরা। এ বিষয়ে একটি ঘটনা জানা যাক-

ষষ্ঠদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি। উসমানীয় সালতানাতের সবচেয়ে শক্তিশালী সুলতান সুলায়মান আল কানুনীর শাসনকাল। সে সময় ফ্রান্সে হঠাৎ করেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যুবক-যুবতীরা একসাথে নাচগান করার সংস্কৃতি চালু করে। এ খবর সুলতান সুলায়মানের কর্ণগোচর হলে তিনি তৎক্ষণাৎ ফ্রান্সের শাসককে চিঠি লিখলেন-

‘শুনেছি তোমাদের দেশে যুবক-যুবতীরা এমনভাবে ঢলাঢলি করে, অনুষ্ঠানে নাচগান করে, যা নীতি-নৈতিকতা, লজ্জা-শরম এবং চরিত্রের সাথে সাংঘর্ষিক। আর তা হয় তোমাদেরই পৃষ্ঠপোষকতায়। যেহেতু আমাদের সালতানাত তোমাদের পাশেই তাই ওইসব অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা আমাদের ভূমিতে আমদানি হবার আশঙ্কা প্রবল। অতএব, তোমার কাছে আমার এই পত্রটি পৌঁছার সাথে সাথে এসব অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করে দিতে হবে। অন্যথায় আমি আমার লাখো ফৌজ নিয়ে ফ্রান্স আক্রমন করবো। তোমাদের সংস্কৃতি হবে অতীত। নিশ্চয়ই আমার কামানের গোলা তোমাদের শহরের প্রাচীরকে ধুলোয় মিশিয়ে দিবো।’

কথিত অস্ট্রিয়ান ঐতিহাসিক হ্যামার লিখে, উক্ত পত্রপ্রাপ্তির পর ফ্রান্সের তৎকালীন শাসক এতটাই ভয় পেয়েছিলো যে পরবর্তী ১০০ বছর পর্যন্ত প্রকাশ্যে নাচগান বন্ধ ছিল।’

উল্লেখ্য, উসমানীয় সালতানাত বিলুপ্ত করার পর ১৯৩২ সালে ক্রুসেডার ফ্রান্স তাদের কুখ্যাত এজেন্ট কামাল পাশার মাধ্যমে আঙ্কারার সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। নাউযুবিল্লাহ! এই আয়োজনে তুরস্কের মেয়েরা এমন কাপড় পরিধান করেছিলো যা চরম অশ্লীলতাকেও হার মানিয়েছিলো। নাউযুবিল্লাহ! অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতার নির্বাচন কমিটির প্রধান জনৈক ফ্রান্স কর্মকর্তা অত্যন্ত দম্ভ ভরে বলেছিলো, আজ হলো ইউরোপের বিজয়ের দিন। নাউযুবিল্লাহ!

এ ইতিহাস থেকে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় যে, যতদিন মুসলমানরা মহান আল্লাহ পাক উনার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের গোলামী করেছে ততদিন মুসলমানদের একটি কথার তাছিরে বিধর্মীদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠেছে। কিন্তু যখন উনাদের থেকে মুসলমানরা দূরে সরে গেছে তখন তাদের স্থান হয়েছে বিধর্মীদের গোলামের কাতারে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই মুসলমানদের জন্য আবশ্যক হলো ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার অনুসরণ-অনুকরণে হাক্বীকী মুসলমান হওয়া।

-মুহম্মদ শাহ জালাল